সংক্ষিপ্ত সফর শেষে শুক্রবার ঢাকা ছেড়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বন্ধুকে বিদায় জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান নোবলে জয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা ছাড়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে এক ফেসবুক পোস্টে মন্ত্রণালয় জানায়, ফলপ্রসূ সফর শেষে শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকা ছেড়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে তাকে বিদায় জানান প্রধান উপদেষ্টা।
শুক্রবার দুপুর ২টায় ইসলামাবাদ হয়ে ঢাকায় আসেন আনোয়ার ইব্রাহিম। তাকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখানে তারা সংক্ষিপ্ত বৈঠক করেন। পরে ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ফের বৈঠক করেন তারা। বৈঠক শেষে যৌথ প্রেস কনফারেন্স করেন দুই শীর্ষ নেতা। বিকালে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন সফররত মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, প্রায় ১১ বছর পর মালয়েশিয়ান কোনো প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করলেন। সর্বশেষ ২০১৩ সালের নভেম্বরে সরকারি সফরে ঢাকায় এসেছিলেন মালয়েশিয়ার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক।
মালয়েশিয়া যেতে না পারা বাংলাদেশি কর্মীদের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে
মে মাসের মধ্যে মালয়েশিয়া প্রবেশ করতে না পারা প্রায় ১৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মীদের বিষয়টি বিবেচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম।
শুক্রবার ঢাকায় সংক্ষিপ্ত সফরে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা জানান আনোয়ার ইব্রাহিম।
তিনি বলেন, মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করতে ব্যর্থ হওয়া ১৮ হাজার বাংলাদেশি কর্মীদের নতুন করে প্রবেশের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে। আমাদের শ্রমিক দরকার তবে কাউকে ‘আধুনিক দাস’ হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকায় পৌঁছান আনোয়ার ইব্রাহিম। পরে তিনি ড. ইউনূসের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। বৈঠক শেষে তারা ঢাকার একটি হোটেলে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করেন।
বৈঠকে ড. ইউনূস রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুর দ্রুত সমাধানে আসিয়ানের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
দুই রাষ্ট্রপ্রধান কৃষি, জ্বালানি, শিক্ষা, হালাল অর্থনীতি, অর্ধ-পরিবাহী শিল্প, সুনীল অর্থনীতি, বিজ্ঞান উদ্ভাবন, প্রতিরক্ষা এবং যুব উন্নয়ন বিষয়ে নতুন চুক্তি বা এমওইউর সম্ভাবনার বিষয়ে আলোচনা করেন।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ড. ইউনূস বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি এবং তাদের জন্য মাল্টিপল এন্ট্রি ভিসার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি।
আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, অবশ্যই সব শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ১৮ হাজার বাংলাদেশিকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মালয়েশিয়ায় পুনরায় প্রবেশের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
এর আগে গত ৩১ মে মালয়েশিয়া প্রবাসী কর্মী প্রবেশের শেষ দিন ছিল। সেদিন প্রায় ১৮ হাজার কর্মী বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়া যেতে পারেননি।
কর্মী পাঠানোর সিন্ডিকেট ভাঙার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আনোয়ার ইব্রাহিম বলেন, আমরা পুরো প্রক্রিয়াটি নিয়ে আলোচনা করেছি। আমাদের উদ্বেগ যেসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। আমাদের শ্রমিক দরকার।
মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী কর্মীদের সতর্ক থাকার এবং মালয়েশিয়ায় অবস্থানরত বিদেশিদের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড না করার আহ্বান জানান।
সূত্র: দৈনিক যুগান্তর।
তারিখ: অক্টোবর ০৪, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,