Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট কেন খোলা হয়, সবার কাছে কি বার্তা পৌঁছায় (২০২৪)

Share on Facebook

লেখক: পার্থ শঙ্কর সাহা ঢাকা

পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর মানুষের কাছে ‘বর পরং’ শব্দটি বেশ পরিচিত। এটি চাকমা শব্দ। এর বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘মহাপ্রস্থান’। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ শব্দদ্বয়ের উদ্ভব, তা ঘটে গত শতকের ষাটের দশকে। ওই সময় পার্বত্য জেলা রাঙামাটির কাপ্তাইয়ে তৈরি হয় দেশের একমাত্র পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র—কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র। কাপ্তাই বাঁধ নামেই এটি বেশি পরিচিত। এখানে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয় ১৯৬২ সালে। বিদ্যুৎ প্রকল্পের করা হ্রদের পানিতে ভেসে যায় পার্বত্য এলাকার ৫৪ হাজার একর ধানের জমি। পার্বত্য এলাকার প্রায় ১৮ হাজার পরিবারের ১ লাখ মানুষ এতে উদ্বাস্তু হয়ে পড়েন। রাঙামাটির মূল শহরটিও ভেসে যায়।

এ হ্রদ ও প্রকল্প চালু হওয়ার পর এই পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প এখন আবার আলোচনায়। গত রোববার এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের বাঁধের ১৬টি জলকপাটের সব কটি খুলে দেওয়া হয় দুই দফায়। প্রবল বর্ষণের ফলে বাঁধের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি পানি জমা হচ্ছিল। বন্যায় আক্রান্ত হয়ে গিয়েছিল রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, লংগদু এবং খাগড়াছড়ির দীঘিনালা উপজেলার অনেক এলাকা। এমনটা আগেও হয়েছে। তখন জলকপাট খুলে দেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না।

আরও পড়ুন
পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন গাণিতিক ভাবে পরিমাপের বিষয় নয়: রাজা দেবাশীষ
০৭ ডিসেম্বর ২০২০

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র
কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রফাইল ছবি
কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের বলেছিলেন, ‘জলকপাট খুলে দিয়ে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এতে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। যদি খুলে না দেওয়া হতো, তাতে বরং বাঘাইছড়িসহ একাধিক এলাকা প্লাবিত হয়ে যেত।’

কাপ্তাইয়ের এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য সর্বোচ্চ ১০৯ ফুট পর্যন্ত পানি ধরে রাখা যায়। বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্র জানাচ্ছে, পানি প্রায় ১০৮ ফুট হয়ে গিয়েছিল। এর বেশি পানি হলে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার আশঙ্কাও ছিল। তা হয়নি। কিন্তু পানি বৃদ্ধি, সময় মেনে তা ছেড়ে দেওয়া, আবার তা বন্ধ করা—ছয় দশক ধরে এমন অনেকবারই হয়েছে। এই কাপ্তাই হ্রদ, বিদ্যুৎ প্রকল্প, পানির ওঠানামা—পার্বত্যবাসীর জীবন, কৃষি ও অর্থনীতির অনেক ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলে আসছে। কাপ্তাই হ্রদের বিশালত্ব, অপূর্ব সৌন্দর্য ভ্রমণপিপাসুদের বারবার রাঙামাটিতে যেতে হাতছানি দেয়। পার্বত্যবাসী অবশ্য মনে করেন, এ হ্রদে মিশেছে গৃহহীন মানুষের চোখের পানি।

পাহাড়ের এই বিরাট স্থাপনা প্রতিষ্ঠার সময়ের চেয়ে এখন গুরুত্ব কিছুটা হারিয়েছে। এর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও এসেছে পরিবর্তন। একসময় পানির বণ্টন বিষয়ে ‘রুল কার্ভ’ এখনো পরিবর্তন হয়নি। প্রকল্পের পরিচালনা পর্ষদে ছিল পাহাড়ের মানুষের সক্রিয় অংশগ্রহণ। এখন তা নেই। তবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ বিদ্যুৎ প্রকল্পের ব্যবস্থাপনার দাবি থাকলেও এখনো তা উপেক্ষিত।

জলকপাট খুলে দিয়ে ৯ হাজার কিউসেক পানি ছাড়া হয়েছে। এতে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই। যদি খুলে না দেওয়া হতো, তাতে বরং বাঘাইছড়িসহ একাধিক এলাকা প্লাবিত হয়ে যেত
কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আবদুজ্জাহের

কাপ্তাই বাঁধের ইতিহাস

কর্ণফুলী নদীতে প্রথম বাঁধ দেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয় ১৯০৬ সালের দিকে। এরপর ১৯২২ সালে মি. গ্রিভস নামের এক ইংরেজ কর্মকর্তা নদীতে অনুসন্ধান চালান। প্রকৌশলী ই এ মুর ১৯৪৬ সালে, এখন যেখানে কাপ্তাই বাঁধ আছে, সেখান থেকে ৬৫ কিলোমিটার উজানে প্রকল্প নির্মাণের প্রস্তাব দেন। পাকিস্তান আমলে ১৯৫০ সালে প্রকৌশলী মার্জ রেন্ডেল ভ্যাটেন এখনকার বাঁধ এলাকার ৪৫ কিলোমিটার উজানের চিলারডাক এলাকায় বাঁধ নির্মাণের প্রস্তাব দেন। পরে তৎকালীন পাকিস্তানের প্রধান প্রকৌশলী (সেচ) খাজা নাজিমউদ্দিন ১৯৫১ সালে কাপ্তাইয়ে পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রস্তাব দেন। যুক্তরাষ্ট্রের উটা ইন্টারন্যাশনালে এই বাঁধ ও বিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের কাজ পায়। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ১৯৫৭ সালে, শেষ হয় ১৯৬০ সালে। তখন প্রকল্পটি থেকে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যেত। পরে এর সক্ষমতা ২৩০ মেগাওয়াট পর্যন্ত বাড়ানো হয়। বাঁধটি ১০০ বছর টিকবে বলে সে সময় বলা হয়েছিল।

জ্ঞানেন্দু বিকাশ চাকমার ‘ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে পার্বত্য স্থানীয় সরকার পরিষদ’ বইয়ে পাই, বাঁধে বিপুল এলাকা প্লাবিত হওয়ার পর ‘১৯৬৪ সালে লংগদু, বরকল ও বাঘাইছড়ি থানার কাচালং পুনর্বাসন এলাকা থেকে ৩৫ হাজার উপজাতীয় লোক ভারতে চলে যায়।’

আরও পড়ুন
ছয় ঘণ্টা পর বন্ধ হলো কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট
২৫ আগস্ট ২০২৪
ছয় ঘণ্টা পর বন্ধ হলো কাপ্তাই বাঁধের জলকপাট
ওই বইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৯৫১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের ২ লাখ ৮৭ হাজার পাহাড়ি মানুষের ৯১ শতাংশই ছিল পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠীর। ১৯৬১ সালে পার্বত্যবাসীর সংখ্যা ৮২ এবং ১৯৭৪ সালে ৭৩ শতাংশ হয়।

পাহাড়ের আইনজীবী জ্ঞানেন্দু বিকাশ লিখেছেন, ‘পাকিস্তান রাষ্ট্র সৃষ্টি হওয়ার পর পার্বত্য চট্টগ্রামে অন্য জেলার লোক অবাধে বসতি স্থাপন করতে থাকে। তাতে জনসংখ্যা বেড়ে যায়। জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাঁধ নির্মাণের কারণে কৃষিজমির পরিমাণ হ্রাস পাওয়ায় এই জেলার জনগণের বিশেষত সংখ্যাগরিষ্ঠ উপজাতীয়দের দুর্দশা বেড়ে যায়।’

কাপ্তাই বাঁধ ও পানি ব্যবস্থাপনা

বাংলাদেশে পানিশক্তির মাধ্যমে পরিচালিত একমাত্র বিদ্যুৎ স্থাপনা কর্ণফুলি পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র। চট্টগ্রামের ৫০ কিলোমিটার দূরে রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় কর্ণফুলী নদীর নির্ধারিত স্থানে বাঁধ দিয়ে পানিপ্রবাহ বন্ধ করে সঞ্চিত পানির বিরাট জলাধার সৃষ্টি করা হয়েছে। আর পানির এই শক্তিকে গতিশক্তিতে রূপান্তর করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়।

জেলার কৃষিতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভাসা জমির বড় ভূমিকা আছে। আবার জেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাপ্তাই হ্রদের ভূমিকা অনেক
অরুণেন্দু ত্রিপুরা
রাঙামাটি জেলা পরিষদের ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ‘এ জন্য ৬৭০ দশমিক ৬ মিটার দীর্ঘ এবং ৪৫ দশমিক ৭ মিটার উঁচু বাঁধ তৈরি করা হয়। এই বাঁধের পাশে ১৬টি জলকপাট সংযুক্ত ৭৪৫ ফুট দৈর্ঘ্যবিশিষ্ট একটি পানি নির্গমনপথ বা স্পিলওয়ে রয়েছে। দেশি-বিদেশি পর্যটকদের জন্য আগ্রহের একটি স্থান হলো স্পিলওয়ে। পানি পড়ার দৃশ্যটি পর্যটকদের কাছে খুবই উপভোগ্য। এই কেন্দ্রের কার্যক্রম দেখার জন্য অনুমতির প্রয়োজন হয়। এ ছাড়া বাইরে থেকে ইঞ্জিনচালিত বোট নিয়ে কেন্দ্রের স্পিলওয়ে দেখা যায়।’

কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়া হয় কেন, এবার কেন হলো

প্রতিবছর বৃষ্টি বেশি হলে হ্রদ থেকে কিছু পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। এতে বন্যার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় না। এতে যে অসুবিধা হয়, তা হলো কর্ণফুলী নদীতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়।

কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্রের ধারণক্ষমতা ১০৯ ফুট পর্যন্ত। এর বেশি পানি রাখা সম্ভব হয় না। তাতে অন্য এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। পানি ছাড়ার আরও কারণের মধ্যে আছে রাঙামাটির নৌপথের নাব্যতা ঠিক রাখা, কৃষি উৎপাদন ইত্যাদি।

রাঙামাটির চার উপজেলা বিলাইছড়ি, বাঘাইছড়ি, জুরাছড়ি ও লংগদুর সঙ্গে যোগাযোগ পানিপথেই হয়। এর নাব্যতা রক্ষা করতে পানির যথাযথ ব্যবস্থাপনা করতে হয়।

পার্বত্য চট্টগ্রামের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন অরুণেন্দু ত্রিপুরা। তিনি বলছিলেন, ‘জেলার কৃষিতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে ভাসা জমির বড় ভূমিকা আছে। আবার জেলার যোগাযোগের ক্ষেত্রে কাপ্তাই হ্রদের ভূমিকা অনেক।’

রাঙমাটির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, রাঙামাটিতে মোট দানাদার শস্যের চাহিদা ১ লাখ ১৫ হাজার টন। আর হ্রদের পানিতে ভাসা ৫ হাজার হেক্টর জমিতে উৎপাদন হয় ৮০ হাজার মেট্রিক টন শস্য। এর মধ্যে ধানই প্রধান।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘কাপ্তাই হ্রদের পানির ওপর জেলার কৃষি ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। প্রতিদিনই এর তথ্য আমরা পাই।’

হ্রদে পানি বেশি থাকলে পানিপথনির্ভর রাঙামাটি সঙ্গে উপজেলা শহরগুলোর যোগাযোগ সহজ হয়। পানি কমে গেলে যোগাযোগের অসুবিধা হয়। কিন্তু কম থাকলে আবার ভেসে ওঠা জমিতে চাষের সুবিধা।মো. মনিরুজ্জামান বলছিলেন, ‘এ এক অদ্ভুত বিষয়।’

এবার কাপ্তাই বাঁধের পানি ছাড়ার কারণ অবশ্য অতিবৃষ্টিতে অধিক পানি। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার ১০৮ দশমিক ৩২ ফুট পানি হয়ে গিয়েছিল। পানি না ছেড়ে কোনো বিকল্প ছিল না। এরই মধ্যে বাঘাইছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। পানি না ছাড়লে পরিস্থিতি আরও নাজুক হতে পারত।’

পরিচালন পর্ষদে নেই স্থানীয় প্রতিনিধিরা, ‘রুল কার্ভ’ সংশোধন হয়নি
১৮ সদস্যের কর্ণফুলী হ্রদ ব্যবস্থাপনা কমিটি এ বাঁধের পরিচালনা কমিটি। এর প্রধান চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার। এতে ৪ জনপ্রতিনিধি, ১ জন গণ্যমান্য ব্যক্তি ও ১৩ সদস্য আছেন।

এর বাইরে আছে একটি কারিগরি উপকমিটি। এর প্রধান পদাধিকারবলে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক।

পার্বত্য চট্টগ্রামে তিনটি সার্কেল আছে। এর প্রধানেরা সার্কেল প্রধান বা রাজা হিসেবে পরিচিত। আগে পরিচালনা কমিটিতে চাকমা সার্কেলপ্রধান থাকতেন। এখন তাঁকে রাখা হয় না। কিন্তু কাপ্তাই হ্রদ ছড়িয়ে আছে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায়।

পানি ছাড়া বা বণ্টনের ক্ষেত্রে ‘রুল কার্ভ’ আছে। রুল কার্ভ হলো কাপ্তাই লেকের পানি কখন, কোন সময়ে কতটুক থাকবে, এটা নির্ধারণের মাপপদ্ধতি। এটার ওপর নির্ভর করে পানিতে ভাসা জমিতে চাষ, ফসল তোলা, কোন পর্যন্ত পানি উঠলে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রভৃতি নির্ধারণ করা হয়।
১৯৯৭ সালের পার্বত্য চুক্তির পর আঞ্চলিক পরিষদের অধীন এই পরিচালনা কমিটি রাখার দাবি উঠেছিল। কিন্তু আজ পর্যন্ত তা দেওয়া হয়নি বলে জানান চাকমা সার্কেল প্রধান রাজা দেবাশীষ রায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনারের নেতৃত্বাধীন কমিটিতে আগে সার্কেলপ্রধান থাকতেন। এতে স্থানীয় মানুষের প্রতিনিধিত্ব আরও সুসংহত থাকত। আঞ্চলিক পরিষদের অধীন এই কাপ্তাইকে রাখার প্রস্তাব থাকলেও তা করা হয়নি। এর ফলে পানিপ্রবাহের সঠিক তথ্য সাধারণ মানুষের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছায় না। অথচ পানিপ্রবাহের সঙ্গে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের অনেক কিছুই জড়িত।’

পার্বত্য চট্টগ্রামে ফসলি জমির অভাব প্রকট। সেচযুক্ত হালচাষের জমি বাংলাদেশের যেকোনো জেলার চেয়ে কম। যতটুকু চাষের জমি আছে, বেশির ভাগ এক ফসলি জমি। এর মধ্যে পানিতে ভাসা জমি (ফ্রিঞ্জ ল্যান্ড) প্রায় ১০ হাজার একর। তাড়াতাড়ি হ্রদের পানি শুকিয়ে গেলে ধান নষ্ট হয়। আবার হঠাৎ হ্রদের পানি বেড়ে গেলে ফসল নষ্ট হয়।

পার্বত্য এলাকায় সার্কেলপ্রধানদের অধীন ৩৮০ জন হেডম্যান আছেন। আছেন কারবারীরা। তাঁরা একেবারে প্রত্যন্ত এলাকায় থাকেন। তাঁদের কাছে কাপ্তাই হ্রদের পানিসংক্রান্ত কোনো তথ্য যায় না।

এবার বন্যার কারণে পানি বেড়ে যাওয়ায় জলকপাট খুলে দেওয়ার জন্য কর্ণফুলী পানিবিদ্যুৎকেন্দ্র চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার, রাঙামাটির জেলা প্রশাসক, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সদস্যসহ (উৎপাদন) ১৯ জনকে তথ্য জানায়। এর মধ্যে কোনো সার্কেলপ্রধান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও ছিলেন না।

পানি ছাড়া বা বণ্টনের ক্ষেত্রে ‘রুল কার্ভ’ আছে। রুল কার্ভ হলো কাপ্তাই লেকের পানি কখন, কোন সময়ে কতটুক থাকবে, এটা নির্ধারণের মাপপদ্ধতি। এটার ওপর নির্ভর করে পানিতে ভাসা জমিতে চাষ, ফসল তোলা, কোন পর্যন্ত পানি উঠলে ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রভৃতি নির্ধারণ করা হয়।

রুল কার্ভ ১৯৬২ সালে তৈরি। এরপর এর আর সংশোধন করা হয়নি। রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান বলেন, ‘রুল কার্ভ সংশোধনের একটি প্রস্তাব ছিল। কিন্তু তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি। আমি এর সংশোধনের বিষয়েও বলেছি। সময়ের পরিবর্তনে এর সংশোধন দরকার।’

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ২৭, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ