Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হচ্ছে বাংলাদেশ (২০২৪)

Share on Facebook

লেখক:রাহীদ এজাজ ঢাকা।

সামগ্রিকভাবে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এই সনদে যুক্ত হয়েছে।
———————————————
রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের অভিযোগ নিয়ে গত দেড় দশকের বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিক পরিসরে বাংলাদেশের সমালোচনা রয়েছে। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ‘আয়নাঘর’ হিসেবে পরিচিত গোপন বন্দিশালা থেকে দীর্ঘ সময় পর বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মুক্ত হওয়ার পর গুমের বিষয়টি জোরালোভাবে সামনে আসে।

গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানালেও এই মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে ন্যায়বিচার পাননি। এই পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে। আগামী ৩০ আগস্ট গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক দিবসের আগেই এই সনদে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ।

এদিকে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক সেপ্টেম্বরে ঢাকা সফর করতে পারেন। সেই সফরের আগে গুমবিরোধী সনদে যুক্ততার বিষয়ে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার।

পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন সংস্থার মতামতের ভিত্তিতে কোনো আপত্তি ছাড়াই গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ঢাকা ও নিউইয়র্কের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, গুমবিরোধী সনদে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে চিঠি জাতিসংঘ মহাসচিবের দপ্তরে পাঠিয়ে দেবে বাংলাদেশ। সনদটি জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের, তাই পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে জাতিসংঘের মহাসচিব চিঠিটি জেনেভায় মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দপ্তরে পাঠাবেন।

বেসরকারি মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ১৫ বছরে বাংলাদেশে সাত শর বেশি মানুষ গুম হওয়ার ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে ১৫০ জনের বেশি মানুষের খোঁজ এখনো পাওয়া যায়নি।

গুমের শিকার পরিবারগুলোর সংগঠন মায়ের ডাকের সমন্বয়ক সানজিদা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল গুমের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। বাংলাদেশ গুমের আন্তর্জাতিক সনদে যুক্ত হচ্ছে। এখন আমরা বিচার পাওয়ার আশা রাখছি। আশা করি, সরকার এখন একটি কমিশন করে সবগুলো গুমের ঘটনার বিচার নিশ্চিত করবে।’

গুমবিরোধী সনদটি ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয়। ৩২টি দেশ এটি অনুস্বাক্ষর করার পরে ২০১০ সালে তা বাস্তবায়ন শুরু হয়। সামগ্রিকভাবে এই সনদের লক্ষ্য গুম বন্ধের পাশাপাশি এই অপরাধের জন্য দায়মুক্তি বন্ধ করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সহায়তা দেওয়া। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ৭৫টি দেশ এই সনদে যুক্ত হয়েছে।

বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক ৯টি সনদের ৮টিতে সই করেছে। জাতিসংঘের দীর্ঘদিনের অনুরোধের পরও বাংলাদেশ গুমবিরোধী সনদে সই করেনি। অন্তর্বর্তী সরকার মানবাধিকার সমুন্নত রাখার পাশাপাশি গুমের সংস্কৃতি বন্ধ করতে চায়। এ লক্ষ্যে সরকার গুমবিরোধী সনদে যুক্ত হতে যাচ্ছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত সপ্তাহে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে গুমবিরোধী সনদ সইয়ের বিষয়ে দুটি আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়। বৈঠকে ওই সনদে যুক্ত হওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত মত এসেছে। এখন আইন মন্ত্রণালয়ের যাচাই-বাছাইয়ের পর উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ৩০ আগস্টের আগেই জাতিসংঘের কাছে চিঠি দিয়ে সনদে যুক্ত হতে চায় বাংলাদেশ। পরে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় চুক্তিও বাংলাদেশ সই করবে। সনদে সই করার পর রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় গুমের জন্য সরকার বা এর কোনো প্রতিষ্ঠানকে জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়ে ভূমিকা রাখবে জাতিসংঘ।

জানতে চাইলে পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘৩০ আগস্ট আন্তর্জাতিক গুমবিরোধী দিবস। ওই দিবসের আগে সরকার সনদে যুক্ত হওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছে। আমরা গত সপ্তাহে দুটি আন্তমন্ত্রণালয় সভা করেছি। সভায় সর্বসম্মতভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কোনো আপত্তি (রিজার্ভেশন) ছাড়াই সনদে যুক্ত হবে বাংলাদেশ।’ গুমের বিচার প্রসঙ্গে কমিশন হবে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, সরকার গুমের তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করতে একটি কমিশন গঠন করবে।

ফলকার টুর্কের সফর
জেনেভা ও ঢাকায় জাতিসংঘের কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, আগামী মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ফলকার টুর্কের ঢাকা সফরের আয়োজন করা যায় কি না, তা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে জাতিসংঘের হাইকমিশনারের দপ্তরের আলোচনা চলছে। এর মধ্যেই বাংলাদেশের অনুরোধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হত্যা-নির্যাতন তদন্তে জাতিসংঘ যুক্ত হতে যাচ্ছে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক সংস্কার ও মানবাধিকার সমুন্নত রাখার প্রক্রিয়ায় যুক্ত হবে বিশ্ব সংস্থাটি।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে; অর্থাৎ এটি তাদের অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ভারত শুধু এটি সই করেছে এবং তবে অনুস্বাক্ষর করেনি।
এমন এক প্রেক্ষাপটে ফলকার টুর্কের বাংলাদেশ সফর রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সঙ্গে কোন কোন পরিসরে জাতিসংঘ যুক্ত হতে পারে, তা নিয়ে ফলকার টুর্ক অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানা গেছে।

জাতিসংঘের প্রতিনিধিদলের সফর
ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের সময় হত্যা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্যানুসন্ধানে যুক্ত হতে বাংলাদেশে প্রাক্‌-অনুসন্ধানে রয়েছে জাতিসংঘের তিন সদস্যের প্রতিনিধিদল। জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান রুরি ম্যানগোভেনের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদলটি ঢাকা সফর করছে। এরই মধ্যে সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা, পররাষ্ট্রসহ একাধিক মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, ছাত্র অভ্যুত্থানের নেতারা এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করেছে দলটি। আগামী বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়ার আগে প্রতিনিধিদলটি আরেক দফা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করবে।

জাতিসংঘের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রতিনিধিদলটি তথ্যানুসন্ধান মিশন কীভাবে কাজ করবে, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা করেছে। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক সংস্কারের সঙ্গে জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদের যুক্ততা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। প্রতিনিধিদলটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে তদন্ত ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘের যুক্ততা নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।

জেনেভা থেকে জাতিসংঘের একটি সূত্র জানিয়েছে, জাতিসংঘের আরেকটি প্রতিনিধি দলের ঢাকায় আসার প্রস্তুতি চলছে।

গুমবিরোধী সনদে যা আছে
গুমবিরোধী সনদে গুমকে মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে অভিহিত করা হয়েছে। এই সনদের যথাযথভাবে প্রয়োগ হচ্ছে কি না, সেটি দেখভালের জন্য জাতিসংঘের ১০ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি কাজ করে। ওই কমিটি পক্ষভুক্ত রাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রতিবেদন যাচাই করে থাকে। সনদের ৩৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, সনদের পক্ষভুক্ত কোনো দেশে যদি গুমের ঘটনা ঘটে, তবে ওই দেশের পরিস্থিতি দেখার জন্য কমিটি সদস্যরা সফরও করতে পারে। যদিও পক্ষভুক্ত অনেক দেশ এই অনুচ্ছেদটির শর্ত মেনে নেয়নি।

সনদে মোট ৪৫টি অনুচ্ছেদ আছে। এতে জাতিসংঘের কোনো সদস্যরাষ্ট্র পক্ষভুক্ত হলে সনদের ‘এক বা একাধিক অনুচ্ছেদ মেনে চলবে না’ বলেও তাদের সিদ্ধান্ত জাতিসংঘকে জানাতে পারে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ এই সনদে অনুস্বাক্ষর করেছে; অর্থাৎ এটি তাদের অভ্যন্তরীণ আইনের অংশ হিসেবে গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া ভারত শুধু এটি সই করেছে এবং তবে অনুস্বাক্ষর করেনি। অন্যদিকে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী পাঁচ সদস্যের মধ্যে শুধু ফ্রান্স এটি অনুস্বাক্ষর করেছে।

গুমবিরোধী সনদে বাংলাদেশের যুক্ত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেনেভায় জাতিসংঘের মিশনগুলোতে বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি মোহাম্মদ সুফিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশে যে গুমবিরোধী আন্তর্জাতিক সনদে পক্ষ হতে যাচ্ছে এর সঙ্গে শুধু মানবাধিকার সমুন্নত রাখার বিষয়টিই জড়িত নয়। মানবাধিকারের পাশাপাশি এর সঙ্গে আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক চর্চা, সামাজিক ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার মত বিষয়গুলো জড়িত। ফলে জাতিসংঘের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক পরিসরে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ককে বিবেচনায় রেখে বাংলাদেশ কিছুটা সময় নিয়ে এই সনদে পক্ষ হওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিলে সমীচিন হতো।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: আগষ্ট ২7, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ