আদালতে সুবিচার চাইলেন সাংবাদিক শাকিল আহমেদ। আদালতপাড়ায় উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘সুবিচার চাই’। এ সময় ফারজানা রুপাও কথা বলতে যাচ্ছিলেন। তবে আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করলে তিনি আর কথা বলতে পারেননি।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চাকরিজীবী মো. ফজলুল করিম হত্যা মামলায় বেসরকারি টেলিভিশন একাত্তর টিভির চাকরিচ্যুত প্রধান বার্তা সম্পাদক শাকিল আহমেদ ও তার স্ত্রী প্রধান প্রতিবেদক ফারজানা রুপার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। রিমান্ড শুনানির আগে তাদের এজলাসে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। তখন এ কথা বলেন শাকিল আহমেদ।
এদিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আহমেদ হুমায়ুন কবীরের আদালত তাদের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। তিনি বলেন, ‘এই দুজন আসামি ছাত্র আন্দোলন দমন করতে উসকানি দেন।’
আদালতে সাংবাদিক শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপার ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবী ঢাকা বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক ফারুকী।
তিনি বলেন, ‘এরা রাজনীতিবিদ থেকেও জঘন্য।
রাজনীতিবিদরা মানুষের সেবা করেন। এরা রাজনীতি করেন না। এরা পরগাছা। এদের কারণে একটি সরকার স্বৈরাচারী হয়। তাদের তৎপরতায় সরকার মিস গাইড হয়।
গত ১৫ বছর একাত্তর টিভি শেখ হাসিনা সরকারকে স্বৈরাচার হতে সাহায্য করেছে। ভোটবিহীন নির্বাচন করতে তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। টক শোর নামে হাসিনাকে আরো স্বৈরাচার করেছে।’
আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী আরো বলেন, ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশ যখন সরকারের হাত থেকে চলে গেছে, সেদিনও তারা টেলিভিশনে আরো উসকানিমূলক বক্তব্য দেন। যেন আরো মানুষ রাস্তায় বেরিয়ে আসে। আরো লাশ পড়ে। তারা অপরাধ করেছেন। এ জন্য তারা পালিয়ে যাচ্ছিলেন। আরো সাংবাদিক আছেন। আমাদের কোর্ট এলাকায়ও অনেক সাংবাদিক আছেন। তারা তো যাচ্ছেন না। নিশ্চয়ই তারা অপরাধ করেছেন। ভেবেছিলেন, শেখ হাসিনা তাদের নিয়ে যাবেন, কিন্তু নেননি।’
এদিকে আসামিদের পক্ষে জুলফিকার আলী রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। তিনি বলেন, ‘এরা দুজনই সাংবাদিক। এদের ছোট একটা বাচ্চা আছে। রিমান্ড বাতিল চেয়ে তাদের জামিন চাচ্ছি।’
এরপর আদালত আসামিদের কাছে জানতে চান, তাদের কিছু বলার আছে কি না। এ সময় ফারজানা রুপা কথা বলতে যাচ্ছিলেন। তবে আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করেন। তখন আইনজীবী ওমর ফারুক আদালতকে বলেন, ‘তাদের আইনজীবী তো কথা বলেছেন। আগে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করেন।’ পরে তারা আর কথা বলতে পারেননি।
আদালত তাদের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন। পরে তাদের আদালত থেকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তবে পথে এক আইনজীবী ফারজানা রুপাকে ঘুষি মারেন। এরপর দ্রুত তাদের হাজতখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
গত বুধবার সকালে সাংবাদিক দম্পতি শাকিল আহমেদ ও ফারজানা রুপাকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। তার্কিশ এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে ইস্তানবুল হয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সিটি এসবির ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের বিদেশ যাওয়ার অনুমতি দেয়নি।
সূত্র:কালের কন্ঠ।
তারিখ: আগষ্ট ২২, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,