Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বাংলাদেশ ভারতকে কী দিল আর কী পেল (২০২৪)

Share on Facebook

লেখা:এম হুমায়ুন কবির

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিল্লি সফরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে আলোচনা ও সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে, তার প্রতিপাদ্য ছিল ভবিষ্যতের জন্য ভারত-বাংলাদেশ অভিন্ন রূপকল্প: অভিন্ন সমৃদ্ধির লক্ষ্যে কানেকটিভিটি, বাণিজ্য ও সহযোগিতা জোরদার করা।

পুরো আলোচনা ও সমঝোতাগুলো বিশ্লেষণ করলে মনে হতে পারে, বড় লক্ষ্যের কাছে ছোট সমস্যাগুলো উপেক্ষিত হয়েছে। এ সফরের সারাংশ করলে মনে হবে, এই রূপকল্পে একটা অদৃশ্য পক্ষকে সামনে রেখেই বাংলাদেশ-ভারত তাদের সহযোগিতা কাঠামোকে দাঁড় করাচ্ছে। যদিও বলা হচ্ছে যে ভারত-বাংলাদেশের স্বার্থে দুই পক্ষ মিলেই তারা এটি করার চেষ্টা করছে।

এই রূপকল্পে ডিজিটাল ও গ্রিন অংশীদারত্ব এবং ইন্দো প্যাসিফিক নীতির মতো অনেক বড় বড় বিষয় এসেছে এবং এসব ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের অংশীদার হবে ও তা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবে। যেমন বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ভারতের গেদে থেকে হাসিমারা পর্যন্ত দেশটির উত্তর–পূর্ব অঞ্চলে মালবাহী ট্রেন চলাচল করবে। এর মধ্য দিয়ে উত্তর–পূর্ব রাজ্যগুলোর সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ আরও বাড়বে, আরও শক্তিশালী হবে।

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক: রোল মডেল বনাম মাঠ-বাস্তবতা

কিন্তু এখন তা কীভাবে পরিচালনা করা হবে, বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যখন মালগাড়ি যাবে তখন এর ভেতরে কী থাকবে না থাকবে, তা বাংলাদেশের জানার অধিকার থাকবে কি না—এ বিষয়গুলো স্পষ্ট নয়। হয়তো পরে সেসব নিয়ে আলোচনা হবে।

এতে ভারত কৌশলগতভাবে লাভবান হবে। কারণ, তারা চিকেন নেক বাইপাস করে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে উত্তর–পূর্ব রাজ্যগুলোতে যেতে পারবে, মালামাল আনা–নেওয়া করতে পারবে। এখন এ নিয়ে বাংলাদেশের জনমনে যে প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে, তা খুবই স্বাভাবিক। কারণ ১৫ বছর ধরে কানেকটিভিটি নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে, যার সবচেয়ে সুফলভোগী হয়েছে ভারত। কিন্তু আমরাও তো সুফলভোগী হতে চাই।

২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণায় মোংলা ও চট্টগ্রাম বন্দর ভারতকে ব্যবহার করতে দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল মুক্ত আঞ্চলিক পরিসর তৈরি করা। তার মানে শুধু ভারত নয়; নেপাল, ভুটানসহ সব প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সবার যোগাযোগ তৈরি হবে। কিন্তু নেপাল ও ভুটানের সঙ্গে কি আমরা যথেষ্ট পরিমাণ যোগাযোগ করতে পেরেছি? সেটি হচ্ছে না বলে মানুষ ক্ষোভ প্রকাশ করছে।

ভারত কেন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বদলে স্থিতিশীলতার কথা বলছে

তবে এ সফরের কয়েকটি ভালো বিষয় আছে। সেগুলোর মধ্যে আছে ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো। সেখানে ভারতের ভেতর দিয়ে নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আনার ব্যাপারে ভারতের সম্মতি আছে। এটি ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতের উৎসের বহুমুখীকরণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

কম্প্রিহেন্সিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ অ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা) নিয়ে এগোনোর ব্যাপারেও দুই দেশ সম্মত হয়েছে। এখন থেকে এ নিয়ে দর-কষাকষি শুরু হবে। এর ফলে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার অর্থনৈতিক যোগাযোগ আরও সমৃদ্ধ হবে। তবে সেপা চুক্তি পুরো বাস্তবায়ন হতে কয়েক বছর সময় লাগবে। এখানে বাণিজ্য, বিনিয়োগের অনেক বিষয় আছে।

ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য শুল্ক বিষয়ে আমাদের জন্য যে বাধাগুলো আছে, তা কাটাতে কী উদ্যোগ নেওয়া হবে, তার কোনো ইঙ্গিত নেই। ভারতে কিছু কিছু পণ্য পাঠানোর ক্ষেত্রে আমাদের নানা অসুবিধা আছে। এ বিষয়গুলো অস্পষ্ট থেকে গেছে। যদিও সেপা ধারণা হিসেবে ইতিবাচক। এতে বাংলাদেশের ভারতের বাজারে অংশগ্রহণ ও বিনিয়োগের সুযোগ আরও বাড়বে।

শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য তিস্তার পানি চুক্তি কেন প্রয়োজন

আরেকটি ইতিবাচক বিষয় হচ্ছে, দুই বছর পর গঙ্গা চুক্তিটি শেষ হয়ে যাবে। সেটি নবায়নের জন্য ভারত নির্দেশনা দিয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে নানা ধরনের নেতিবাচক মন্তব্য আসা শুরু করেছে। তবে আমি মনে করি, এটি একটি ভালো সিদ্ধান্ত।

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের জন্য আমাদের যা যা করণীয়, তা আমরা এ সময়ের মধ্যে সেরে নিতে পারব। এ ছাড়া ডিজিটাল ও গ্রিন অংশীদারত্বের বিষয়গুলোও ধারণা হিসেবে ইতিবাচক। কারণ, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ জ্বালানির দিক থেকে ভারত আমাদের থেকে অবশ্যই এগিয়ে আছে। এসব বিষয়ে একসঙ্গে কাজ করতে পারলে আমাদের অংশীদারি সমৃদ্ধ হওয়ার সুযোগ আছে।

পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে দুই দেশের মধ্যে বহু বছর কথাবার্তা হচ্ছে। একমাত্র গঙ্গা চুক্তি ছাড়া আরও যে ৫৩টি যৌথ নদী আছে, সেগুলোর কোনোটিই নিয়ে আমরা চুক্তি করতে পারিনি। তিস্তার চুক্তি ২০১১ সালে প্রস্তুত হলেও তা স্বাক্ষর হয়নি।

আমাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ভারতের দিক থেকে যে উদ্যোগের প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানি না। আর আলোচনা হলেও ঘোষণাপত্রে তার প্রতিফলন দেখছি না। বড় বড় রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো ছোট ছোট সমস্যার সমাধান আমাদের জন্য জরুরি। আমাদেরও কিছু প্রাপ্তির অবশ্যই আছে, কিন্তু এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা দরকার। নয়তো বড় রূপকল্পগুলো আমাদের আরও চ্যালেঞ্জে ফেলবে।

এই চুক্তি বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের দাবি। এর সঙ্গে আমাদের উত্তরাঞ্চলের দুই কোটি মানুষের ভাগ্য জড়িত। এ চুক্তির বিষয়ে ভারতের দিক থেকেও অঙ্গীকার ছিল। কিন্তু এবার ঘোষণায় এ চুক্তি নিয়ে কোনো কিছু উল্লেখ নেই। নদী অংশীদার হিসেবে পানির হিস্যা আমাদের অধিকারের বিষয়। কিন্তু তিস্তার ক্ষেত্রে যখন বিষয়টি থমকে আছে, তখন আরও ৫৩টি নদীর ক্ষেত্রেও সেই প্রভাব পড়বে। আমাদের অধিকার হারানোর আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।

তিস্তার পানি যা আসত, তা–ও আর আসবে না?

২০১১ সালে নদী নিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যে ফ্রেমওয়ার্ক করা হয়েছিল, সেখানে তিস্তা, ব্রহ্মপুত্র ও গঙ্গা নদীর অববাহিকাভিত্তিক সমাধানের দিকে নজর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু এবার ভারত সরকার যা বলেছে, তা আমার বুঝতে অসুবিধা হচ্ছে।

তারা বলেছে, আমরা যৌথ নদী কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে তথ্য আদান–প্রদান ও অন্তর্বর্তীকালীন পানিবণ্টনের রূপরেখা প্রণয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার ব্যাপারে আলাপ–আলোচনা চালিয়ে যাব।

এটি দিয়ে বোঝা যাচ্ছে না, তিস্তার বিষয়টি কোন অবস্থায় আছে। ফলে তিস্তার বিষয়ে একধরনের অস্বচ্ছতা থেকে গেল। সেই জায়গাটা আমাদের দিক থেকে আমরা কিছুটা অস্বস্তি বোধ করছি। কারণ, এটি আমাদের অধিকারের বিষয়।

বাংলাদেশে ভারতের যে টেকনিক্যাল টিম পাঠানোর কথা বলা হচ্ছে, তারা বাংলাদেশের অংশে কাজ করবে। তাহলে তিস্তা অববাহিকা নিয়ে আগের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কি আমরা সরে গেলাম?

তিস্তা প্রকল্প: চীন–ভারত ছাড়া কি বাংলাদেশের বিকল্প নেই

বিষয়টি নিয়ে ড. আইনুন নিশাত, শেখ রোকনসহ অনেকে তুলেছেন। ফলে আমার মনে হয় পানির বিষয় নিয়ে আমরা এক নতুন তাত্ত্বিক জটিলতার মধ্যে ঢুকে গেলাম। যদিও আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কিন্তু বৈঠকের যৌথ ঘোষণায় কোনো স্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। ভারত বিষয়টাকে একধরনের ধূম্রজালের মধ্যে নিয়ে যেতে পেরেছে, এটি তাদের দিক থেকে সার্থকতা।

আরেকটা বিষয় হচ্ছে তিস্তা নিয়ে চীনের একটি পরিকল্পনা ছিল, সেখানে এখন ভারতও চলে এসেছে। আমরা এখন একটি চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়ে গেলাম, কে করতে পারবে এবং কীভাবে করতে পারবে।

আরও একটি লক্ষণীয় দিক হচ্ছে, ওই অঞ্চল নিয়ে দুই দেশেরই মনোযোগ। বিশেষ করে ভারতের মনোযোগ বেশি। যে সাতটি সমঝোতা স্মারকে সই করা হয়েছে, সেগুলো কিন্তু আমাদের উত্তরবঙ্গকেন্দ্রিক। সেখানে রংপুরে একটি সহকারী হাইকমিশনারের দপ্তর খোলার ঘোষণা দিয়েছে। তার পাশাপাশি আমরা খুলব কি না, এ রকম কোনো ঘোষণা নেই।

প্রেস কনফারেন্সে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বক্তব্যে সামরিক নিরাপত্তার বিষয়ে ভারতের বেশ আগ্রহ প্রকাশ পেয়েছে। বাইরেও এটি নিয়ে আলোচনা দেখা যাচ্ছে।

মনে হচ্ছে, চীনকে মাথায় রেখে ভারত তার সামরিক চিন্তাভাবনায় বাংলাদেশকে সংযুক্ত করতে চাইছে। ভারত বাংলাদেশকে তার মতো করে তৈরি করতে আগ্রহী এবং আপাতদৃষ্টে বাংলাদেশও যে তাতে সায় দিয়েছে, এমনটি ভাবলে তা অমূলক হবে না।

এরপর বলতে হয় সীমান্ত হত্যা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী পর্যায় থেকে শুরু করে ভারতের পক্ষ থেকে অঙ্গীকার ছিল সীমান্ত হত্যা বন্ধ করা হবে। কিন্তু দুই দেশৈর মধ্যে বৈঠকে সীমান্ত হত্যা নিয়ে কোনো ধরনের ঘোষণা আমরা পেলাম না, এমনকি বিষয়টি উল্লেখই করা হয়নি।

মোটাদাগে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ভারতের দিক থেকে যে উদ্যোগের প্রয়োজন, তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে কি না জানি না। আর আলোচনা হলেও ঘোষণাপত্রে তার প্রতিফলন দেখছি না। বড় বড় রূপকল্প বাস্তবায়নের জন্য অনেকগুলো ছোট ছোট সমস্যার সমাধান আমাদের জন্য জরুরি। আমাদেরও কিছু প্রাপ্তির অবশ্যই আছে, কিন্তু এর জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকা দরকার। নয়তো বড় রূপকল্পগুলো আমাদের আরও চ্যালেঞ্জে ফেলবে।

ভারতের নির্বাচন কেন বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

আগামী মাসে প্রধানমন্ত্রী চীন সফরে যাচ্ছেন। তারা নিশ্চয়ই ভারতের সঙ্গে আমাদের সমঝোতার বিষয়গুলো জানতে চাইবে। আমরাও আমাদের মতো করে বিষয়গুলো তাদের জানাব।

তিস্তা নিয়ে চীনেরও পরিকল্পনা আছে। এখন তিস্তা বা যেকোনো প্রকল্পই হোক, সেগুলো কাকে আমরা দেব, তার মানদণ্ড হওয়া উচিত কাদের অভিজ্ঞতা, সক্ষমতা ও আর্থিক সামর্থ্য বেশি এবং আমাদের স্বার্থ যেখানে বেশি রক্ষা হবে। এ ছাড়া অর্থনৈতিক সহায়তা, রোহিঙ্গা ইস্যু, মিয়ানমারের গৃহযুদ্ধে আমাদের স্বার্থে যাতে আঘাত না আসে, সে বিষয়সহ অনেক কিছু নিয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।

● এম হুমায়ুন কবির সাবেক কূটনীতিক ও রাষ্ট্রদূত

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুন ২৫, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ