পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলেই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের কাজ এগিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছে।
ভারতের সংবাদ সংস্থা পিটিআই বিভিন্ন সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে আজ মঙ্গলবার জানিয়েছে, গত এপ্রিলে ভারত সরকারের তরফে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সঙ্গে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি নবায়নের জন্য যোগাযোগ করা হয়। পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ ও পানিসম্পদ দপ্তরের এক যুগ্ম সচিব (ওয়ার্কস) আগামী ৩০ বছরে ফারাক্কা বাঁধের পরের অংশে উজানে নদীর প্রবাহ (ডাউনস্ট্রিম) ও পশ্চিমবঙ্গের পানিরে চাহিদা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় সরকারকে জানায়।
গতকাল সোমবার কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে মমতা বন্দোপাধ্যায় বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে ছাড়া গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন ও তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে আলোচনা সম্ভব হয়। এ নিয়ে তিনি গতকাল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠিও লিখেছেন।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সূত্রকে উদ্ধৃত করে পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন নিয়ে গতকাল সোমবার পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দাবি করেছেন, তা ‘মিথ্যা’।
মমতা গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে লেখা এক চিঠিতে বলেন, রাজ্য সরকারকে বাদ দিয়ে এককভাবে বিষয়টি নিয়ে আলাপ-আলোচনা মেনে নেওয়া বা আশা করা কোনোটাই উচিত নয়।
তবে কেন্দ্রীয় সরকারের সূত্র বলছে, কেন্দ্রীয় সরকার ২০২৩ সালের ২৪ জুলাই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে তাদের এক প্রতিনিধির নাম পাঠানোর অনুরোধ করেছিল। যাতে রাজ্য সরকারের ওই প্রতিনিধিকে কেন্দ্র সরকার গঠিত পানি বিষয়ক একটি প্যানেলে রাখা যায়। এর উদ্দেশ্য ১৯৯৬ সালে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত ফরাক্কা চুক্তির ‘অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনা’ করা। ১৯৯৬ সালে এই চুক্তির ভিত্তিতে যে কাজ শুরু হয়, তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২৬ সালের ১২ ডিসেম্বর।
কেন্দ্রীয় সরকারের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পারস্পরিক সমঝোতার ভিত্তিতে এই চুক্তি আবার নবায়ন হবে বলে চুক্তিতেই লেখা আছে। তাহলে রাজ্য সরকার এটা আটকাতে পারে কি না, তার আইনি দিক খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। আবার এটাও মাথায় রাখতে হবে, নদীটি একটি রাজ্যের মধ্যে দিয়ে গেছে। সেখানকার মুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে না নিয়ে কোনো চুক্তি মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করা কঠিন।’
ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বলেন, এ ছাড়া রাজ্যকে সঙ্গে না নেওয়ার অন্য সমস্যা হচ্ছে, ভারতের সংবিধানে পানির নিয়ন্ত্রণ রাজ্যের হাতে। আন্তরাজ্য নদীর ক্ষেত্রে সংসদ ও বিচার বিভাগের পরামর্শ এবং নির্দেশক্রমে কেন্দ্রীয় সরকার পানিবণ্টনের ক্ষেত্রে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া বেশ জটিল।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ২৫, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,