পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যোগ্যতা রাখেন বলে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন যে মন্তব্য করেছিলেন, তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিজেপি। ভারতে ক্ষমতাসীন দলটির এক নেতা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রীর পদ খালি নেই।
নোবেলজয়ী প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন শনিবার ভারতের একটি সংবাদ সংস্থার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের যোগ্যতা রয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীও হতে পারেন। তিনি আরও বলেন, তবে এ কথাও ঠিক, বিজেপির বিরুদ্ধে যে বহু বিভক্ত দল রয়েছে, তাদের একজোট করে মমতা নেতৃত্ব দিতে পারবেন কি না, তা এখনো প্রতিষ্ঠিত হয়নি। যদিও অমর্ত্য সেনের এই মন্তব্যের পর থেমে থাকেনি বিজেপি।
বিজেপির নেতা ও কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রসাদ গতকাল রোববার পশ্চিমবঙ্গের সোনারপুরে দলীয় এক সমাবেশে বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে সব নাগরিকের নিজের কথা বলার অধিকার আছে। তাই এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। তবে একথা বলতে দ্বিধা নেই যে প্রধানমন্ত্রী পদে এখন আর কোনো ভ্যাকেন্সি নেই।’
ধর্মেন্দ্র প্রসাদ বলেছেন, ‘দেশের জন্য অনেক কাজ করেছেন প্রধনমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাই আমার নিশ্চিত বিশ্বাস, মোদিজির নেতৃত্বে ২০২৪ সালে বিজেপিই ক্ষমতায় আসবে। তৃতীয়বারের জন্য মোদি ভারতের প্রধানমন্ত্রী হবেন।’ এরপরেই সাংবাদিকেরা প্রশ্ন করেন, ‘মোদির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কে হবেন? মমতা না রাহুল গান্ধি?’ এই প্রশ্নটিকে হেসে উড়িয়ে দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রসাদ। শুধু বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর লিস্টতো অনেক লম্বা।’
এর আগে অমর্ত্য সেনের মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে গতকাল বিজেপির সর্বভারতীয় কমিটির সহসভাপতি ও পশ্চিমবঙ্গের সংসদ সদস্য দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘অমর্ত্য সেনের পুরোনো ভাবনা হলো তাঁরা নরেন্দ্র মোদিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে অন্য কাউকে প্রধানমন্ত্রী পদে বসাতে চান। তাই এখনো অমর্ত্য সেন সেই স্বপ্ন দেখছেন। সেই স্বপ্ন সফল হবে না। কত আসন আছে মমতার? বা কত আসন পাবেন মমতা? সেই হিসাব করে দেখুক না?’
দিলীপ ঘোষ বলেন, ৫৪৩ আসনের লোকসভায় সর্বশেষ ২০১৯ সালের নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে লোকসভার ৪২টি আসনের মধ্যে মমতা পেয়েছিলেন ২২টি আসন। আর বিজেপি ১৮টি আসন। কংগ্রেস ২টি আসন। অন্য দল শূন্য।
অমর্ত্য সেনের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র কুণাল ঘোষ গতকাল বলেছেন, ‘অতীতে এই ভারতে একাধিক অকংগ্রেসি সরকার গঠিত হয়েছে। ভিপি সিং, ইন্দ্র কুমার গুজরাল, এইচ ডি দেবগৌড়ের মতো অকংগ্রেসি নেতারা প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তাঁদের অবশ্য নিজেদের দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না সংসদে। তখন তো বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ হাফপ্যান্ট পরে আরএসএস করতেন। দিলীপ ঘোষের তো তাই এত কিছু জানা ছিল না।’
এই প্রসঙ্গে সিপিএমের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শাখার সম্পাদক মহম্মদ সেলিম বলেছেন, ‘কেন মমতার নাম বলা হচ্ছে জানি না। তারা একে অপরের পরিপূরক, মোটেই বিকল্প নয়। তারা সবাই এক প্রজাতির নেতা। কোনো পার্থক্য নেই।’
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:জানুয়ারী ১৬, ২০২৩
রেটিং করুনঃ ,