Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

বৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ: সরকারি বনাম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:ড. মো. সিরাজুল ইসলাম।

বিশ্বের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য ও মর্যাদাপূর্ণ র‍্যাঙ্কিং সংস্থা ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ সম্প্রতি ২০২৩ সালের জন্য পৃথিবীব্যাপী সব বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থানভিত্তিক একটি তালিকা প্রণয়ন করেছে। সম্মানজনক এই র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে। পাশের টেবিলে এর একটি তালিকা ও অবস্থান উল্লেখ করা হলো। সংগত কারণেই, সবার বদ্ধমূল ধারণা ছিল এই যে তালিকার প্রথমে নিশ্চিত করেই অবস্থান থাকছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর বুয়েটের।

কিন্তু না, এবারের র‍্যাঙ্কিংয়ে বড় চমক ছিল বুয়েটকে ছাড়িয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উঠে আসা। বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সার্বিক বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিংয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল যৌথভাবে প্রথম। উভয়ে, বৈশ্বিক তালিকায় ৬০১-৮০০–এর মাঝে অবস্থান করছে। এ তালিকায় ২য় স্থানে বুয়েট, বাকৃবি ও কুয়েট ১২০১-১৫০০। তবে বিষয়ভিত্তিক তালিকায় ছিল সবচেয়ে বড় চমক! সার্বিক তালিকা যা–ই হোক, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’–এ বুয়েটকে ছাড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়, এমনটি ভাবা হয়েছিল। তবে এবারও বিপর্যয়, ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’–এর তালিকায় প্রথম নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, ২য় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আর ৩য় বুয়েট।

বিষয়টি অনেকের কাছেই অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে। নানা মহলে এ নিয়ে গুঞ্জন। ‘আদার ব্যাপারীর জাহাজের খবর নেওয়ার’ মতো এ বিষয়ে অনভিজ্ঞরাও আনাড়ির মতো বিশ্ব বিখ্যাত র‍্যাঙ্কিং সংস্থা ‘টাইমস’–এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার মতো ধৃষ্টতাও দেখাচ্ছেন। তবে প্রশ্ন তো একটি রয়েই যাচ্ছে, কেন এমনটি হলো?

প্রথমেই দেখা যাক, তালিকায় আর সব দেশের অবস্থান বা প্রথম দশটি বিশ্ববিদ্যালয় কেমন। প্রথম অক্সফোর্ড, দ্বিতীয় হার্ভার্ড, তৃতীয় ক্যামব্রিজ, চতুর্থ স্ট্যানফোর্ড, পঞ্চম এম আই টি, ষষ্ঠ ক্যালটেক, সপ্তম প্রিন্সটন, অষ্টম ইউ সি বার্কলে, নবম ইয়েল এবং দশম ইম্পিরিয়াল কলেজ, লন্ডন। পৃথিবীর যেকোনো র‍্যাঙ্কিং তালিকায় দশটি বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই প্রথম দিকে থাকে। হ্যাঁ, লন্ডনভিত্তিক হওয়ায় ব্রিটিশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি কিছুটা অনুরাগ আছে হয়তোবা, তবে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি কোনো বিরাগ বা যেনতেনভাবে র‍্যাঙ্কিংটি সম্পন্ন করে ফেলা হয়েছে, এমনটি ভাবার কোনো কারণ নেই।

‘টাইমস’–এর পাশাপাশি আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিং সর্বজনগৃহীত, তা হচ্ছে—‘কিউ এস’ র‍্যাঙ্কিং। ‘কিউ এস’ র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের শুধু চারটি বিশ্ববিদ্যালয় বৈশ্বিক র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেয়েছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট তালিকায় প্রথম, আর নর্থ সাউথ ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় তালিকায় দ্বিতীয়। ‘কিউ এস’ র‍্যাঙ্কিংয়ে ‘টাইমস’–এ উল্লেখিত বিশ্বের প্রথম দশটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাতটি প্রায় একই রকম, তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু ভিন্ন। এই দুই র‍্যাঙ্কিং সংস্থার তালিকাকে তাই কোনোভাবেই অগ্রাহ্য করার কোনো উপায় নেই।

বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন বিষয়ে মান নিয়ন্ত্রণে, অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা কাজ করে থাকে। শুধু বিশ্ববিদ্যালয় কেন, গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপনের ক্ষেত্রেও আপনাকে এই র‍্যাঙ্কিং সংস্থার শরণাপন্ন হতে হবে, নতুবা ভালো-খারাপ পার্থক্য করতে পারবেন না। ‘প্রিডেটরি জার্নাল’ বলতে ইংরেজিতে একটি কথা আছে, যার মানে হচ্ছে ‘ভুয়া জার্নাল’। বর্তমান পৃথিবীতে এই ‘ভুয়া’ বা ‘প্রিডেটরি জার্নাল’–এর সংখ্যা আসল ‘জার্নাল’–এর প্রায় দশ গুণ। ‘বেল’–এর তালিকায় সারা পৃথিবীতে প্রচলিত অসংখ্য এ ধরনের ‘ভুয়া’ বা ‘প্রিডেটরি জার্নাল’–এর নাম লিপিবদ্ধ করা আছে, যেখানে টাকার বিনিময়ে গবেষণা প্রকাশ করা যায়। আর এ ক্ষেত্রে পার্থক্য করে দেবে ‘স্কুপাস’, ‘ওয়েব অব সায়েন্স’ বা ‘এবিডিসি’–এর মতো র‍্যাঙ্কিং সংস্থাগুলো।

আপনার জার্নালটি যদি এ ধরনের কোনো নামকরা জার্নাল র‍্যাঙ্কিং সংস্থার তালিকায় থাকে, তাহলে আপনি এর মান নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারেন। আবার মানের হেরফের তথা ‘ইমপ্যাক্ট ফ্যাক্টর’–এর ওপর ভিত্তি করে সেখানে গ্রহণযোগ্য জার্নালগুলোর একটি ক্রমও করা আছে। এর বাইরে যেকোনো জার্নালই সন্দেহজনক।

তেমনিভাবে বিশ্বব্যাপী আছে অজস্র ভুয়া ঠিকানাহীন বিশ্ববিদ্যালয়েরও ছড়াছড়ি। টাকার বিনিময়ে তারা ‘পিএইচডি’ ডিগ্রি দেয়। অনেকে আবার সম্মানজনক ‘পিএইচডি’ বা ডক্টরেট ডিগ্রি দেয়। মিডিয়া প্রতিষ্ঠানের মালিককেও আমরা দেখি নিজের নামের আগে ডক্টর ব্যবহার করতে। বাংলাদেশে অসংখ্য সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা-কর্মচারী একসময় গণহারে সেসব ‘ভুয়া’ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ভুয়া’ ডিগ্রি নিয়ে নামের আগে ‘ড.’ ব্যবহার করত। বর্তমানে একটি সরকারি আদেশে, সরকারি কর্মকর্তাদের নিজের নামের আগে ‘ড.’ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সরকারের অনুমতির বিধান করা হয়েছে এই অসুস্থ প্রবণতাকে ঠেকাতে। আর এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়ের মান রক্ষার্থে কাজ করে যাচ্ছে ‘টাইমস’ কিংবা ‘কিউএস’–এর মতো সংস্থাগুলো।

তবে, বাংলাদেশে কিছু নামীদামি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাম্প্রতিক কালে ‘টাইমস’ কিংবা ‘কিউএস’–এর তালিকায় নাম না থাকা বা পেছনে পরে যাওয়ার কারণ হতে পারে নানাবিধ। র‍্যাঙ্কিং–এর জন্য নিজেকে উপস্থাপন তথা প্রস্তুতিও একটি উল্ল্যেখযোগ্য বিষয় এখানে। কেননা, এই র‍্যাঙ্কিং সংস্থাগুলো অনেকগুলো নিয়ামকের ওপর ভিত্তি করে র‍্যাঙ্কিংয়ের ক্রম নির্ধারণ করে থাকে। আর এ প্রতিটি নিয়ামকের বিপরীতে সঠিক তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন না করতে পারলে র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে যাবেন।

শিক্ষকের ক্ষেত্রে তাঁর ডিগ্রি ও গবেষণার মান, শিক্ষক জনপ্রতি কতটি গবেষণা প্রবন্ধ, প্রকাশিত প্রবন্ধের মান, বেতন-ভাতাসহ চাকরির সুবিধাদি; ছাত্র-ছাত্রীদের ক্ষেত্রে পড়াশোনার পরিবেশ ও বিভিন্ন সুবিধাদি, পাস করা ছাত্র-ছাত্রীরা উচ্চ শিক্ষার্থে কোথায় যাচ্ছে, কোথায় চাকরি করছে এবং তাঁদের চাকরিদাতা সংস্থা তাঁদের কাজের মানের ব্যাপারে কি মন্তব্য করছে, ছাত্র প্রতি শিক্ষক, বিদেশি ছাত্র-ছাত্রী, এমনকি ছাত্রী-ছাত্র অনুপাত, এ সবকিছু নিয়েই চুলচেরা বিশ্লেষণ হয় এখানে। ভালো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এসব তথ্য-উপাত্ত সংরক্ষণ ও উপস্থাপনের জন্য ‘র‍্যাঙ্কিং সেল’ও আছে।

অন্য প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা জানি না, তবে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘র‍্যাঙ্কিং সেল’ আছে। একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের যেসব আবশ্যিক সুবিধাদি থেকে থাকে তাঁর প্রায় সবই এখানে করার চেষ্টা করা হয়ে থাকে; যেমন পাস করার পর চাকরি খোঁজায় সাহায্য করতে ‘ক্যারিয়ার অ্যান্ড প্লেসমেন্ট সেন্টার’, আন্তর্জাতিক বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ, এমওইউ তথা বিদেশে পড়াশোনায় ছাত্র-ছাত্রীদের সাহায্য করতে ‘এক্সটারনাল অ্যাফেয়ার্স’ বিভাগ, আছে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার বাইরে বহি-কার্যক্রমে অংশগ্রহণের নিমিত্তে প্রায় ২৫টি ক্লাব ইত্যাদি।

আসলে সাম্প্রতিক কালে, পাবলিকের তুলনায় অনেক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তাঁদের সীমিত সম্পদের মধ্যেই অনেক ভালো করছে। বাংলাদেশে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্থান, এ বিষয়ে আমার অন্তত দুটি লেখা আছে—১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ইত্তেফাক, আর ২৮ আগস্ট ২০১৬ প্রথম আলোতে।

প্রখ্যাত অধ্যাপক জাফর ইকবাল এ ক্ষেত্রে সত্যিকার অর্থেই দূরদর্শী। ২০০০ সালের দিকে, অর্থাৎ প্রায় দুই যুগের কাছাকাছি সময় আগে তিনি একবার পত্রিকায় শিরোনাম দিয়ে লিখেছিলেন, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামী আদমজী জুট মিল হচ্ছে কি না? সম্ভবত ক্ষোভ থেকেই তিনি এটি বলেছিলেন। তখন একেবারেই হেসে উড়িয়ে দেওয়ার মতো মনে হলেও এখন অনেকের কাছেই তা ভাববার বিষয় বটে। আবার সব প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে খুব ভালো চলছে, তা–ও কিন্তু নয়।

সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান প্রায় সবগুলোরই কাছাকাছি, কিন্তু প্রাইভেটে আপনি প্রথম আর শেষ বিশ্ববিদ্যালয় দুটির মধ্যে পার্থক্য পাবেন আকাশ আর পাতাল। এ ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারির পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নিয়ন্ত্রণ, দুর্নীতি রোধ ও সুশাসন নিশ্চিতকরণ সরকারের কিছু বলিষ্ঠ পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানাই। বেসরকারি বলে তাঁরা এগুলো সম্পর্কে উদাসীন বা নিশ্চুপ না থেকে দেশের সম্পদ হিসাবে বিবেচনায় নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোতে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রেখেছেন, যা সত্যিকার অর্থেই প্রশংসনীয়।

আসলে তাই। প্রাইভেট-পাবলিক যা–ই হোক, উভয়েই দেশ গঠনে ভূমিকা রাখছে। তাই শেষ কথা হচ্ছে, সরকারি হোক আর বেসরকারি, আরও বেশি বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা আন্তর্জাতিক র‍্যাঙ্কিং সংস্থার তালিকাগুলোতে দেখতে চাই। প্রকৃত অর্থে, দেশের উচ্চশিক্ষার মান প্রসার ব্যতীত বাংলাদেশের পক্ষে কখনোই আগামীর পৃথিবীতে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি তথা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা সম্ভব নয়।

*****ড. মো. সিরাজুল ইসলাম; অধ্যাপক, সিভিল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ ও পরিচালক, সেন্টার ফর ইনফ্রাস্ট্রাকচার রিসার্চ অ্যান্ড সার্ভিসেস (সিআইআরএস), নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ১২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ