প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অর্থ পাচারের দুর্নীতিতে অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির ব্যাপারেও তথ্য আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তা দেখছে। স্বনামধন্যদের তথ্য সামনে আসবে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে প্রধানমন্ত্রীর ৪ দিনের ভারত সফর নিয়ে আজ বুধবার গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে একাত্তর টেলিভিশনের সাংবাদিক ফারজানা রুপা অর্থ পাচার নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চান। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এমন এমন মানুষের অর্থ পাচারের তথ্য আছে, তাদের কথা আপনারা সাংবাদিকেরা লিখবেন কি না, সন্দেহ আছে। আমি সোজা ভাষায় কথা বলি। বহু তথ্য আমার কাছে আছে। অনেক স্বনামধন্য ব্যক্তির ব্যাপারেও তথ্য আছে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তা দেখছে। স্বনামধন্যদের তথ্য সামনে আসবে। তখন আপনারা লিখবেন কি না, দেখব। কারা অর্থ পাচার করে, তা জানতে আমরা সুইস ব্যাংকে তালিকা চেয়ে চিঠি পাঠিয়েছি। কিন্তু তালিকা আসেনি। অনেকে অর্থ পাচারের কথা হাওয়ায় বলে দেয়। কিন্তু কেউ সঠিক তথ্য দিতে পারে না। এটা একটা সমস্যা।’
দেশ টেলিভিশনের সাংবাদিক জয় যাদব প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মহাজোট, একক নাকি ১৪ দলকে সঙ্গে নিয়ে নির্বাচন করবে। তখন প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সময় এলে এসব বিষয় বলতে পারব। এখনো সেই সময় আসেনি। গত নির্বাচন আমরা জোটবদ্ধ হয়ে নির্বাচন করেছি। আগামী নির্বাচনে কে কোথায় থাকবে, সেটা সময়ই বলে দেবে।’
সাংবাদিক জয় যাদব প্রধানমন্ত্রীর কাছে আরও জানতে চান, আসন্ন জেলা পরিষদ নির্বাচনে পুরোনো ৩১ জন প্রশাসককে বাদ দেওয়া হয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পুরোনো কাউকে বাদ দেওয়া হবে কি না? জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘মনোনয়নের ব্যাপারে পরিবর্তন স্বাভাবিক। অবশ্যই আমরা যাচাই করব কার জেতার সম্ভাবনা আছে। কার জেতার সম্ভাবনা নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
ভারত সফর থেকে শূন্য হাতে আসিনি
ভারত সফর থেকে বাংলাদেশ কী পেল, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এই প্রশ্নটি খুবই আপেক্ষিক। তিনি বলেছেন, ‘একেবারে শূন্য হাতে এসেছি, সেটি বলা যাবে না।’
৫ সেপ্টেম্বর চার দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ভারত সফরে যান প্রধানমন্ত্রী। সে সফর নিয়ে আজ বুধবার বিকেল চারটায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ইউএনবির সম্পাদক ফরিদ হোসেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, ভারত সফর থেকে কী পেল বাংলাদেশ?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আপনার নিজের ওপর নির্ভর করছে, সফরটিকে কীভাবে দেখছেন। ভাগ্যিস আপনি প্রশ্ন করেননি, আমরা ভারতকে কী দিলাম। আমার কথা হচ্ছে, এই সফর থেকে যা যা পেয়েছি, তা বলেছি। মনে রাখতে হবে, ভৌগোলিকভাবে আমাদের চারদিকে ভারত। একদিকে মিয়ানমার। সেই বন্ধুপ্রতিম দেশটি থেকে ব্যবসা, বাণিজ্য, কৃষি যোগাযোগসহ সব বিষয়ে সহযোগিতা পাচ্ছি। আমরা ভারত থেকে পাইপলাইনে করে তেল নিয়ে এসেছি। আমরা যা পণ্য উৎপাদন করি, তারপরও তাদের কাছ থেকে পণ্য আমদানি করতে হয় আমাদের। এবারের সফরে এলএনজি আমদানির বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা খুলনার ওই অঞ্চলের জন্য এলএনজি আনতে পারি। ওই দিকে গ্যাসের সমস্যা আছে। এভাবে হিসাব করেন, একেবারেই শূন্য হাতে এসেছে, সেটা বলতে পারবেন না। তবে কী পেলাম বা না পেলাম, তা মনের ব্যাপার। মন যদি বলে কিছুই পাইনি, তবে আমার কিছু বলার নেই। যেমন বাংলাদেশে আমরা এত কাজ করার পরও বিএনপি বলে কিছুই করি নাই। এখানে আমার কিছুই বলার থাকে না। এখানে বিশ্বাসের ব্যাপার। আত্মবিশ্বাসের ব্যাপার।’
সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: সেপটম্বর ১৪, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,