Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সেনাবাহিনী নিয়ে কী ভাবছে ভারত (২০২২)

Share on Facebook

গত সপ্তাহের ঘটনা। উত্তর ভারতের রাজস্থান রাজ্যের ২৩ বছরের এক তরুণ দাবি করেন, তিনি একটি বিক্ষোভে যোগ দিতে বাড়ি থেকে ৫০ ঘণ্টা দৌড়ে রাজধানী দিল্লিতে পৌঁছান। সশস্ত্র বাহিনীতে আবার নিয়োগ শুরুর জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাতে ওই বিক্ষোভ ডাকা হয়েছিল।

জাতীয় পতাকা হাতে ৩৫০ কিলোমিটার দৌড়ানো ওই তরুণের নাম সুরেশ ভিচার। সুরেশ বলেন, তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী হলেও দুই বছর ধরে নিয়োগ বন্ধ। এদিকে তাঁর বয়সও বাড়ছে। ভারতে সর্বোচ্চ ২১ বছর বয়স পর্যন্ত একজন সৈনিক হিসেবে যোগ দিতে পারেন।

ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যসংখ্যা ১৪ লাখ। ভারতীয় সেনাবাহিনী দেশটির, এমনকি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ একটি প্রতিষ্ঠান, যেখানে এত মানুষ কর্মরত। অনেক ভারতীয় তরুণের জন্য এটা খুবই নিশ্চিন্ত ও নিরাপদ চাকরি। ভারতের সশস্ত্র বাহিনী থেকে প্রতিবছর প্রায় ৬০ হাজার সদস্য অবসরে যান। প্রায় ১০০টি স্থানে তাঁদের জায়গায় নতুন করে সদস্য নিয়োগের কাজ চলে। কর্মকর্তারা বলছেন, করোনা মহামারির কারণে দুই বছর ধরে নিয়োগপ্রক্রিয়া বন্ধ আছে।

তবে বিশ্লেষকদের দাবি, কর্মকর্তাদের এমন দাবির পুরোটা সত্য নয়। বিশ্লেষকেরা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার এখন দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আকার ছোট করার উপায় খুঁজছে।

এর একটা বড় কারণ সেনাবাহিনীর বেতন ও অবসরভাতা। বলা হচ্ছে, ভারতের সামরিক খাতের জন্য সাত হাজার কোটি ডলার বরাদ্দের অর্ধেকের বেশি যায় সেনাবাহিনীর সদস্যদের বেতন-ভাতায়। ফলে সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণ ও সরঞ্জামের ঘাটতি মেটাতে তেমন অর্থ থাকে না।

সামরিক খাতে ব্যয়ের দিক থেকে বিশ্বে ভারতের অবস্থান তৃতীয়। ভারতের আগে রয়েছে শুধু যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এ ছাড়া ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ অস্ত্র আমদানিকারক। ভারতের কাছে রয়েছে অসংখ্য পারমাণবিক অস্ত্র আর ক্ষেপণাস্ত্র। এ জন্য মোদি সরকার ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ নামে প্রকল্প হাতে নিয়েছে। দেশে অস্ত্র সরঞ্জাম তৈরির জন্য শত শত কোটি ডলার ব্যয় করছে মোদি সরকার।

সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে ভারতের প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে বলা হয়, নির্দিষ্ট মেয়াদে সৈনিক নিয়োগের ব্যাপারে চিন্তা চলছে। মোদি সরকারের প্রাথমিক পরিকল্পনা হচ্ছে, তিন বছরের জন্য সৈনিক নিয়োগ দেওয়া। এই প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে ‘থ্রি ইয়ার ট্যুর অব ডিউটি’।

এই সংস্কারের পক্ষে যাঁরা কথা বলছেন, তাঁদের একজন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এর আগে তিনি ‘শুধু মানুষের বীরত্ব নয়, কর্মতৎপর, গতিশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি বাহিনীর প্রয়োজন’ সম্পর্কে কথা বলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘দ্রুত আর সহজে যুদ্ধে জয়ী হওয়ার জন্য ভারতের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। কারণ, আমাদের দীর্ঘ ও টানা যুদ্ধ করার মতো বিলাসিতা তো নেই।’

ভারত কেন সেনাবাহিনীর আকার ছোট করার পরিকল্পনা করছে, তার একটি বড় কারণ বলেছেন দেশটির অবসরপ্রাপ্ত একজন সেনা কর্মকর্তা। লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ এস পানাং বলেন, বর্তমানে বাহিনীতে লক্ষাধিক সেনার ঘাটতি আছে। এটা সংস্কার আনার বড় সুযোগ তৈরি করেছে।

জেনারেল পানাং বলেন, একবিংশ শতাব্দীর বাহিনীগুলোর জন্য অত্যাধুনিক সামরিক প্রযুক্তিনির্ভর কর্মতৎপর বাহিনীর দ্রুত প্রতিরোধ সক্ষমতা প্রয়োজন। উপমহাদেশে পারমাণবিক অস্ত্র থাকা বড় ধরনের প্রচলিত যুদ্ধের ক্ষেত্রে একটা বড় বাধা। তাই এখানে প্রয়োজনটাও বেশি।

জেনারেল পানাং আরও বলেন, ‘ভারতের রয়েছে বৃহৎ একটি সামরিক বাহিনী। যেখানে আমরা মানের ঘাটতি পূরণে অনেক সৈন্য ব্যবহারে বাধ্য হই। একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় তাত্ত্বিকভাবে বাড়তে পারে না। আর তাই বাহিনীকে হালকা করা দরকার।’

ভারতের সাবেক সেনা কর্মকর্তা আজাই শুক্লা প্রতিরক্ষা বিষয়ে লেখালেখি করেন। তিনি বলছেন, সেনাবাহিনীতে এখন যে সদস্যসংখ্যা আছে, এর চেয়ে কম সদস্য নিয়ে ভালো করার সক্ষমতা আছে।

দিল্লির জওহরলাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক লক্ষ্মণ কুমার বেহেরা উদাহরণ হিসেবে চীনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, চীন তাদের প্রতিরক্ষা বরাদ্দের তিন ভাগের এক ভাগ সদস্যদের পেছনে ব্যয় করে। এদিকে ভারতের ক্ষেত্রে এই হার ৬০ শতাংশ। চীনকে টেক্কা দেওয়ার একটি উপায় হলো সামরিক বাহিনীর প্রযুক্তিনির্ভর আধুনিকায়ন। অধ্যাপক লক্ষ্মণ কুমার বলছেন, আর এটা করতে গেলে বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা এখনকার চেয়ে কমিয়ে আনতে হবে।

তবে সামরিক বাহিনীর সদস্যসংখ্যা কমানোর এটাই সঠিক সময় কি না, এটা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ভারতের সীমান্তের দুই দিকে রয়েছে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশ চীন ও পাকিস্তান। ফলে যেকোনো সময় স্থলযুদ্ধের জন্য ভারতীয় বাহিনীকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে।

হিমালয় উপত্যকায় সাম্প্রতিক সময়ে চীনের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত উত্তেজনা চলছে। সীমান্তে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন করে রেখেছে ভারত। এ ছাড়া ভারতশাসিত কাশ্মীরেও পাঁচ লাখ ভারতীয় সেনা মোতায়েন রয়েছে। এরপরও কাশ্মীরে আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকি রয়েছে।

সিঙ্গাপুরের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অনীত মুখার্জি যেমন বলছেন, বিরোধপূর্ণ সীমান্তে উত্তেজনা চলছে। বিতর্কিত ভূখণ্ড নিয়ে যখন অস্থিরতা চলছে, যখন যেকোনো সময় তাৎক্ষণিক বহু জনশক্তি প্রয়োজন, তখন এভাবে নিয়োগ বন্ধ রাখার বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।

‘ট্যুর অব ডিউটি’ প্রস্তাব নিয়ে আরও মারাত্মক কিছু উদ্বেগ রয়েছে। অনীত মুখার্জি বলছেন, যাঁরা এই ধারণার প্রবক্তা, তাঁদের অনেক কিছুই অনুমাননির্ভর। পেশাদার সৈন্যদের বদলে স্বল্প মেয়াদে কয়েক বছরের জন্য সৈন্য নিয়োগ সেনাবাহিনীকে মারাত্মকভাবে দুর্বল করার হুমকিতে ফেলবে।

এই প্রস্তাবের কথা শুনেই অস্বস্তিতে পড়েন জানিয়ে দিল্লিভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি রিসার্চের সিনিয়র ফেলো সুশান্ত সিং বলেন, এতে করে সীমাহীন বেকারত্বের একটি দেশে এমন একটি তরুণ সৈন্যদল তৈরি হবে, যাদের কম বয়সেই সশস্ত্র বাহিনী ছেড়ে চলে যেতে হবে।
নির্দিষ্ট মেয়াদে সেনা নিয়োগ করলে মিলিশিয়া গোষ্ঠী তৈরির শঙ্কা করছেন বিশ্লেষকেরা

সুশান্ত সিং বলছেন, ‘আপনি কি সত্যিই অস্ত্র চালনায় প্রশিক্ষিত এমন অনেক তরুণকে বাহিনী থেকে বের করে দিতে চান, যাঁরা বাহিনী থেকে বের হয়ে এমন একটি সমাজে চাকরি খোঁজার চেষ্টা করবে, যেখানে সহিংসতার মাত্রা ইতিমধ্যে অনেক বেশি? আপনি কি এই সাবেক সৈনিকদের পুলিশে বা নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে কাজ করতে দিতে চান? আমার ভয় হলো, এর মধ্য দিয়ে হয়তো অস্ত্র চালানোয় প্রশিক্ষিত একদল তরুণ সমাজে মিলিশিয়া হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।’

সুশান্ত সিং আরও বলেন, সামরিক বাহিনীতে সংস্কার আনার বিষয়ে সরকার কী ভাবছে, তাদের পরিকল্পনা বা কৌশল কী, সেসবের কিছুই প্রকাশ করা হচ্ছে না। এই সংস্কার করা হচ্ছে লুকিয়ে।

**বিবিসি অনলাইন অবলম্বনে, ইংরেজি থেকে অনূদিত।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: এপ্রিল ১২, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ২২, ২০২৪,রবিবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ