পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের সম্পর্ক এখন তলানিতে। এর মধ্যেই পশ্চিমাদের টেক্কা দিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আরও কাছাকাছি এসেছেন।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনের খবরে বলা হয়েছে, আগামী শুক্রবার যখন বেইজিংয়ে শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন নেতাকে স্বাগত জানাবেন চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, তখন সে তালিকায় বিশেষভাবে থাকবে পুতিনের নামটি। প্রায় ৪০০ দিন পর এই দুই নেতা এ দিনই মুখোমুখি আলোচনায় বসছেন। ইউক্রেন সংকট নিয়ে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়ার বাদানুবাদের মধ্যেই দুই নেতার এই শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
দুটি দেশেরই পশ্চিমের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হচ্ছে। তাই বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠ অংশীদারত্বে পরিণত হওয়ার ক্ষেত্রে মুখোমুখি এ বৈঠক একটি নতুন মাইলফলক যোগ করবে।
অলিম্পিকে যোগদানকারী বিশ্বনেতাদের একটি ছোট দলের মধ্যে অন্যতম পুতিন। চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়া ওই অলিম্পিকে কোনো কূটনীতিক পাঠাচ্ছে না। অন্য নেতারা বেইজিংয়ের করোনার নিয়ন্ত্রণের কঠোর বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এবারের অলিম্পিকে চীন ও পশ্চিমের মধ্যে যে শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে, তা তুলে ধরার পাশাপাশি পুতিন ও সি বৈঠকে আরও ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর ওপর জোর দেবেন।
কার্নেগি মস্কো সেন্টারের এশিয়া-প্যাসিফিক প্রোগ্রামের রাশিয়ার একজন জ্যেষ্ঠ ফেলো এবং চেয়ার আলেকজান্ডার গাবুয়েভ বর্তমান সময়কে পশ্চিমাদের সঙ্গে রাশিয়া ও চীনের লড়াই হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
সি চিন পিং ২০২০ সালের জানুয়ারির পর থেকে চীনের বাইরে যাননি। তিনি এর পরিবর্তে অনলাইন কূটনীতির ওপর নির্ভর করেছেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক আয়োজনে ও বিদেশি নেতাদের সঙ্গে অনলাইনে মিটিং করেছেন। করোনার শূন্য নীতির কারণে গত বছর বিদেশি কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে আমন্ত্রণও জানাননি তিনি।
পুতিন ও সি এমন এক সময়ে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন, যখন বেইজিং ও মস্কোর মধ্যে বাণিজ্য, প্রযুক্তি ও সামরিক মহড়ার সমন্বয়ে অংশীদারত্ব আরও জোরদার হচ্ছে। দুই দেশের সহযোগিতা ক্রমবর্ধমানভাবে বৃদ্ধির মাধ্যমে তাঁরা পশ্চিমা বিশ্বব্যবস্থার আধিপত্যে বাগড়া দিতে পারেন। চীন ইতিমধ্যে পশ্চিমা বিশ্বের আধিপত্যকে ‘তথাকথিত জোট ও ছোট চক্র’ বলে উল্লেখ করে।
গত ডিসেম্বরে পুতিনের সঙ্গে ভিডিও কথোপকথনের সময় সি বলেন, তাঁরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমন্বয় ও সহযোগিতা বাড়িয়ে আধিপত্যবাদী কাজ এবং স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা প্রত্যাখ্যান করবেন।
যদিও বিশ্লেষকেরা বলছেন, ইউক্রেনের ওপর ভবিষ্যতে রাশিয়ার যেকোনো পদক্ষেপের ক্ষেত্রে বেইজিং সম্ভবত দ্বিধান্বিত। দেশটি শান্তির আহ্বানই জানাবে। তবে ন্যাটোর প্রতি মস্কোর কড়া বার্তার প্রতি চীন ইতিমধ্যে ‘সমর্থন’ জানিয়েছে।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ ফেব্রুয়ারী ০২, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,