৫ সেকেন্ড রুল (the 5 second rule) বইটি বিশ্বব্যাপী একটি আলোচিত সেলফ ডেভেলপমেন্ট বই।
আপনার কি কখনও এমন হয়েছে যে, আপনি বুঝতে পারছেন আপনি সঠিক পথে নেই? আপনার আরও এ্যাকটিভ হওয়া দরকার? আপনি সময়ের কাজ সময়ে করছেন না?
কখনও কি এমন হয়েছে যে, আপনি প্রতিদিন চিন্তা করছেন যে, কাল থেকে সময়ের কাজ সময়ে করবেন, আর বাজে কাজে সময় নষ্ট করবেন না – কিন্তু তারপরও কিছু হচ্ছে না?
আপনার কি মাঝে মাঝেই নিজের ওপর রাগ হয়? সব বুঝেও কি ঠিক কাজটা করতে পারছে না?
যদি এমন অবস্থায় কখনও পড়ে থাকেন, তবে ৫ সেকেন্ড রুল বইয়ের লেখিকা মেল রবিন্স এর সাথে আপনার এই জায়গাটায় মিল আছে। এবং আপনি চাইলে তাঁর আবিষ্কার করা পদ্ধতি অবলম্বন করে নিজের জীবনের মোড় ঘুরিয়ে ফেলতে পারবেন।
আর সেই পথে আপনাকে একটু সাহায্য করার জন্য আজ আমরা দি ”৫ সেকেন্ড রুল” এর বুক রিভিউ নিয়ে এসেছি।
বইটির ব্যাপ্তি বিশাল। এবং লেখিকা এখানে জীবনের প্রায় প্রতিটি দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। বুক রিভিউটি আমরা যথাসম্ভব ছোট রাখার চেষ্টা করলেও এটি একেবারে ছোট কোনও লেখা নয়। কিন্তু ধৈর্য ধরে বুক রিভিউটি যদি পড়তে পারেন, তবে হয়তো জীবনকে নতুন ভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন, হয়তোবা স্বপ্ন পূরণের আরেকটু কাছাকাছি চলে যাবেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক।
৫ সেকেন্ড রুল আসলে সবার জন্য। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে দ্বিধাদ্বন্দ, সন্দেহ, আত্মবিশ্বাসহীতা, অনিশ্চয়তা, ভয়, দীর্ঘসূত্রিতা – ইত্যাদির সাথে লড়াই করে জেতার একটি অভিনব পন্থা লেখিকা তাঁর বইয়ে তুলে ধরেছেন।
লেখিকা মেল রবিন্স মূলত এই বই এর মাধ্যমে পাঠকদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, প্রোডাক্টিভিটি এর উন্নতি, এবং সময় নষ্ট করা বা ঢিলেমির অভিশাপ থেকে বাঁচাতে চেয়েছেন। এবং বেশ কয়েক বছর ধরে বইটি হাজার হাজার মানুষের জীবনকে ইতিবাচক ভাবে বদলে দিয়েছে।
তবে ৫ সেকেন্ড রুল এর সবচেয়ে দারুন দিক হল, এই পদ্ধতিটি ভয়ঙ্কর রকম সহজ। অনেক সময়ে বিশ্বাসই হতে চায় না, এত সহজে কিভাবে জীবনের এত বড় বড় সমস্যা গুলো সমাধান করা সম্ভব। শুধুমাত্র ৫ থেকে ১ পর্যন্ত গুনেই অনেক বড় বড় সমস্যার সমাধান সম্ভব।
কি বিশ্বাস হচ্ছে না? – না হওয়াটাই স্বাভাবিক। তবে বুক রিভিউটি পড়তে থাকলে আশা করি ব্যাপারটা আপনার কাছে পরিস্কার হয়ে যাবে। তারপর নিজে চর্চা করলেই বুঝতে পারবেন এর কার্যকারিতা।
একজন মানুষ যদি জীবনের ৪০ বছর পার করে দেখতে পান যে, এতদিন ধরে যে কাজ করেছেন, যে সংসারটিকে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন – সেটি চোখের সামনে ধুলোয় মিশে যাচ্ছে – তবে তার কেমন লাগার কথা?
রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় নিজেদের সব টাকা ও সম্পদ বিনিয়োগ করে বিশাল লস হবার পর মেল ও তাঁর স্বামী ঋণের জালে জড়িয়ে পড়েছিলেন। নিজেদের সব টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি আত্মীয়-বন্ধুদের থেকেও ঋণ নিয়েছিলেন।
তাঁর স্বামী যখন প্রতিদিন ভোর বেলা ঘর থেকে টাকার খোঁজে বের হয়ে যেতেন, রবিন্সকে তখন পাওনাদারদের ফোন ও বাসায় এসে ধমক দেয়া সামলাতে হত। এক সাক্ষাৎকারে চোখ মুছতে মুছতে সেই সময়কার অবস্থার বর্ণনা দিয়েছিলেন মেল।
একটা পর্যায়ে তিনি উপলব্ধি করলেন, তিনি আসলে কিছুই করছেন না। জীবন যেমন চলছে, তিনিও তার সাথে গা ভাসিয়ে দিয়ে চলছেন। তাঁর অনেক সময়েই নিজের অবস্থা বদলানোর জন্য বিভিন্ন কাজ করার কথা মনে হত। কিন্তু তিনি শুয়েই থাকতেন, অথবা বসেই থাকতেন – কোনও এ্যাকশন নিতেন না।
এভাবে চলতে চলতেই একটা সময়ে তিনি এই ৫ সেকেন্ড রুল আবিষ্কার করলেন। এবং তখন থেকেই তাঁর জীবন বদলে যেতে শুরু করল। আজ তিনি নিজের ও পরিবারের অবস্থা ঘুরিয়েছেনই, সেইসাথে তাঁর বক্তৃতা ও বই এর মাধ্যমে। সব ঋণ শোধ হয়েও আজ তাঁর ব্যাংক এ্যাকাউন্টে মিলিয়ন ডলারের ব্যালেন্স। ৫০ বছর বয়সী মেল রবিন্স স্বামী ও ৩ সন্তানকে নিয়ে সুখে দিন কাটাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের বোস্টনে। এবং নিয়মিত অন্যদের জীবনকে বদলে দেয়ার জন্য বক্তৃতা ও কোচিং দিয়ে যাচ্ছেন।
এটি আসলে ‘সাহসের কাজটি করে ফেলা’। ভয় সবারই লাগে। ভয়কে জয় করে সঠিক কাজটি করাই আসলে সাহসের পরিচয়।
সাহসের সংজ্ঞা দিতে দিয়ে লেখিকা বলেন : “ভয় পাওয়ার পরও কঠিন কাজটি করার জন্য পদক্ষেপ নেয়াটাই মূলত সাহস। নিজের আইডিয়া শেয়ার করা, সত্যি কথা বলা, অসম্ভব মনে হওয়ার পরও কোনও কাজে হাত দেয়া। এমনকি আরামের ঘুম বাদ দিয়ে সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠতেও সাহস লাগে”
মেল রবিন্স এর মতে, যদি কোনও কাজ করার কথা মনে আসে, তবে সেটা ৫ সেকেন্ড এর মধ্যে শুরু করতে না পারলে, আপনার মস্তিষ্ক আপনাকে সেই কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করবে। মনের মধ্যে নানান রকম অজুহাত তৈরী হয়।
লেখিকা বলেন, “যদি কোনও জরুরী কাজের কথা মনে হয়, যেটা একটু কঠিন, আপনাকে ৫-৪-৩-২-১ গুনে সাথে সাথে কাজটি করার উদ্দেশ্যে জায়গা ছেড়ে নড়তে হবে – না হলে আপনার মস্তিষ্ক বেশিরভাগ সময়েই আপনাকে থামিয়ে দেবে”
উদাহরণ দিতে গিয়ে রবিন্স ব্যায়াম করার কথা বলেছেন, আপনি জানেন আপনার এখন শরীরচর্চা করা দরকার, কিন্তু আপনার মুড নেই। আপনাকে এই অবস্থায় ৫ থেকে ১ পর্যন্ত গুনতে হবে। তারপর সাথেসাথে যে অবস্থায় আছেন, সেই অবস্থা থেকে সরে গিয়ে শরীরচর্চা অথবা জিমের দিকে হাঁটা শুরু করতে হবে। কোনও রকম চিন্তা করা যাবে না। একবার কাজ শুরু করে দিলে মস্তিষ্ক তখন আর আপনাকে থামাতে চাইবে না, বরং কাজটি সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে সাহায্য করতে শুরু করবে।
মানুষের মস্তিষ্কের ডিজাইনই এমন যে, সে মানুষকে কষ্টের হাত থেকে বাঁচাতে চায়। কিন্তু অনেক সময়ে কষ্ট না করলে আরও বড় কষ্টের সম্ভাবনা থাকে।
সাইকোলজির ভাষায় একে বলে “এ্যাসার্ট কন্ট্রোল” – আপনি যখন সামনে থেকে পেছনে গোনা শুরু করবেন – মস্তিষ্ক তখন সেই গোনার কাজে শক্তি নিয়োগ করতে বাধ্য হবে। এবং অজুহাত সৃষ্টি করার সুযোগ পাবে না। আর এই সুযোগে আপনি কাজ শুরু করে দিতে পারবেন, কোনওরকম ভয় বা দ্বিধা ছাড়া।
আমাদের কাজ যেমন আমাদের মনকে ফলো করে, তেমনি কাজকেও মন ফলো করে। মনের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাজ শুরু করে দিলে, তখন তার আর কিছু করার থাকে না। একটা সময়ে সে সেই কাজেই আপনাকে সাহায্য করতে বাধ্য হবে।
আমাদের মস্তিষ্কের যে অংশটি ‘ফোকাস’ এর জন্য দায়ী – তাকে ”প্রিফ্রন্টাল করটেক্স” বলে। আমাদের সচেতন কাজগুলো এই অংশ থেকে নিয়ন্ত্রণ হয়। আপনি যখন বারবার এই ৫ সেকেন্ড রুল ব্যবহার করে কাজ করবেন – তখন ধীরে ধীরে এই অংশটি ৫-৪-৩-২-১ কে একটি কমান্ড হিসেবে ধরে নেবে।
আপনি যখনই কোনও কাজ করার আগে এই ভাবে গুনবেন – তখন সে সেই কাজে পূর্ণ ফোকাস নিয়োগ করবে। – তবে এটার জন্য আপনাকে বেশ কিছুদিন প্রাকটিস করতে হবে।
অন্য অনেক প্রোডাক্টিভিটি মাস্টারের মত রবিন্সও বিশ্বাস করেন, ছোট ছোট এ্যাকশনই এক সময়ে বিরাট সাফল্যের আর অর্জনের দিকে নিয়ে যায়। আপনি যখন ৫ সেকেন্ড রুল, অথবা অন্য কোনও পদ্ধতি ব্যবহার করে নিজের চিন্তার ওপর নিয়ন্ত্রণ আনবেন, তখন দেখবেন অনেক বড় বড় কাজ – যেগুলো এমনি সময়ে অসম্ভব বলে মনে হত – সেগুলো সহজেই শুরু করতে পারছেন।
এই পদ্ধতিতে ছোটছোট এ্যাকশন নিতে নিতে এক সময়ে গিয়ে বড় বড় কাজ করতে নিজেরই ইচ্ছা হবে। মনে হবে আমি তো যে কোনও কিছু করতে পারি।
ছোট ছোট লক্ষ্য পূরণ করার পর এক সময়ে নিজেরই নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস সৃষ্টি হবে যে, আপনি চাইলে অনেক বড় কিছু করতে পারেন। কিছুই আর তখন অসম্ভব মনে হবে না। আপনার সাহস বেড়ে যাবে, মানসিক শক্তি বেড়ে যাবে। প্রতিদিন নিজের লিমিটকে আরও একটু পরীক্ষা করতে ইচ্ছা হবে।
মেল রবিন্স লিখেছেন, “নিজেকে দিয়ে ছোট ছোট এ্যাকশন নেয়াতে নেয়াতে, এর একটা চেইন রিএ্যাকশন সৃষ্টি হবে, আপনার আত্মবিশ্বাস ও প্রোডাক্টিভিটি বাড়তে থাকবে”
তবে এটা একদিন-দুইদিনে হবে না। আপনাকে চেষ্টা করে যেতে হবে, প্রাকটিস করতে হবে। হয়তো অনেক সময়ে ৫-১ গোনার পরও আপনি বিছানা ছেড়ে উঠবেন না, পড়তে বসবেন না, অথবা বাসা থেকে বের হবেন না। কিন্তু তাতে হতাশ হবেন না। এটা একটা নতুন অভ্যাস, আর যে কোনও নতুন অভ্যাস গড়ে উঠতেই সময় লাগে।
যে কোনও কাজের আগেই ৫-১ গুনে শুরু করুন। এভাবে ধীরে ধীরে এই অভ্যাসটি আপানার মাঝে স্থায়ী হয়ে যাবে। ৫-১ গোনার পর আপনি এ্যাকশন না নিয়ে থাকতে পারবেন না।
রবিন্স এর মতে, মোটিভেশন নিয়ে বেশি মাথা ঘামালে ঝামেলা আছে। অনেকেই ভাবেন, সঠিক মোটিভেশন না হলে তারা কাজ শুরু করতে পারবেন না। এটা আসলে একটা মিথ। আসলে কাজ শুরু করাটাই হতে পারে সবচেয়ে বড় মোটিভেশন।
অনেক সময়েই যেসব কাজ করা জরুরী, সেগুলোর জন্য আমাদের আগ্রহ হয় না। অনেকের কাছেই সকালে উঠে ব্যায়াম করা, প্রার্থণা করা, পড়তে বসা – এগুলো কষ্টের কাজ। অনেক মোটিভেশন দিয়েও অনেককে এই কাজ করানো যায় না। কিন্তু তারা জানে এগুলো করা তাদের জন্য জরুরী।
এসব ক্ষেত্রে তারা যদি ৫সেকেন্ড রুল ব্যবহার করে কিছুদিন এই কাজগুলো প্রাকটিস করে, তাহলে এমনিতেই এই কাজগুলো তাদের অভ্যাস হয়ে যাবে। মানে, তাদের আলাদা করে মোটিভেশনের দরকার হবে না। এই অভ্যাসটাই মোটিভেশনের কাজ করবে।
মেল রবিন্স বলেন, “৫ সেকেন্ড রুল চর্চা করলে মানুষ শক্তিশালী হয় এর একটা প্রধান কারণ, এটি আপনাকে এমন একজন মানুষে পরিনত করবে – যে অন্যদের চেয়ে কাজ করায় বেশি আগ্রহী। অতিরিক্ত চিন্তা ভাবনা করে যে এনার্জি নষ্ট হয় – তাকে আপনি সত্যিকার কাজে লাগাতে পারবেন।”
আগে আপনি হয়তো সকালে ঘুম ভাঙার পর আরও কিছুক্ষণ বিছানায় গড়াগড়ি করতেন। কিন্তু ৫ সেকেন্ড রুল অভ্যাস হয়ে যাওয়ার পর ঘুম ভাঙার সাথে সাথে আপনি কাজে নেমে যেতে পারবেন।
চিন্তা ভাবনাকে দ্রুত কাজে পরিনত করাই মূলত মানুষের সাফল্যের সবচেয়ে বড় উপায়। আত্মবিশ্বাস ও সাহস বাড়াতেও কথা বা ভাবনাকে কাজে পরিনত করাটা খুব জরুরী।
মেল রবিন্স বলেন, ৫ সেকেন্ড রুল ব্যবহার করতে হলে আপনাকে ২টি খুব সাধারণ পদক্ষেপ নিতে হবে।
যখনই কোনও প্রয়োজনীয় কাজের কথা মনে পড়বে, বা কোনও প্রয়োজনীয় কাজ করার সময় আসবে – তখন ৫ থেকে এক পর্যন্ত গুনুন, এবং ১ গোনার সাথে সাথে কাজ শুরু করে দিন।
আপনার হয়তো মানুষের সামনে কথা বলার সাহস কম। মিটিং বা এই ধরনের জায়গায় বলার মত জরুরী কথা মাথায় আসলেও আপনি বলতে পারেন না। কারণ, আপনার মনে হয় কথাটা হয়তো আপনি যেভাবে ভাবছেন, সেভাবে সবাই নেবে না। অথবা অন্যদের কথার মাঝে কথা বলার দরকার নেই। – এসবই আসলে মস্তিষ্কের সৃষ্টি করা অজুহাত।
এক্ষেত্রে আপনি কোনও দরকারি কথা মাথায় আসলে ৫ থেকে ১ পর্যন্ত গুণে তারপর কথাটি বলে ফেলুন। ১ গোনার পর সরাসরি এ্যাকশনে চলে যান। সময় নষ্ট করবেন না। দেখবেন আপনার কথা বলতে কোনও সমস্যা হচ্ছে না। আপনার সাহস ও আত্মবিশ্বাস এভাবে প্রতিদিন বাড়তে থাকবে।
আবার ধরুন, আপনার ওজন বেড়ে যাচ্ছে। প্রতিদিন সকালে উঠে ব্যায়াম করা দরকার। কিন্তু সকালে উঠতেই আলস্য লাগে। এক্ষেত্রে ৫ থেকে ১ গোনার সাথে সাথে উঠে পড়ে সোজা এক্সারসাইজ করতে যান। একবার এই অভ্যাস হয়ে গেলে আপনাকে আর আলস্যের কাছে হারতে হবে না। আলস্য দূর করার উপায় হিসেবেও ৫ সেকেন্ড রুল দারুন।
আবার কাজ ফেলে রাখার অভ্যাস বা ঢিলেমি দূর করতেও এটা খুব ভালো কাজে দিতে পারে। এই কাজ ফেলে রাখা বা ঢিলেমি অনেক বড় বড় সম্ভাবনাময় ও প্রতিভাবান মানুষের জীবনকে শেষ করে দিয়েছে।
আপনি হয়তো সময়মত নামাজ পড়তে চাচ্ছেন। কিন্তু আজান দেয়ার পর এখন পড়ি, তখন পড়ি করে প্রতিবারই নামাজ মিস হয়ে যাচ্ছে। আপনি যদি আজান দেয়ার সাথে সাথে, বা নামাজ পড়ার কথা মনে হওয়ার সাথে সাথে ৫ থেকে ১ পর্যন্ত গুনে সাথে সাথে অজু করতে বা নামাজ পড়তে যান – তাহলে আর সময় নষ্ট হবে না।
সময়ের কাজ সময়ে করা, জীবনের যে কোনও ক্ষেত্রে সফল হওয়ার জন্য অপরিহার্য। আর এই অভ্যাস করতে ৫ সেকেন্ড রুল হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ উপায়।
সবচেয়ে ভালো হয় প্রতিদিনের কাজ আগের দিন শিডিউল করে রাখলে। যখনই সেই কাজের সময় আসবে – তখনই ৫-৪-৩-২-১ গুণে কাজ শুরু করে দেবেন।
রবিন্স বলেন, “এমন বহু জরুরী কাজ আছে যেগুলো করতে কখনওই আপনার মন চাইবে না, কিন্তু সেগুলো না করলে জীবনে পিছিয়ে যাবেন। এমনকি জীবনে অসুখীও হতে পারেন। বিশেষ করে এসব কাজেই মস্তিষ্ক বেশি করে অজুহাত সৃষ্টি করে। এমন কোনও কাজ সামনে আসলেই তাকে ৫-১ আক্রমণ করুন। তাহলে আপনার ব্রেন অজুহাতের ওপর ফোকাস না করে কাজে ফোকাস করতে বাধ্য হবে”
লেখিকা এই অভ্যাস রপ্ত করার জন্য প্রথমেই “ওয়েক আপ চ্যালেঞ্জ” চর্চা করতে বলেন। আপনার ঘুম থেকে ওঠার নিয়মিত সময়ের ৩০ মিনিট আগে এ্যালার্ম সেট করুন। এ্যালার্ম শোনার সাথেসাথেই ৫ থেকে ১ গুনুন, এবং ১ গোনার সাথেসাথে বিছানা থেকে উঠে পড়ুন। এক সেকেন্ডও দেরি করবেন না।
এছাড়া, আপনি যখনই নার্ভাস হবেন বা কোনও নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আসবে, ৫ থেকে ১ পর্যন্ত গুনে কোনও ভালো চিন্তা করা শুরু করুন। ভেবে দেখুন, কোন কাজগুলো করতে গেলে আপনার বেশি নার্ভাস লাগে, বা নেগেটিভ চিন্তা মাথায় আসে।
এই কাজগুলোর লিস্ট করে, অপেক্ষাকৃত সহজ কাজগুলো ৫ সেকেন্ড রুল অনুসরণ করে করতে শুরু করুন।
এভাবে চর্চা করতে থাকলে আপনার আত্মবিশ্বাস ও সময়ের কাজ সময়ে করার অভ্যাস খুব ভালো ভাবে রপ্ত হয়ে যাবে। এবং আপনার জীবনের গতিপথও বদলে যেতে পারে।
সূত্র: লড়াকু
তারিখ: নভেম্বর ২৮, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,