Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানার সুফল দুই দিকেই (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: শুভংকর কর্মকার।

বাংলাদেশের পোশাক কারখানা মানেই যেন রানা প্লাজা—২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সাভারে ভবনধসের পর সারা বিশ্বে সে রকম ধারণাই ছড়িয়ে পড়ে। তবে সেখান থেকে এত দিনে বেশ ভালোভাবে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। কর্মপরিবেশ উন্নয়নে সংস্কারকাজের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়ে ওঠায় কাজটি সহজ হয়েছে।

বর্তমানে দেশের পোশাক ও বস্ত্র খাতে দেড় শ পরিবেশবান্ধব কারখানা আছে। বাংলাদেশের অন্য কোনো প্রতিযোগী দেশেই এখন এতগুলো পরিবেশবান্ধব কারখানা নেই। এমনকি পরিবেশবান্ধব কারখানার সংখ্যায়ও বাংলাদেশ এখন সবার ওপরে। শুধু তা-ই নয়, এখন আরও কয়েক শ পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের কাজ এগিয়ে নিচ্ছেন উদ্যোক্তারা।

পোশাক ও বস্ত্র খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের সুফল দেশ ও বিদেশ উভয় দিক থেকেই মিলছে। বিশ্বখ্যাত ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিবেশবান্ধব কারখানায় পোশাক তৈরিতে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। এ কারণে পোশাকের বাড়তি ক্রয়াদেশ ও মূল্য পাওয়ার দর-কষাকষিতে কিছুটা এগিয়ে গেছেন এসব কারখানার উদ্যোক্তারা। অন্যদিকে পরিবেশবান্ধব কারখানায় বিদ্যুৎ ও পানি সাশ্রয় হওয়ায় পরিবেশের ওপর চাপ কম পড়ছে। এর ওপর শ্রমিকেরা কাজের ভালো পরিবেশ পাচ্ছেন। তাতে বহির্বিশ্বে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের ইউএস গ্রিন বিল্ডিং কাউন্সিল (ইউএসজিবিসি) ‘লিড’ নামে কারখানার পরিবেশবান্ধব স্থাপনার সনদ দেয়। লিডের পূর্ণাঙ্গ রূপ হলো লিডারশিপ ইন এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল ডিজাইন। এ সনদ পেতে প্রতিটি প্রকল্পকে ইউএসজিবিসির তত্ত্বাবধানে স্থাপনা নির্মাণের কাজ থেকে শুরু করে উৎপাদন পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে সর্বোচ্চ মান রক্ষা করতে হয়। ভবন নির্মাণ শেষ হলে লিড সনদের জন্য আবেদন করতে হয়। এমনকি পুরোনো ভবন সংস্কার করেও সনদের জন্য আবেদন করা যায়। তবে এ সনদ পাওয়ার ৯টি শর্ত পরিপালনে মোট পয়েন্ট হলো ১১০। এর মধ্যে পয়েন্ট ৮০-এর ওপরে হলে ‘লিড প্লাটিনাম’, ৬০-৭৯ হলে ‘লিড গোল্ড’, ৫০-৫৯ হলে ‘লিড সিলভার’ ও ৪০-৪৯ হলে ‘লিড সার্টিফায়েড’ সনদ মেলে। বাংলাদেশের পরিবেশবান্ধব পোশাক ও বস্ত্র কারখানাগুলো লিড সনদপ্রাপ্ত। শিপইয়ার্ড, জুতা এবং ইলেকট্রনিকস পণ্য খাতেও আছে পরিবেশবান্ধব কারখানা।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দেশে পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপনের উদ্যোগ ছোট আকারে শুরু হলেও ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে। তাতে ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে উঠছে। উদ্যোগটি আরও সম্প্রসারণের মাধ্যমে বাংলাদেশকে পরিবেশবান্ধব পোশাক উৎপাদনের হাব হিসেবে গড়ে তোলার সুযোগ রয়েছে। সে জন্য বড়দের পাশাপাশি ছোট আর মাঝারি উদ্যোক্তারাও যেন পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়ে তুলতে পারেন, সেদিকে নজর দিতে হবে।

শুরুর দিকের কথা

দেশে প্রথম পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপন করেছিলেন অ্যাবা গ্রুপের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুর রহমান মৃধা। ২০১২ সালে পাবনার ঈশ্বরদী ইপিজেডে ভিনটেজ ডেনিম স্টুডিও নামে পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন তিনি। লিড প্লাটিনাম সনদ পাওয়া এই কারখানা পেয়েছিল ৯০ নম্বর। তাঁর আরও চারটি কারখানা লিড গোল্ড সনদ পেয়েছে। অ্যাবা গ্রুপের বর্তমানে কর্মীর সংখ্যা ১২ হাজার ৫০০। বার্ষিক রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৩০ কোটি ডলার, যা দেশীয় মুদ্রায় ২ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা।

সাজ্জাদুর রহমান মৃধার দেখানো পথ ধরেই দেশে একে একে পরিবেশবান্ধব কারখানা স্থাপিত হতে থাকে। এর মধ্যে ৯০ বা তার বেশি নম্বর পাওয়া প্লাটিনাম লিড কারখানাগুলো হচ্ছে প্লামি ফ্যাশনস, রেমি হোল্ডিংস, মিথিলা টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, তারাসিমা অ্যাপারেলস, এ আর জিনস প্রডিউসার, আমান গ্রাফিকস অ্যান্ড ডিজাইন ও কারণী নিট কম্পোজিট। ১১০ নম্বরের মধ্যে ১০০ পেয়েছে এ রকম একটি লিড প্লাটিনাম কারখানাও আছে দেশে।
সুফল দুই দিকেই

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার উত্তর নরসিংহপুরে ২০১৫ সালে প্লামি ফ্যাশনস নামে পরিবেশবান্ধব পোশাক কারখানা গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা ফজলুল হক। ২১ বিঘা জমির ওপর স্থাপিত কারখানাটির ৬২ শতাংশ জায়গা উন্মুক্ত। দুই তলাবিশিষ্ট কারখানার চারপাশ দেয়ালের পরিবর্তে স্বচ্ছ কাচ দিয়ে গড়ে তোলার কারণে পর্যাপ্ত পরিমাণে সূর্যের আলো ভেতরে প্রবেশ করে। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার জন্য ভূগর্ভে নির্মাণ করা হয়েছে একাধিক জলাধার। সেই পানি ব্যবহারের পাশাপাশি বাথরুমে পানি সাশ্রয়ী কল লাগানো হয়েছে। এসব কারণে কারখানাটিতে বিদ্যুৎ ৪০ শতাংশ ও পানি ৪১ শতাংশ সাশ্রয় হয়। এ ছাড়া কার্বন নিঃসরণ ৩৫ শতাংশ কম হয়।

জানতে চাইলে প্লামি ফ্যাশনসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ফজলুল হক বলেন, ‘পরিবেশবান্ধব কারখানার অনেকগুলো ইতিবাচক দিক রয়েছে, যদিও ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠান বাড়তি মূল্য দিচ্ছে না। তবে করোনার আগেও পরিবেশবান্ধব কারখানায় পোশাক তৈরিতে বড় ব্র্যান্ডগুলোর আগ্রহ ছিল। করোনাকালে সেটি আরও বেড়েছে। সে জন্য ক্রয়াদেশ পাওয়ার ক্ষেত্রে আমরা ক্রেতাদের সুনজরে থাকছি। তাতে দর-কষাকষিতে আমরা কিছু সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছি।’

পাঁচ বছর আগে ধামরাইয়ে পরিবেশবান্ধব কারখানা গড়ে তোলেন উদ্যোক্তা শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ। তাঁর কিউট ড্রেস ইন্ডাস্ট্রিজ নামের কারখানাটি লিড প্লাটিনাম সনদপ্রাপ্ত। ১১০-এর মধ্যে পেয়েছে ৮৭ পয়েন্ট। গত বছর প্রতিষ্ঠানটি ৪৫ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।

জানতে চাইলে কিউট ড্রেস ইন্ডাস্ট্রিজের এমডি শেখ এইচ এম মোস্তাফিজ বলেন, ‘মাস শেষে কত মজুরি পেলেন, শ্রমিকের কাছে সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তারপরও ইদানীং আমরা দেখছি, শ্রমিকেরা পরিবেশবান্ধব কারখানার উন্নত কর্মপরিবেশের বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারছেন। তাতে শ্রমিকের চাকরি ছাড়ার হার (মাসিক) ২ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। সেটির সুফল আমরাও পাচ্ছি। এক জায়গায় দীর্ঘদিন কাজ করায় শ্রমিকের উৎপাদনশীলতা ও দক্ষতা বাড়ছে।’

পরিবেশবান্ধব কারখানায় শ্রমিকেরা কেমন আছেন, জানতে চাইলে শ্রমিকনেতা বাবুল আক্তার বলেন, পরিবেশবান্ধব কারখানার কর্মপরিবেশ ভালো। বৈদ্যুতিক, অগ্নি ও ভবনের কাঠামোগত নিরাপত্তার বিষয়গুলো অন্য সাধারণ কারখানার তুলনায় ভালো।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ নভেম্বর ২১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ