Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

অর্থনীতির গেম চেঞ্জার-১১-জীবনকে সহজ করে দিয়েছে – প্রাণের-আমজাদ খান চৌধুরী (২০২১)

Share on Facebook

লেখক: শওকত হোসেন

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য এখন অর্থনীতিতে। ৫০ বছরে বাংলাদেশ নামের কথিত ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ হয়ে উঠেছে চমকেভরা জাদুর বাক্স। সাহায্যনির্ভর বাংলাদেশ এখন বাণিজ্যনির্ভর দেশে পরিণত। তবে যাত্রাপথটা সহজ ছিল না। বড় বড় ঝুঁকি নিয়ে অভিনব পথে এগিয়ে নিয়ে গেছেন আমাদের সাহসী উদ্যোক্তারা। এই সাফল্যের পেছনে আরও যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মধ্যে অর্থনীতিবিদ যেমন ছিলেন, আছেন নীতিনির্ধারকেরাও। মূলত অর্থনীতির এসব অগ্রনায়ক, পথরচয়িতা ও স্বপ্নদ্রষ্টারাই ৫০ বছরে বিশ্বে বাংলাদেশকে বসিয়েছেন মর্যাদার আসনে।
আমরা বেছে নিয়েছি সেই নায়কদের মধ্যে ৫০ জনকে। আমাদের কাছে তাঁরাই অর্থনীতির ‘গেম চেঞ্জার’।

বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যবসার আকার জানাতে একটা অনীহা আছে। তবে আহসান খান চৌধুরী জানান, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রাণ-আরএফএলের

ভারী শিল্প নয়, দামি পণ্যও নয়। ছোট ছোট পণ্য, মূলত গৃহস্থালি পণ্য। প্রয়োজন বেশি রান্নাঘরে, কিংবা ঘরেরই অন্য কোনো কাজে। বেশির ভাগই প্লাস্টিক সামগ্রী। আগে এসব পণ্যের একচেটিয়া দখল ছিল চীনাদের। প্রতিবছর চীন থেকেই আসত এসব পণ্য। সেই বাজারটি এখন দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশেরই একটি শিল্প গ্রুপ। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য নেই, দেশে এমন একটি ঘর খুঁজে পাওয়া মুশকিল। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ দেশের মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করে দিয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের পথিকৃৎ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

আমজাদ খান চৌধুরীর হাত ধরে

প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা মেজর জেনারেল (অব.) আমজাদ খান চৌধুরী। ৭৬ বছর বয়সে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই তিনি মারা যান। ১৯৩৯ সালের ১০ নভেম্বর নাটোরে বাংলাদেশে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাত শিল্পের পথিকৃৎ হিসেবে পরিচিত আমজাদ খান চৌধুরীর জন্ম। ঢাকার নবকুমার ইনস্টিটিউটে আমজাদ খান চৌধুরীর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। ১৯৫৬ সালে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। পরবর্তীকালে অস্ট্রেলিয়ান স্টাফ কলেজ থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। আমজাদ খান চৌধুরী ১৯৮১ সালে মেজর জেনারেল হিসেবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

আমজাদ খান চৌধুরী মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসসি), ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশ ডেইরি অ্যাসোসিয়েশনসহ বিভিন্ন সংগঠনের সভাপতি, পরিচালকসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। আমজাদ খান চৌধুরী ১৯৮১ সালে ৪২ বছর বয়সে অবসর নিয়ে ওই বছরই শুরু করেছিলেন ফাউন্ড্রি বা টিউবওয়েল তৈরি ও আবাসন ব্যবসা। সম্বল পেনশনের টাকা। তবে আবাসন ব্যবসা তিনি বেশি দিন করেননি।

আবাসন ব্যবসা বাদ দিয়ে ফাউন্ড্রির ব্যবসায় নজর বেশি দেন আমজাদ খান চৌধুরী। রংপুরে ফাউন্ড্রি প্রতিষ্ঠা করেন, নাম দেন রংপুর ফাউন্ড্রি লিমিটেড (আরএফএল)। যার আওতায় এখন বহু ধরনের পণ্য রয়েছে। তবে আমজাদ খান চৌধুরীর লক্ষ্য ছিল কৃষির ব্যবসায় নামা। ১৯৮৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হলো অ্যাগ্রিকালচারাল মার্কেটিং কোম্পানি লিমিডেট, প্রাণ। প্রতিষ্ঠানটি নরসিংদীতে জমি ইজারা নিয়ে শুরুতে প্রাণ রজনীগন্ধা ফুল, পেঁপে, কলা ও আনারস উৎপাদন করত। ঢাকায় এনে কারওয়ান বাজারে বিক্রি করত। দেখা গেল, মৌসুমের সময় দাম পাওয়া যায় না। তখন আমজাদ খানের মাথায় কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণের চিন্তা এল। ঘোড়াশালে তিনি কারখানা করলেন। শুরু হলো আনারস প্রক্রিয়াকরণের কারখানা।

তখনকার বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংকের (বিএসবি) ঋণ নিয়ে প্রতিষ্ঠা করা একটি রুগ্‌ণ কারখানা ছিল। সেটি কিনে নিল প্রাণ। ১৯৯৭ সালে ফ্রান্সে কৌটায় আনারস রপ্তানি করে প্রাণের রপ্তানি শুরু। এরপর আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এখন ১৪১টি দেশে প্রাণ-আরএফএলের পণ্য রপ্তানি হয়।
২২ বছর বয়সে প্রাণে যোগ

বাবা বেঁচে থাকতেই প্রাণে যোগ দিয়েছিলেন আহসান খান চৌধুরী। ২০১৬ সালে প্রাণ-আরএফএলের চেয়ারম্যান হন তিনি। আমজাদ খান চৌধুরীর চার সন্তান। বড় ছেলে আজার খান চৌধুরী যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা করেন। বড় মেয়ে সেরা হক চিকিৎসক, কানাডায় থাকেন। তবে কিছুদিন পরে প্রাণের সান হেলথ কেয়ারের হাল ধরবেন বলে কথা রয়েছে। ছোট মেয়ে উজমা চৌধুরী এখন প্রাণ-আরএফএলের পরিচালক। তিনি আর্থিক দিকটি সামলান।

আহসান খান চৌধুরীর জন্ম ঢাকায়, ১৯৭০ সালে। সেন্ট যোসেফ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ও নটর ডেম কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যান। ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্টবার্গ কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে দেশে ফেরেন। ওই বছরই যোগ দেন প্রাণে। বয়স ছিল ২১ বছর ৯ মাস। শুরুতেই বাবা তাঁকে অর্থ ও বিপণন সামলানোর দায়িত্ব দেন। আমজাদ খান চৌধুরীর মৃত্যুর পর তিনি এখন পুরো প্রাণ সামলান।

প্রথম আলোকেই আহসান খান চৌধুরী শুনিয়েছিলেন প্রতিষ্ঠানে নিজের যোগ দেওয়া থেকে শুরু করে নানা অভিজ্ঞতার কথা। তিনি যেমনটি বলেছিলেন, ‘আমি যোগ দেওয়ার পর পুরো বাংলাদেশ ঘুরেছি। মানুষের সঙ্গে মিশে নতুন নতুন ধারণা তৈরি করেছি। তার সঙ্গে বিদেশ থেকে আনা অভিজ্ঞতা যোগ করে প্রাণকে বিস্তৃত করার দিকে নজর দিলাম। বাবা বলতেন, আমি ব্যবসা এতটা বিস্তৃত করে ফেলছি, যার ব্যবস্থাপনা কঠিন হয়ে যাবে। কিন্তু আমি সব সময় একটু সম্প্রসারণমুখী চিন্তা করি।’

আহসান খান জানান, যুক্তরাজ্যে কোনোভাবেই ক্রেতা ধরতে পারছিলেন না। একসময় বন্ধুর কাছে এক কনটেইনার পণ্য পাঠালেন। তারপর সেখানে গিয়ে গাড়ি ভাড়া করে দোকানে দোকানে পণ্য বিক্রি শুরু করেন। আফ্রিকার দেশ জিবুতিতে যাওয়া আরও রোমাঞ্চকর। জিবুতিতে নেমে ভিসাহীন আহসান অপেক্ষা করছিলেন কখন উড়োজাহাজ ছেড়ে যায়। উড়াল দেওয়ার পর আহসান ইমিগ্রেশন কর্মীদের বললেন, ‘আমি ফ্লাইট মিস করেছি। এখন তোমাদের দেশে দু-এক দিন থাকার ব্যবস্থা করে দাও।’

অনুমতি পেয়ে আহসান খান গেলেন জিবুতির ব্যবসায়ীদের সংগঠনে। সবার নম্বর নিয়ে একের পর এক ফোন করা শুরু করলেন। কেউ কেউ পাত্তা দিল, কেউ দিল না। সুপারশপের মালিক আলগামিলকে রাজি করালেন পণ্য নিতে। সেই আলগামিল গ্রুপ এখনো প্রাণের পণ্য কেনে। এখন আফ্রিকার দেশগুলোতে বছরে ২০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করে প্রাণ। অবশ্য প্রাণের বড় বাজার ভারত, ফিলিপাইন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মালয়েশিয়া। ১৬ বার জাতীয় রপ্তানি ট্রফি পেয়েছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ।

তারা কী তৈরি করে না

বিক্রির পরিমাণ ১৪ হাজার ৪৪১ কোটি টাকা। ব্যবসা এত বিস্তৃত করার কারণ কী, জানতে চাইলে আহসান খান চৌধুরী বলেন, একটা হলো উৎপাদন ও বিপণন ব্যয় কমিয়ে আনা। উৎপাদন বেশি হলে খরচ কম হয়। আরেকটি কারণ হলো, বড় না হলে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন হয়।

এত বড় হওয়ার কৌশল কী? আহসান খানের জবাব ছিল, ‘আমরা দেশজুড়ে একটি নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি। বিপুল কর্মী নিয়োগ দিয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম, রোবট দিয়ে কাজ করলে মানুষের উপকার কী? কর্মীরাই কোম্পানিকে এগিয়ে নিয়েছেন। বাড়তি বিক্রির ভাগও প্রণোদনা হিসেবে তাঁদের দেওয়া হয়।’

প্রশ্ন হচ্ছে, প্রাণ-আরএফএল আসলে কী কী পণ্য তৈরি করে। প্রশ্ন আসলে এটাও নয়। বাজারে একটি প্রচলিত কথা আছে যে তারা কী তৈরি করে না। মোটাদাগে ১০টি শ্রেণিতে প্রাণ ৮০০টির বেশি পণ্য তৈরি করে। আর আরএফএল ১৫টি শ্রেণিতে প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার পণ্য তৈরি করে। খাদ্য ও পানীয়, পোশাক, প্লাস্টিক, ইলেকট্রনিকস, আসবাব, সাইকেল, যন্ত্রাংশ ইত্যাদি বহু ধরনের খাতে তাদের ব্যবসা রয়েছে। দেশের ১৩টি স্থানে ২৩টি কারখানা রয়েছে প্রাণ-আরএফএলের। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক। প্রতিষ্ঠানটি প্রায় সাড়ে তিন হাজার নিজস্ব ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে পণ্য পরিবহন করে। এর বাইরে প্রতি মাসে গড়ে ৬০০টি ট্রাক ভাড়া করা হয়। অর্থাৎ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের উৎপাদন মানেই রীতিমতো বিরাট আয়োজন।

সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ নভেম্বর ২০, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ