ভারতের উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে নেতিবাচক একটি বিষয়ের অবতারণা করে ‘আব্বাজান’ ও বাংলাদেশের নাম তুলেছেন। তাঁর ওই বক্তব্যের সমালোচনা করে বিরোধী নেতারা বলছেন, আগামী বছর অনুষ্ঠেয় রাজ্য বিধানসভার ভোট জিততে এই বিজেপি নেতা ‘ধর্মের কার্ড’ খেলা শুরু করেছেন।
গত রোববার রাজ্যের উত্তর-পূর্বের কুশীনগর জেলায় নির্বাচনী প্রচারে যান মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এই জেলার একদিকে নেপাল, অন্যদিকে বিহারের গোপালগঞ্জ। সেখানে ১২০ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করার পর এক নির্বাচনী জনসভায় বক্তব্য দেন তিনি। জনতার উদ্দেশে যোগী আদিত্যনাথ প্রশ্ন করেন, ২০১৭ সালের আগে জেলায় রেশন বিলি হতো কি? জনতা পেত কি? সমবেত অনুসারীদের হর্ষধ্বনির মাঝে তিনি নিজেই জবাব দেন, সব ‘আব্বাজানেরা’ খেয়ে নিত। কুশীনগরের রেশন চলে যেত নেপাল ও বাংলাদেশে।
অযোধ্যার রামমন্দির নির্মাণ প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানতে চান, যারা (সমাজবাদী পার্টি) করসেবকদের ওপর গুলি চালিয়েছিল, তারা কি মন্দির তৈরি করত? মুখ্যমন্ত্রী তাঁর ভাষণে তালেবান প্রসঙ্গও টেনে আনেন। স্পষ্টতই বক্তব্যে সমাজবাদী পার্টির শাসন ও রাজ্যের মুসলমান সম্প্রদায়কে নিশানা করেন তিনি।
জনতার জন্য বরাদ্দ রেশন নেপাল ও বাংলাদেশে চলে যেত বলে দাবি করলেও কীভাবে তা করা হতো, সে বিষয়ে কিছু বলেননি বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথ।
এর আগে ভারতীয় নির্বাচনের প্রচারে বাংলাদেশিদের ‘অনুপ্রবেশের’ কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন বিজেপি নেতা ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বাংলাদেশি ‘অনুপ্রবেশকারীদের’ তিনি ‘ঘুসপেটিয়া’ ও ‘উইপোকা’ বলেছিলেন। আসাম ও পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে ‘অনুপ্রবেশকারীদের ঘাড় ধাক্কা দিয়ে ফেরত পাঠানোর’ ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাঁর ওই বক্তব্যের জের ধরে বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ধর্মীয় মেরুকরণের অপচেষ্টার অভিযোগ তুলেছিল বিরোধীরা। এ নিয়ে বাংলাদেশেও সমালোচনা হয়েছিল। এবার উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী আরও একবার বাংলাদেশকে টেনে বিতর্কের জন্ম দিলেন।
বিরোধীরা ওই ভাষণ ও মেরুকরণের রাজনীতির তীব্র নিন্দা করেছেন। কংগ্রেস ও সমাজবাদী পার্টি নেতারা বলেছেন, ধর্মীয় মেরুকরণ ছাড়া বিজেপির অন্য কোনো উপায় নেই। কংগ্রেস নেতা পবন খেরা সোমবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ২০১৩ সালে মুজফফরনগরে দাঙ্গা ঘটিয়ে বিজেপি লোকসভা ভোটে জিতেছিল। ২০১৭ সালের বিধানসভা ভোটেও তাদের সহায় হয়েছিল ধর্মীয় মেরুকরণ। এবারও তারা সেই ধারায় এগোতে চাইছে। সমাজবাদী পার্টির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের মন্তব্য, হিন্দু–মুসলমানে ভাগাভাগি বিজেপির পুরোনো অস্ত্র। বারবার একই অস্ত্রের প্রয়োগ করা যায় না।
সূত্রঃ প্রথম আলো।
তারিখঃ সেপ্টম্বর ১৪, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,