বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের জানাজার সময় কফিনে তার লাশ ছিল না বলে দাবি করেছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেছেন, হাজার হাজার মানুষ জানাজা পড়া এবং কফিনে জিয়াউর রহমানের লাশ থাকা না থাকা, এটা কি এক কথা? মানুষ তো নিহত প্রেসিডেন্টের জন্যে জানাজা পড়তে এসেছিলো। সেই কফিনে যে প্রেসিডেন্ট নেই, এটা তো আর মানুষ জানতো না।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সিনেট ভবনের অ্যালামনাই ফ্লোরে ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড’ শীর্ষক এক সেমিনারে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন এই সেমিনারের আয়োজন করে।
অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ.কে. আজাদের সভাপতিত্বে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি স্টাডিজের অধ্যাপক ড. খোন্দকার মোকাদ্দেম হোসেন ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক এ. কে. এম. আফজালুর রহমান বাবুর সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবু মো. দেলোয়ার হোসেন। এর উপর আলোচনা করেন ঢাবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম চৌধুরী ও মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার। স্বাগত বক্তব্য দেন অ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোল্লা মোহাম্মাদ আবু কাওছার।
সেমিনারে ওবায়দুল কাদের বলেন, পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল জিয়াউল হক বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হলে ইসলামাবাদে ফয়সাল মসজিদের সামনে জিয়াউর রহমানের জানাজার চেয়ে বেশি মানুষ হয়েছিল। কিন্তু ওই কফিনে জিয়াউল হক ছিলেন না, এই কফিনে জিয়াউর রহমানও ছিলেন না। এটাই সত্য।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডকে ‘ডক্ট্রিন অব নেসেসিটি’র কথা বলে রাষ্ট্রীয় বৈধতা দেওয়ার অপচেষ্টা করা হয়েছে। হত্যাকারীকে পুরস্কৃত করা, পুনর্বাসন, আইনি বৈধতা দেওয়া- এই কাজগুলো কে করেছে? জেনারেল জিয়া। রিপোর্ট করতে যাওয়ার পর তিনি মেজর ডালিমকে বলেছিলেন, ‘ওয়েল ডান মেজর ডালিম, ইউ হ্যাভ ডান আ গ্রেট জব।’ লরেন্স লিফশুলজ, অ্যান্থনি মাসকারেনহাসের বইয়ে এগুলোর বর্ণনা আছে সবিস্তারে। আত্মস্বীকৃত খুনিদের বক্তব্য আছে, প্রতিক্রিয়া আছে। বঙ্গবন্ধু হত্যায় বিদেশি ষড়যন্ত্রের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। এরকম ষড়যন্ত্র এখনও চলছে উল্লেখ করে এর মোকাবেলায় জনগণের সহযোগিতা চান ওবায়দুল কাদের।
ঢাবি উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর মতাদর্শ বাংলাদেশ ও বাঙালির মডেল। ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা, সাথে সাথে অন্য ধর্মমতকে বিকশিত করা এবং সকল ধর্মের প্রতি একটি সুন্দর দৃষ্টিভঙ্গি রেখে মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো- এটি বঙ্গবন্ধুর নিজস্ব এক মডেল। বর্তমান বাংলাদেশ তার মডেলের ওপর নির্ভর করে চলছে। আজকে যতই আমরা বঙ্গবন্ধুর চর্চা করছি, বিশ্বে ততই তার গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে।
সভাপতির বক্তব্যে একে আজাদ বলেন, আজকের সেমিনারে অনেক নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে এসেছে, সেটা আগে আমাদের কাছে স্পষ্ট ছিল না। বিশেষ করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের যে প্রত্যক্ষ ভূমিকা ছিল সেটি কিন্তু এত স্পষ্ট ছিল না, সেটি আস্তে আস্তে জনসম্মুখে বেরিয়ে আসছে। আমি মনে করি, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য এবং বর্তমানেও যে ষড়যন্ত্র চলছে এর তদন্ত করতে রাষ্ট্রীয়ভাবে একটি কমিশন গঠন করা উচিত।
সূত্র: সমকাল।
তারিখ: আগষ্ট ২৮, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,