৯ জুন, ২০১৯। সাংসদ হিসেবে শপথ নিয়েছিলাম আমি। একজন রাজনীতিবিদের গোটা জীবনের স্বপ্ন থাকে সংসদে যাওয়ার, সেখানে ভূমিকা রাখার। যখন প্রথম নিশ্চিত হলাম সংসদ সদস্য হতে যাচ্ছি, তখন নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পাশাপাশি আরেকটি যে অনুভূতি কাজ করেছে তা হলো তীব্র ভয়। কারণ, মাত্র একটি সংরক্ষিত নারী আসনের জন্য আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হলো, আমি কি পারব নতুন সাংসদ হিসেবে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে?
আমার ভয়ের আরও একটি কারণ ছিল কিংবা বলা যায় এই কারণটিই প্রধান। যেটির সঙ্গে জড়িত আমার পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড। বাবা অলি আহাদকে রাজনীতিবিদ হিসেবে যেমন দেখেছি, তাতে মনে হয়েছে শুধু সততা, আন্তরিকতা আর কর্মনিষ্ঠাই উঁচু মাপের রাজনীতিবিদ তৈরি করে না বরং সেই মানুষের নানা বিষয়ের জ্ঞান এবং প্রজ্ঞাও খুবই জরুরি। সংসদ সদস্য হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পরপরই আমি ভয় পেয়েছিলাম এটা ভেবে, আমি কি আসলেই পারব একজন সত্যিকারের পার্লামেন্টেরিয়ানের জ্ঞান-প্রজ্ঞার যে মানদণ্ড আছে, সেটা ছুঁতে? অন্ততপক্ষে একজন সাংসদের নানা তথ্য–উপাত্তনির্ভর যে বক্তব্য সংসদকে প্রাণবন্ত এবং একই সঙ্গে সমৃদ্ধ করার জন্য অপরিহার্য, সেটি কি যথাযথভাবে তুলে ধরতে পারব? বিশেষত, যখন সংসদটি হয় একদলীয় এবং দীর্ঘদিনের অনভ্যস্ততাজনিত কারণে একেবারেই জবাবদিহিবিহীন। লক্ষ করলাম বহুদিন সংসদে কোনো বিরোধী দল না থাকায় একধরনের আরামদায়ক আলস্য সর্বত্র। এই আলস্য দুই বছরে খুব যে পরিবর্তিত হয়েছে তা না, তবে কিছুটা হলেও পরিবর্তন নিশ্চিতভাবেই এসেছে।
বাজেট অধিবেশনের আলোচনায় সবই আছে বাজেট ছাড়া
শপথ নেওয়ার চার দিনের মাথায় আমি সংসদ অধিবেশনে যোগ দিই এবং সৌভাগ্য কিংবা দুর্ভাগ্যক্রমে আমার প্রথম অধিবেশনটিই ছিল বাজেট অধিবেশন। সংসদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং জটিল সেশন। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে বাজেটের একেবারে প্রাথমিক কিছু ধারণা ছিল আমার। অর্থনীতিবিদ হওয়া দূরেই থাক, এমনকি পাঠ্য বিষয় হিসেবেও অর্থনীতি কোনো দিন পড়িনি। তাই বাজেট এবং এর সঙ্গে যুক্ত অর্থনীতির গভীর বিষয়গুলো আমার কাছে একেবারেই নতুন ছিল।
জীবনে প্রথমবারের মতো সংসদের প্রথম অধিবেশন পার করেই আমি বুঝতে পারলাম সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ভীষণ কঠিন আবার একই সঙ্গে ভীষণ সহজও বটে। আমি জানতাম বাজেট অধিবেশনেই আমি প্রথমবার সংসদে যাচ্ছি। তাই শপথের আগে থেকেই বাজেট এবং এর সঙ্গে প্রাসঙ্গিক অত্যাবশ্যকীয় অর্থনীতি বিষয়টা বোঝার চেষ্টা শুরু করি।
‘বাজেটে দাম কমবে/দাম বাড়বে’ বাজেট প্রস্তাবের সঙ্গে সঙ্গে এমন রিপোর্ট প্রতিটি সংবাদমাধ্যমে আসে; যেহেতু সাধারণ মানুষের জীবনে এর সরাসরি প্রভাব আছে, তাই তাঁরা মূলত এই বিষয়টি জানার জন্য অধীর থাকেন। কিন্তু নিজে যখন বাজেট তলিয়ে দেখতে গিয়েছি, আমি বুঝেছি বাজেট আসলে একটা রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক দর্শন।
বাংলাদেশের মতো একটা রাষ্ট্র যখন তার রাজস্বের ক্ষেত্রে ধনীদের কাছ থেকে আয়কর নেওয়ার দিকে মনোযোগী না থেকে দুই-তৃতীয়াংশের বেশি পরোক্ষ কর (ভ্যাট, আমদানি শুল্ক, সম্পূরক শুল্ক ইত্যাদি) আমজনতা থেকে তুলে সেটা বেশির ভাগ মানুষের জন্য ব্যয় না করে ১ শতাংশ মানুষকে মাথায় রেখে ব্যয় করে ও আর্থিক নীতি ঠিক করে, তখন বুঝতে হবে সেই রাষ্ট্র আর যা–ই হোক সাধারণ মানুষের নয়। সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজ করে এমন কল্যাণ খাতে বাংলাদেশ যখন (স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক সুরক্ষা) জিডিপির অতি তুচ্ছ অনুপাত বরাদ্দ করে এই ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়ায় একেবারে তলানিতে থাকে, তখন এটা বোঝা যায়, এই রাষ্ট্রের বর্তমান সরকারের অর্থনৈতিক দর্শনে আর যা–ই হোক সাধারণ জনগণ নেই।
বাজেটের বেসিক বুঝতে পেরে আমি একের পর এক প্রমাণ পেয়েছি বর্তমান সরকারের বাজেট পরিকল্পনায় আদৌ সাধারণ জনগণ নেই। একটা ছোট উদাহরণ দিই। গত অর্থবছরে স্বাস্থ্য খাতে করোনার মধ্যে প্রণীত বাজেটেও ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের তুলনায় মাত্র ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছিল। তারপরও এই সামান্য বরাদ্দও ব্যয় করতে অপরিসীম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের হার যখন সার্বিক এডিপি বাস্তবায়নের অর্ধেক হয়, তখন প্রশ্ন আসতেই পারে, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় কি সারা বছর খেয়াল করেনি, এখানে এমন একটা অচলাবস্থা চলছে? কী করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়? কথা ছিল তারা সব টাকা খরচ করে আরও অনেক চাইবে, যেটা বরাদ্দ করা হবে সম্পূরক বাজেটে। আর তার পরিপ্রেক্ষিতে এবারকার বাজেটে বরাদ্দ করা হবে কয়েক গুণ।
প্রসঙ্গত, বর্তমান অর্থবছরে ভারতে স্বাস্থ্য বাজেটে বরাদ্দ আগের বছরের তুলনায় ১৩৭ শতাংশ বেড়ে প্রায় আড়াই গুণ হয়েছে। আর আমাদের বেড়েছে মাত্র ৪ শতাংশ। স্বাস্থ্য বাজেটে বরাদ্দ না হওয়া, সামান্য বরাদ্দও খরচ না হওয়ার মাশুল দিচ্ছে এখন এই দেশের জনগণ, হাসপাতালে আইসিইউ পাওয়া দূরেই থাকুক, সারা দেশে অক্সিজেনের অভাবে ছটফট করতে করতে মারা যাচ্ছে মানুষ।
আমি সংসদে নিজে তিনটি বাজেট প্রস্তাবিত এবং পাস হতে দেখেছি। আমি অবাক বিস্ময় নিয়ে লক্ষ করেছি বাজেট আলোচনায় ‘আলোচনা’ আছে অনেক, নেই শুধু বাজেটটাই। বাজেটের খুঁটিনাটি নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা করেন এমন সাংসদ একেবারেই হাতে গোনা। যুক্তি আসতে পারে, প্রায় সব সাংসদ তো আর অর্থনীতিবিদ নন, কিংবা জীবনের কোনো পর্যায়ে অর্থনীতি পড়েননি, তাই তাঁদের পক্ষে বাজেট নিয়ে সিরিয়াস আলোচনা কীভাবে সম্ভব?
সাংসদদের বেসিক ধারণা নিতে হবে সব বিল সম্পর্কেই
আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল, বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (সংশোধন) বিল, বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (সংশোধন) বিল, আয়োডিন অভাবজনিত রোগ প্রতিরোধ বিল, মৎস্য ও মৎস্য পণ্য (পরিদর্শন ও মান নিয়ন্ত্রণ) বিল এই সংসদে আসা কয়েকটি বিলের শিরোনাম। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এসব বিষয়ে কি সব সাংসদের পর্যাপ্ত ধারনা বা জানা–বোঝা আছে? যদি না থেকে থাকে তাহলে তাঁরা কীভাবে এসব বিল নিয়ে বিতর্ক করবেন? কীভাবে তাঁরা এসব বিলের দুর্বলতা খুঁজে বের করে সেটাকে ঠিক করা নিয়ে পরামর্শ দেবেন? তাহলে একটা সংসদীয় ব্যবস্থা কার্যকর হবে কীভাবে? সরকারি দলের কোনো সদস্য ভুলেও কেন কোনো বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নেন না? জনমত যাচাই বা বিলের সংশোধনীতে বক্তব্য দেন না? এর ফলেই বাংলাদেশের সংসদের মোট সময়ের মাত্র ১২ শতাংশ আইন প্রণয়নে ব্যয়িত হয়, যা ভারতে ৩২ শতাংশ আর যুক্তরাজ্যে ৪৮ শতাংশ।
আমরা চাই বা না চাই দিনের শেষে রাষ্ট্রের সব আইন সংসদ থেকেই পাস হতে হবে এবং একই সংসদ সদস্যরাই সব করবেন। তাই আমি মনে করি, যে বিলই সামনে আসুক না কেন, সেটা নিয়ে বেসিক ধারণাটা নিয়ে নেওয়া সংসদ সদস্যদের জন্য অত্যাবশ্যক। সেই বিবেচনায় রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ বাজেট এবং এই সম্পর্কিত অর্থনীতি নিয়ে সাংসদদের বেসিক জ্ঞান না থাকা অপরাধের পর্যায়ে পড়ে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই দেশের সংসদে মূল আলোচনা বাদ দিয়ে যে অনেক সদস্য অপ্রাসঙ্গিক কথা বলা থেকে শুরু করে স্তুতিমূলক স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন, এমনকি গানও গান তার মূল কারণ আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে সাংসদদের ন্যূনতম ধারণা পাওয়ার চেষ্টা না থাকা।
সংসদে ‘সিনিয়র’ মানেই দক্ষ নন
আমি আইনজীবী জীবনের শুরু থেকে দেখেছি বিচারালয়ে কিছু আইনজীবীকে ‘সিনিয়র আইনজীবী’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এঁরা সব শুধু তাঁদের পেশাগত কাজের সময়ের দৈর্ঘ্যের বিচারেই সিনিয়র হননি, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তাঁদের আইনবিদ্যায় ব্যুৎপত্তি। ‘সিনিয়র আইনজীবীগণ’ আদালতের সামনে যখন তাঁদের শুনানি উপস্থাপন করেন, তখন আদালত অনেক সময়ই জুনিয়রদের তুলনায় তাঁদের কিছু বেশি সময় দেন, ধৈর্য সহকারে তাঁদের বক্তব্য শোনেন কিন্তু সেই সময়টা তাঁরা কাজে লাগান আইন এবং বিচারসংশ্লিষ্ট জটিল আলোচনা ব্যাখ্যায়। তাঁদের বক্তব্য পুরো আদালত অঙ্গনকেই সমৃদ্ধ করে।
আমি হতাশ হয়ে দেখি সংসদে সিনিয়র সাংসদ তিনি, যিনি স্রেফ কয়েকবার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদে এই সিনিয়র সদস্যরা নানা বিষয়ে বক্তব্যে বেশি সময় পান, বক্তব্যের শেষে তাঁদের সময় অনেক বেশি বাড়ানো হয়। পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে কথা বলতে চাইলে তাঁদের আবেদন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মঞ্জুর করা হয়। এঁদের মধ্যে হাতে গোনা কিছু সাংসদ সংসদে আইন প্রণয়ন এবং রাষ্ট্রীয় নানা নীতি পর্যালোচনায় সত্যিকার অবদান রাখেন কিন্তু অনেকেই সময় ব্যয় করেন অপ্রয়োজনীয় স্তুতি বা ইতিহাস চর্চায়।
সংসদ নিয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ‘পার্লামেন্ট ওয়াচ’ নামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিয়মিত। সেখানে গুরুত্ব দিয়ে উল্লেখ থাকে কোরাম সংকটে সংসদের কার্যক্রম শুরু হতে কতটা দেরি হলো এবং তাতে কত টাকা ক্ষতি হয়েছে, সেটা। আমি সংসদে এই প্রশ্ন তুলেছি, যে সংসদ অধিবেশন চলার সময় প্রতি মিনিটে প্রায় দুই লাখ টাকা ব্যয় হয়, সেই সংসদে যখন কর্মকাণ্ড চলে, তখনকার ব্যয়ের টাকার পুরোটা কি সদ্ব্যবহার হয়? যেসব কর্মকাণ্ড অনেক সাংসদ করেন, যার সঙ্গে সংসদের কার্যাবলির দূরতম সম্পর্ক নেই, সেটাও কি জনগণের টাকার অপচয় নয়? সেই সময়গুলোর ক্ষতি হিসাব করলে ক্ষতির পরিমাণ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে?
বিদ্যমান সংবিধানের কারণে সরব পার্লামেন্টও আদতে ‘রাবার স্ট্যাম্প’
এই পর্যায়ে প্রশ্ন আসতেই পারে, দেশে যদি সত্যিকার অর্থেই একটি ভাইব্র্যান্ট পার্লামেন্ট থাকে, সাংসদেরা যদি সব বিষয় নিয়ে সারগর্ভ আলোচনা করেন, তাঁরা যদি সব রাষ্ট্রীয় নীতি নিয়ে সরকারকে জবাবদিহির মুখোমুখি করেন, তাহলেও কি চাইলেই তাঁরা সত্যিকার পরিবর্তন ঘটাতে পারবেন? সচেতন পাঠক নিশ্চয়ই জানেন সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের কারণে যেকোনো বিলের ক্ষেত্রে কোনো সদস্য তাঁর দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে তাঁর সংসদ সদস্য পদই চলে যাবে। সংসদে কোনো আইন পাস হবে, তাতে কোন ধারা থাকবে বা থাকবে না, সব শেষ পর্যন্ত ক্ষমতাসীন দলের এবং আরও সংক্ষেপে বললে নির্বাহী প্রধানের ইচ্ছা-অনিচ্ছার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। তাই বর্তমান সাংবিধানিক ব্যবস্থায় সংসদকে ‘রাবার স্ট্যাম্প’ বললে বাড়িয়ে বলা হয় না।
বাংলাদেশের সংবিধান রাষ্ট্রপতিকেও এই ক্ষেত্রে একেবারে ক্ষমতাহীন করে রেখেছে। সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো বিল বা তার কোনো ধারা নিয়ে রাষ্ট্রপতি যদি দ্বিমত করেন, তাহলে তিনি সর্বোচ্চ সেটির সংশোধনীসহ সংসদে পুনর্বিবেচনার জন্য পাঠাতে পারেন। এরপর সংসদ যদি সেটাকে বিবেচনা না করে এবং তাতেও যদি রাষ্ট্রপতির সম্মতি না থাকে, তবে তিনি সেই বিলে স্বাক্ষর নাও করতে পারেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রেও তিনি স্বাক্ষর করেছেন বলে গণ্য করা হবে। এরও ব্যতিক্রম হচ্ছে অর্থবিল (বাজেট)। এই বিলে রাষ্ট্রপতির কোনো রকম মতভিন্নতা থাকলেও অনুচ্ছেদ ৮০ (৩) অনুযায়ী তিনি সেটা সংসদের পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানাতে পারবেন না। কোনো বিল পুনর্বিবেচনার ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির ন্যূনতম যতটুকু করণীয় আছে, সেটুকুও অর্থবিলের (বাজেট) ক্ষেত্রে নেই, আমরা অনেকেই জানি না সেটা।
সংসদকে কার্যকর করে তোলার জন্য সচেতন মানুষ দীর্ঘকাল থেকে ৭০ অনুচ্ছেদ পরিবর্তন করে অনাস্থা আর ট্রেজারি বিল (বাজেট) বাদে আর সব ক্ষেত্রে যে কারও যেকোনো পক্ষে ভোট দিতে পারার নিয়ম করার প্রস্তাব করেন, অনেকটা পাকিস্তানের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬৩. এ (বি) এর আদলে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, অনাস্থা ভোটের আওতার বাইরে রাখলেও ট্রেজারি বিলের (বাজেট) ক্ষেত্রেও দলের বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার নিয়ম থাকা উচিত। এতে বাজেটে জনগণের স্বার্থবিরোধী যেকোনো পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা হলেও ভীত থাকবে ক্ষমতাসীনেরা।
আমি জানি সংবিধান সংশোধন করার সঙ্গে সঙ্গেই বাংলাদেশের সংসদে সরকারের উত্থাপিত বিল বা এর কোনো ধারার বিরুদ্ধে সরকারি দলের কোনো সদস্যের আপত্তি থাকলেও তিনি হয়তো খুব সহজে বিপক্ষে ভোট দিয়ে দেবেন না। কিন্তু পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার পথ তৈরি করার জন্য প্রাথমিক অত্যাবশ্যকীয় পদক্ষেপ, সাংবিধানিক এই পরিবর্তন করাটা জরুরি।
লেখক: রুমিন ফারহানা বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য ও হুইপ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুলাই ১৪, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,