প্রযুক্তির বিপ্লব মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত বদলে দিচ্ছে। সেই সঙ্গে কোভিড-১৯–এর প্রভাবে এই পরিবর্তন আরও কয়েক গুণ গতি পেয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সুযোগ ও সম্ভাবনা কাজে লাগাতে আগামী বিশ্বে তরুণদের নিত্যনতুন দক্ষতা প্রয়োজন হবে। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারলে দক্ষ তরুণেরাই চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের হাতিয়ার হিসেবে কাজ করবেন।
বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও দক্ষতা-প্রস্তুতির প্রভাব নিয়ে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন।
১৫ জুলাই ছিল বিশ্ব যুব দক্ষতা দিবস। এ উপলক্ষে কোভিড–পরবর্তী সময়ে তরুণদের দক্ষতা, উন্নয়ন, সম্ভাবনা ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের প্রস্তুতি নিয়ে গ্রামীণফোন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও দক্ষতা-প্রস্তুতির প্রভাব’ শিরোনামে জিপি এক্সিলারেটর ওয়েবিনার অনুষ্ঠিত হয়।
গ্রামীণফোনের হেড অব কমিউনিকেশনস বা যোগাযোগ বিভাগের প্রধান খায়রুল বাশারের সঞ্চালনায় ওয়েবিনারে বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর, ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিইএবি) সভাপতি শামীম আহসান, গ্রামীণফোনের চিফ ডিজিটাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি অফিসার সোলায়মান আলম, ইউএনডিপি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ইয়ুথ সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন কনসালট্যান্ট সিনফিয়া চং ও ইন্টেলিজেন্স মেশিনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মাদ অলি আহাদ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আলোকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে ইউএনডিপি এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ইয়ুথ সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন কনসালট্যান্ট সিনফিয়া চং বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে। মনের বন্ধুসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান বেশ ভালো করছে। বাংলাদেশের তরুণেরা দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অনেক বেশি মানুষের বসবাস। বাংলাদেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেম চতুর্থ শিল্পবিপ্লব ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে এগিয়ে গেলেই বিশ্বের বুকে মাথা তুলে দাঁড়াবে বাংলাদেশ।
ইন্টেলিজেন্স মেশিনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মাদ অলি আহাদ বলেন, বাংলাদেশের মতো দেশের জন্য চতুর্থ শিল্পবিপ্লব সত্যিই চ্যালেঞ্জের বিষয়। কোনো প্রতিষ্ঠানকে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী করে গড়ে তুলে এগিয়ে নিতে হলে সরকারসহ সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে। বাংলাদেশ এখন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার জন্য সংগ্রাম করছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলোকে এগিয়ে যেতে হবে
বাংলাদেশের মতো দেশে বিদেশি আর্থিক সহায়তা পাওয়া চ্যালেঞ্জ। করোনাকালে সেই ক্ষেত্র আরও বেশি সংকুচিত হয়েছে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব নিয়ে যারা কাজ করবে, তাদের আর্থিক সাহায্য করার জন্য সারা বিশ্বে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আছে। ভেঞ্চার ক্যাপিটাল অ্যান্ড প্রাইভেট ইক্যুইটি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ভিসিপিইএবি) সভাপতি শামীম আহসান বলেন, নতুন নতুন চিন্তা ও পণ্য থাকলে স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো এগিয়ে যাবে। এ দুটি জিনিস থাকলে দেশকে এগিয়ে নিতে পারবে তরুণ প্রজন্ম।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, চতুর্থ শিল্পবিপ্লব দেশের জন্য প্রয়োজনীয়। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে যেতে না পারলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলানো যাবে না। তবে করোনার কারণে সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও ধাক্কা খেয়েছে। এখন সবচেয়ে বেশি নজর দিতে হবে দক্ষ জনবল তৈরির ক্ষেত্রে। দক্ষ জনবল না থাকলে এ সময় মুখ থুবড়ে পড়তে হবে। তাই দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকারসহ সবার উচিত নতুন নতুন পদক্ষেপ নেওয়া।
অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশের অনেক সম্ভাবনা আছে বলে মন্তব্য করেন গ্রামীণফোনের ডিজিটাল ও কৌশল বিভাগের প্রধান সোলায়মান আলম। আলোচনায় তিনি বলেন, ‘দেশকে এগিয়ে নেওয়া বা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হলে তরুণেরা হবে বড় হাতিয়ার। আমরা অনেক ক্ষেত্রে হয়তো সফল হচ্ছি না, কিন্তু চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। গ্রামীণফোন তরুণদের নিয়ে কাজ করছে। স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের অবদান আছে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে অন্যান্য সংস্থার একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুলাই ১৬, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,