Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সুন্দরবন নিয়ে ইউনেসকো (২০২১)

Share on Facebook

বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনের পাশে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ বন্ধ রাখতে হবে। সেখানে আর কোনো ভারী শিল্পকারখানার অনুমোদন দেওয়া যাবে না। ইতিমধ্যে গড়ে ওঠা শিল্পকারখানাগুলোর প্রভাব মূল্যায়ন করতে একটি সমীক্ষা (এসইএ) করতে হবে। এরপর সেখানে কোন ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে ও কোন ধরনের স্থাপনা করা যাবে না, সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

১৬ জুন জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেসকোর ‘রিয়েকটিভ মনিটরিং মিশনের’ এক প্রতিবেদনে এমন সব শর্ত দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এসব শর্ত বাংলাদেশ কতটুকু পালন করল, তার ওপর নির্ভর করবে সুন্দরবনের বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান থাকবে কি না। ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনকে বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মান দেয় ইউনেসকো।

বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে এই রিয়েকটিভ মনিটরিং মিশন সুন্দরবন ঘুরে, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে ও নানা নথি পর্যালোচনা করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এই প্রতিবেদন গত মার্চে বাংলাদেশ সরকারকে দেওয়া হয়। সরকার এর ওপর বিশেষজ্ঞ কমিটির মতামতসহ জবাব দেয়। এরপর ইউনেসকো সেটি মূল্যায়ন করে ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। তবে তারা সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশের ভূমিকাকে ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নিতে পারে বলে প্রতিবেদনে সুপারিশ করেছে।

এ ব্যাপারে জ্বালানি, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ প্রথম আলোকে বলেন, তিনি প্রতিবেদনটি পড়েননি। এটি পড়ার পর প্রতিবেদনটি সম্পর্কে মূল্যায়ন করবেন।

আগামী ১৬ জুলাই চীনে অনুষ্ঠেয় ইউনেসকোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সভায় এই প্রতিবেদন নিয়ে আলোচনা হবে।

ইউনেসকোর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সর্বশেষ ২০১৯-এর সভায় রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছিল। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ বন্ধের জন্যও তারা বলেছিল। এসব তথ্য উল্লেখ করে এই প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে, তাদের বিশেষজ্ঞ কমিটি ২০১৯ সালে যখন বাংলাদেশে আসে, তখন এই দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ চলছে। সুন্দরবনের জন্য নতুন উদ্বেগ হিসেবে বরিশালে আরেকটি বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। এই তিন বিদ্যুৎকেন্দ্র মিলে সুন্দরবনের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ইতিমধ্যে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৬৭ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম ইউনিট ও আগামী বছরের জুনে দ্বিতীয় ইউনিট উৎপাদনে যাবে বলে জানানো হয়েছে।

ওই তথ্য জানিয়ে রামপাল কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ পাওয়ার কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেডের (বিআইএফপিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী আফসার উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্রে এমন সব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে সুন্দরবনের কোনো ক্ষতি না হয়।

জানতে চাইলে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি সুলতানা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘সুন্দরবনের পাশে রামপালসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের ফলে সুন্দরবনের ক্ষতির বিষয়টি আমরা অনেক আগে থেকেই সরকারকে বলে আসছি। এর সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ হাজির করেছি। সরকার আমলে না নিয়ে এই প্রকল্পের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবন রক্ষা করতে না পারলে বাংলাদেশের উপকূল অরক্ষিত হয়ে পড়বে। টেকসই উন্নয়নের পথ থেকে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে।’

ভারী নৌযান চলাচল সীমিত করার পরামর্শ

প্রতিবেদনে মোংলা বন্দরের সম্প্রসারণ এবং সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজসহ ভারী নৌযান চলাচল সীমিত করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচল বেড়ে যাওয়ায় এরই মধ্যে সেখানে শব্দ ও নদীদূষণ বেড়ে গেছে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রসহ ওই এলাকায় স্থাপিত ভারী শিল্পকারখানাগুলো চালু হলে নৌযান চলাচল আরও বেড়ে গিয়ে দূষণও বাড়বে। তাই এখন থেকে শব্দ ও পানিদূষণ নিয়মিতভাবে পর্যবেক্ষণের সুপারিশ করেছে কমিটি।

প্রতিবেদনে সুন্দরবন রক্ষায় বাংলাদেশ সরকারের নানা উদ্যোগের ইতিবাচক ফলাফল দেখা যাচ্ছে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিশ্বের সবচেয়ে বড় ওই শ্বাসমূলীয় বনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে হালনাগাদ তথ্য না পাওয়ায় ডলফিনসহ অন্যান্য প্রাণীর সর্বশেষ অবস্থা নিরূপণ করা যায়নি।

ইউনেসকো থেকে বিশ্ব ঐতিহ্য রক্ষায় শর্ত হিসেবে রামপালসহ সুন্দরবনের পাশে স্থাপিত শিল্পকারখানাগুলোর প্রভাব তদারকির জন্য একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের কথা বলা হয়েছিল। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই কমিটির বেশির ভাগ সদস্য সরকারের বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। এই সদস্যদের পক্ষে নিরপেক্ষভাবে মূল্যায়ন সম্ভব নয় বলে প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়েছে।

জানতে চাইলে সরকারের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইউনেসকোর শর্ত পালনে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। আর আমরা যাঁদের বিশেষজ্ঞ কমিটিতে রেখেছি, তাঁদের নিরপেক্ষ না বলা গেলে ইউনেসকো ঠিক করে দিক কারা নিরপেক্ষ।’ সরকারি সংস্থায় চাকরি করলেও বিশেষজ্ঞরা নিরপেক্ষ থাকতে পারে বলে তাঁর ভাষ্য।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সুন্দরবনের পাশে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকায় (ইসিএ) মোট ১৫৪টি শিল্পকারখানা গড়ে তোলা হয়েছে, যার মধ্যে ২৪টি লাল তালিকাভুক্ত, অর্থাৎ মারাত্মকভাবে পরিবেশদূষণকারী। আর বাকি ১৩০টি কারখানা কমলা বা মাঝারি মাত্রায় দূষণকারী। এ ছাড়া দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে মোট নয়টি বিদ্যুৎ প্রকল্প আছে। এর মধ্যে রামপাল সুন্দরবনের সবচেয়ে কাছে, ইসিএ এলাকার চার কিলোমিটারের মধ্যে।

প্রতিবেদনে পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং বরিশালের তালতলীতে নির্মীয়মাণ বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাশের নদীতে ডলফিনসহ অন্যান্য বন্য প্রাণীর ওপর জরিপ চালানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আর ওই পথ দিয়ে কতটা জাহাজ ও নৌযান যাচ্ছে, বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হলে কতটা বাড়বে, তাতে ওই নদীর প্রাণী ও সুন্দরবনের ওপর কোনো প্রভাব পড়বে কি না, তা মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়েছে।

সুন্দরবনের ভেতরের নদ-নদীগুলোতে যে খননের কাজ চলছে, তা নিয়মিতভাবে তদারকি ও মূল্যায়নের সুপারিশ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, খননের ফলে নদীর ডলফিনসহ অন্য প্রাণীদের ওপর যাতে কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে। উজানে ভারত থেকে মিঠাপানি কমে যাওয়ায় সুন্দরবনে লবণাক্ততা বেড়ে গেছে। এতে দুই প্রজাতির গন্ডার, বুনো মহিষ, বারোশিঙা হরিণসহ মোট ছয় ধরনের প্রাণী গত শতাব্দীতে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। লবণাক্ততা বাড়তে থাকলে সুন্দরী গাছসহ অন্য প্রাণীদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। ফলে উজান থেকে মিঠাপানির প্রবাহ বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।

ইউনেসকোর প্রতিবেদনটি সম্পর্কে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ, বিদ্যুৎ ও বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আনু মুহাম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইউনেসকো থেকে সুন্দরবনের ঝুঁকি সম্পর্কে যেসব কথা বলা হয়েছে, তার সঙ্গে আমি একমত। আর এসব ক্ষতির কথা আমরাও অনেক দিন ধরে বলে আসছি। কিন্তু সরকারের আচরণ ও তৎপরতা দেখে মনে হচ্ছে না সরকার সুন্দরবন রক্ষা করতে চায়। বরং সুন্দরবন ধ্বংসের সব আয়োজনে সরকারি সংস্থাগুলোকে বেশি সক্রিয় দেখা যাচ্ছে।’

লেখক: ইফতেখার মাহমুদ
সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জুন ২৮, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ