Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

তাঁরাও ইতিহাসে মূল্যায়িত হবেন – খেতাব বাতিল প্রসংঙ্গে (২০২১)

Share on Facebook

সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানকে দেওয়া বীর উত্তম খেতাব বাতিল করেছে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা)। জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের খুনিদের দেশত্যাগ ও পদায়নে সহায়তা করেছেন তিনি। জামুকার এই উদ্যোগ নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে।

মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য বীর উত্তম খেতাব পেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। পরে তিনি সামরিক শাসক হয়েছেন ও নির্বাচন করে রাষ্ট্রপতির পদে আসীন হয়েছেন। শাসক হিসেবে তাঁর সফলতা আছে, ব্যর্থতা আছে, সমালোচনাও আছে। একজন শাসককে মূল্যায়ন করতে গেলে সব দিকই বিবেচনা করতে হয়। জিয়াউর রহমানও একইভাবে মূল্যায়িত হবেন। বঙ্গবন্ধুর খুনিদের সঙ্গে তাঁর যোগসাজশের বিষয় বিভিন্ন সময় উল্লেখ করা হলেও এখন এটা এক মীমাংসিত বিষয়, কারণ বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়নি। খুনিদের সাজা হয়েছে। কিন্তু আরও অনেকেই খুনিদের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছেন, শপথ পরিচালনা করেছেন। এঁদের কী হবে এখন? এঁদের উপাধিও কি বাতিল করা হবে?

আজকে যাঁরা বীর উত্তম বা স্বাধীনতা পদক বাতিল করছেন, তাঁরাও ইতিহাসে মূল্যায়িত হবেন। সাময়িকভাবে হয়তো কিছু বদলে দেওয়া যায়। কিন্তু ইতিহাস তার নিজস্ব পথে চলে। ইতিহাসের অনেক চর্বিত এক সত্য হচ্ছে ইতিহাস থেকে কেউ শিক্ষা নেয় না।

জিয়াকে দুইভাবে মূল্যায়ন করা যায়। মুক্তিযোদ্ধা জিয়া। শাসক জিয়া। শাসক হিসেবে তিনি বিতর্কের ঊর্ধ্বে না। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে জিয়া অবিস্মরণীয়। ২৫ মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বর্বরোচিত হামলার পর বিধ্বস্ত, হতচকিত জাতি বেতারে জিয়াউর রহমানের কন্ঠ শুনে ভরসা পেয়েছে। পাল্টা আক্রমণে উদ্বুদ্ধ হয়েছে। জেড ফোর্সের অধিনায়ক ও সেক্টর কমান্ডার হিসেবে জিয়াউর রহমান সাহসী ভূমিকা রেখেছেন। সুযোগ সবার সামনেই আসে। সবাই এই সুযোগ গ্রহণ করতে পারে না। আর যাঁরা সাহস করে বুক চিতিয়ে লড়ে যান, জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসে তাঁরা অমর হয়ে থাকেন। জিয়াউর রহমান এমনই এক অমর যোদ্ধা। এর পুরস্কার হিসেবেই লাভ করেছিলেন বীর উত্তম উপাধি।

মুক্তিযুদ্ধে জিয়ার এই অবদান কি দেশবাসী ভুলে যাবে? সেটা হওয়ার কথা নয়, পদক বাতিল করলে বরং জিয়া সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি হবে। জিয়াকে মরণোত্তর নির্যাতিত ও নিপীড়িত একজন নেতা হিসেবে বিবেচনা করবে মানুষ। তাঁর নেতিবাচক দিকগুলোই বরং মানুষের স্মৃতি থেকে বিস্মৃত হতে শুরু করবে। শক্তিপ্রয়োগ করে, শাসনক্ষমতা ব্যবহার করে সাময়িক বয়ান তৈরি করা হয় বটে, কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে জোর করে কোনো ন্যারেটিভ বা বয়ান তৈরি করা যায় না। ক্ষমতা থেকে প্রস্থানের সঙ্গে সঙ্গে এসব বয়ান হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে।

শাসক জিয়ার সমালোচনা নিশ্চিতভাবেই করা যাবে। তাঁর অনেক ভুলত্রুটি ছিল। শাসক হিসেবে কারও কাছে তিনি সফল, কারও কাছে বিতর্কিত। তিনি মনে করতেন, সরাসরি জনগণের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। রাজনীতি ও অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য গ্রামকে গুরুত্ব দিয়েছিলেন। তৃণমূল থেকে তিনি রাজনীতি শুরু করতে চেয়েছিলেন। গ্রাম সরকার, খাল খনন, গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী গঠন, যুব কমপ্লেক্স তৈরি, নারী মন্ত্রণালয় গঠন, প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বেসরকারি পুঁজির বিকাশসহ নানাভাবে তিনি সাড়া জাগাতে সক্ষম হয়েছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনেক কিছুই তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি।

আবার কর্নেল তাহেরের বিচারে তাঁর ভূমিকাও মানুষের মনে আছে। এই জিয়ার আমলেই স্বাধীনতাবিরোধীরা রাজনীতির সুযোগ পেয়েছিলেন। আবার এই জিয়ার আমলেই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের সূচনা হয়, নতুন করে নিজ পরিচয়ে রাজনীতি শুরু করার সুযোগ পায় আওয়ামী লীগ। এই জিয়াই আবার সংবিধানে বিসমিল্লাহ যুক্ত করেছিলেন। এসব কিছুর জন্যই তাঁকে স্মরণ করা হবে।

জিয়াউর রহমানকে তাই রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করা দরকার। আকর্ষণীয় নতুন নতুন গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি নিয়ে জনগণের কাছে যেতে হবে। নিজেদের অধিক স্বচ্ছ ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে হবে। রাতের ভোট করে ক্ষমতা ধরে রাখা যায় কিন্তু জনসাধারণের মন জয় করা যায় না। জিয়ার উপাধি বাতিল করে, পাকিস্তানপন্থী বলে সাময়িক স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে, কিন্তু আখেরে কোনো লাভই হবে না। উল্টো নিজেদের ভাবমূর্তিই নষ্ট হবে। এমনকি আল-জাজিরার ডকুমেন্টারি থেকেও জনগণের মনোযোগ সরানো যাবে না। দেশে-বিদেশে কোটি কোটি মানুষ এই ডকুমেন্টারিটি দেখেছে। শুধু শুধু অহেতুক বিতর্ক তৈরি না করে ড্যামেজ কন্ট্রোলের উদ্যোগ নেওয়া উচিত। উপাধি বাতিল করে ড্যামেজ কন্ট্রোল তো হবেই না বরং ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।

‘উই রিভল্ট’ বলে জিয়া দেশের ইতিহাসে যে জায়গায় ঠাঁই করে নিয়েছেন, সেখান থেকে নামানো সম্ভব না। চাইলে নিজেরা বরং এর ওপরে উঠতে পারবেন। নিজেদের এ জন্য জনগণের শাসকে পরিণত করতে হবে।

সূত্র: প্রথম আলো
লেখক: ড. মারুফ মল্লিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক।
তারিখ: ফেব্রুয়ারী ১১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ