আগ্রার ফতেহপুর সিক্রিতে বসে সম্রাট আকবরের নবরত্নের এক রত্ন আবুল ফজল আমাদের এই বাংলাকে নিয়ে মহাচিন্তিত হয়ে এর নাম দিয়েছিলেন, ‘বুলঘা খানা’ ঈসা খা নিয়ন্ত্রিত এই বাংলাকে নিয়ন্ত্রিত করতে বারবার ব্যর্থ হচ্ছিলেন বলেই। ‘বুলঘা খানা’ এর অর্থ চির অশান্তির দেশ। ঐতিহাসিক কাল থেকে বাংলাবাসীরা দুই ধরনের অশান্তির জন্ম দিয়ে এসেছে: পরাধীন হলে এরা জোট বেঁধে স্বাধীনতার জন্য লড়াই করে। আবার স্বাধীন হওয়ামাত্রই তারা দুই দলে ভাগ হয়ে নিজেদের পায়ে কুড়াল মারার প্রক্রিয়া শুরু করে।
জীবজগতে এই স্বভাবটি অ্যামিবার মধ্যে আছে । জন্মের পরে অ্যামিবা পরিণত হওয়া মাত্রই তারা নিজেকে দ্বিখণ্ডিত করে। অ্যামিবার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো, এদের দেহে মস্তিষ্ক নামক কোনো পদার্থ নেই। আমাদের ইতিহাস তাই অ্যামিবার মতো পরিণত হওয়ামাত্রই বিভক্ত হওয়ার ইতিহাস, নির্বোধের উত্তেজনার ইতিহাস, ক্ষণিক বিজয় লাভের ইতিহাসের মধ্যে বিভোর থাকে।
স্বাধীনতা লাভের পর ১৯৮২ তে যখন দেশ গনতন্ত্র হারায় তখন রাজনৈতিক দলগুলি এক জোট হয়ে এক স্বৈর শাসকের বিরুদ্ধে একটানা প্রায় ৮ বছর প্রাণ বিসর্জন দেওয়া আন্দোলন করতে থাকে অবশেষে গনতন্ত্র অর্জন করেই সেই স্বৈর শাসককে সাথে নিয়ে তারা মূলতঃ দুই দলে ভাগ হয়ে নিজেদের মধ্যে একটি ক্ষণতন্ত্রের ধারা তৈরী করে ফেলে।
সেই ক্ষণতন্ত্রের ধারা বাহিকতায় নানান দিক দিয়ে এই নির্বাচন ( ২০১৮) আয়োজন ইতিহাসে গুরুত্ব পূর্ণ হয়ে থাকবে- বিশেষ করে নিজ পায়ে কুড়াল মারার ক্ষেত্রে। নিজ পায়ে কুড়াল মারার পরেই বুঝা যায় নিজ পায়ে কুড়াল মারা হয়েছে, আগে এটি বুঝা যায় না যেমন ক্যান্সার ধরা পড়ার আগের মত অবস্থ্যা। প্রশাসন ও পুলিশ বাহিনীর রাজনৈতিক পক্ষপাত যখন প্রকট আকার ধারণ করে আর জনগন দূরে সরে যায় আর তখনই নিজ পায়ে কুড়াল মারা বিষয়টি খুব ধীরে ধীরে ষ্পষ্ট হতে থাকে বা নিদৃষ্ট সময়ে তা ষ্পষ্ট হয়ে যায় ।
তারিখঃ ডিসেম্বর ২৯, ২০১৮
রেটিং করুনঃ ,