একটি ভালো মানের লেখা দরকার, কথাটি লিখে থেমে গেলাম মনে হলো একটি ভালো মানের লেখার যোগ্য মানুষ আমি নই, ভালো লেখা ইতিমধ্যে লেখা হয়ে গিয়েছে, আর যা বাকি আছে তা লেখার জন্যে যুগের তালে তাল মিলিয়ে লেখকগন আসবেন, লিখবেন পাঠক সাগর গড়ে তুলবেন।
কিন্তু আমি একটি পণ করলাম আমার দেখা যত ক্ষুদ্র বস্তু বা দৃশ্য সেই সাথে আমার মাথায় আসা ছোট ছোট ভাব বা ভাবনাগুলি যেগুলি প্রায় সময়ই মাথায় ছোঁয়া দিয়ে মহাকাশে হারিয়ে যায় তাই লিপি বদ্ধ করে রাখব, নিজে পাঠক হব নিজের।
মাথায় ছোট ছোট ভাব এসে যাতে করে পালিয়ে না যেতে পারে তাই মনের মধ্যে একটি মাছ ধরার মত জাল পাতার ব্যবস্থা করতে চাইলাম, কিন্তু একটি ভাবনায় পড়লাম ! জালের ছিদ্রগুলির আকার কেমন হবে ! জালের ছিদ্রগুলি যদি খুব বড় করে দেই তা হলে ছোট ছোট আকারের ভাব বা ভাবনাগুলি কিছুতেই ধরা দিবে না, বড় ছিদ্র দিয়ে তা চলে যাবে, হয় তো হঠাৎ ধরা পড়তে পারে বড় মাছের মত বড় ভাবনা, যে ভাবনার সঠিক একটি রূপ দেওয়ার সাধ্য আমার নেই।
আবার যদি জালের ছিদ্রগুলি যদি খুব ছোট করে দেই তা হলে ছোট ছোট আকারের ভাব বা ভাবনাগুলি শুধু ধরা দিবে, আর বড় মাছের মত বড় ভাবনা যদি চলাচলে জালের দ্বারা বাধা গ্রস্থ্য হয় তখন জাল ছিন্ন ভিন্ন করে পুরা জালকে দুই ভাগে ভাগ করে দিবে তখন সেখান দিয়ে শুধু পানি আর বাতাস চলাচল করবে।
যখন একবার পণ করেছি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ভাবনা নিয়ে লিখে যাব তাই মাথায় একটু ছোট ছোট ছিদ্রের একটি জাল পেতে নিলাম ছোট ছোট ভাব আটকানোর আশায় একদিন ছোট ছোট ভাবনাগুলি বিন্দু বিন্দু করে যদি সিন্ধু হয় !
লেখার জন্য কলম খাতার পাতা পেলাম, লেখার জন্য একটি জায়গাও পেলাম আর মাথার মধ্যে তো জাল পেতে রেখেছি, ভাব বা ভাবনা ধরা দিবে আর তা একটু ঘষা মাজা করে একটু অলংকার যুক্ত করে পাতায় পাতায় লিখে যাব। তবে জানি ক্ষুদ্র ভাবনা নিয়ে যে লেখা সে লেখার কোন পাঠক নেই ! যেন লেখাগুলি বিশাল মরু ভূমিতে একটি বট বৃক্ষ্য।
ভালো মানের যে কোন লেখার কখনও পাঠকের অভাব হয় না কখনও হবে না, তবে আমার ছোট ছোট ভাবনার লেখার পাঠক কেমন করে যোগাব ! আগেই বলেছি আমার লেখাগুলির প্রথম পাঠক আমি হব নিজেই।
আমি তো রবীন্দ্র ঠাকুরের মত দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে লিখতে পারি না –
” আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে —”
আমি নড়বড়ে মনের মানুষ হিসাবে বড় জোড় লিখতে পারি
বছর খানি আগে যে লেখাগুলি লিখেছিলাম
মিলিয়ে দিয়ে অন্তর প্রাণে
তার সবগুলিই কি অলেখা
ভালো কোন কথা বা লেখা নেই কি সেখানে !
কিন্তু ছোট ছোট ভাবনার লেখাগুলি যদি একদিন একটি আবর্জনার পাহাড় গড়ে দেয় তবুও তো মানুষ একদিন জানবেন যে, তিনি ছিলেন একজন আবর্জনা পাহাড়ের লেখক তাই মনে হচ্ছে লেখার সাথে পাঠক জড়িত, পাঠক ছাড়া লেখক জন্মাবে না আর লেখক পাঠক ছাড়া লিখবেন না।
আবর্জনা পাহাড় হোক অথবা ভালো মানের লেখা হোক আমার ধারণা লেখার ভাব, ভাবনা গুলি কল্যানমুখি হয়, ভালো মানের ভাবনা হয় তাই লেখাগুলি ভালো মানের হয়, লেখক লিখে নিজেকে পুড়িয়ে, নিজের সুখে।
তারিখ: মে ০৮, ২০১৫
রেটিং করুনঃ ,