Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শুভ হোক জ্যৈষ্ঠের আগমন।

Share on Facebook

সারা বিশ্বব্যাপী এখন জলবায়ুতে অনেক পরিবর্তন সেখানে আমাদেরও এই ষড় ঋতুর দেশে জলবায়ুতে পরিবর্তন খুব ষ্পষ্ট। তবে ঋতু চক্রের পরিক্রমায় ঋতু পরিবর্তিত হচ্ছে তার আপন গতিতে।

বাংলা মাসের বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই দুই মাস মিলে আমাদের গ্রীষ্মের কাল, সেই হিসাবে আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের এক তারিখ, আর গতকাল ছিল ৩০ শে বৈশাখ অর্থাৎ বাংলা নব-বর্ষের প্রথম মাস বৈশাখ শেষ দিন।

আজ জ্যৈষ্ঠ মাসের এক তারিখ হলেও প্রকৃতি রূপ বলে দিচ্ছে না আজ জ্যৈষ্ঠ দিন যার বড় বৈশিষ্ঠ হলো তাপ দাহের তান্ডব, শরীরে জ্বালা দিয়ে ঘাম ঝরা দিন, খাল বিল, ছোট নদী শুকিয়ে পানি শূণ্য কিন্তু বিশ্বব্যাপী এখন জলবায়ুতে অনেক পরিবর্তনের কারণে সকাল থেকে মনে হচ্ছে আজ জ্যৈষ্ঠ দিনের বদলে আজ আষাঢ় শ্রাবণ দিন।

বেশ কিছু দিন ধরে প্রকৃতির মাঝে বৈশাখের আড়ালে আষাঢ় এসে লুকোচুরি খেলে যাচ্ছে, কখনও মুষুল ধারে বৃষ্টি, কখনও কড়া রোদের মাতামাতি। যেন আসলই আষাঢ় এসেছে রবি ঠাকুরের গানে।

আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে —
আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে ।
এই পুরাতন হৃদয় আমার আজি
পুলকে দুলিয়া উঠিছে আবার বাজি
নূতন মেঘের ঘনিমার পানে চেয়ে
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে
। ” – রবি ঠাকুর।

এই যেখানে থাকার কথা ছিল প্রভাতে সূর্য্য উদয়ের সাথে সাথে আকাশ ঝরানো তাপের দাহ প্রখর আলো জ্বালায় রুদ্র মুখী ধরণী; শুষ্কতায় মাঠ ঘাট ফেটে চৌচির ফসলের শ্যামল ধরনীতে যেন শ্যামলতাহীন রুক্ষ মরুর পরিবেশ, তখনই জৈ যেন আষাঢ় রূপে আগমন, জ্যৈষ্ঠকে ঠেলে দিয়ে শান্তির বারতা নিয়ে এসেছে আষাঢ় রূপে জ্যৈষ্ঠ সেই সাথে আপাতত বিদায় নিয়েছে ধরণীর তাপ দাহ ও শুষ্কতা। খাল বিল, ছোট নদী পানিতে পূর্ণ, ধূলা-বালি মুক্ত প্রকৃতিতে অনাবিল প্রশান্তি।

সারা বিশ্বব্যাপী জলবায়ুতে অনেক পরিবর্তন আসলেও প্রকৃতির নিয়মে চলে জ্যৈষ্ঠ মাস। জ্যৈষ্ঠ মাস অর্থই মধু মাস। প্রকৃতি যখন খরার কবলে দেহ যখন শুষ্ক তৃষ্ণিত তখন মনে প্রশান্তি মিলাতে নানান রসালো সুস্বাদু ফলের অধিক সরবরাহ আর এই কারণেই এই তীব্র তাপদাহের মাসটি মধুমাস নামেই পরিচিত।

বছরজুড়ে কমবেশি নানান ফল পাওয়া গেলেও সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এ জ্যৈষ্ঠ মাসে। নানান রঙ বাহারি ফলের মৌ মৌ গন্ধে ভরিয়ে তোলে চারপাশ। ষড়ঋতুর এদেশে যখন কড়া রোদে মানুষ তথা প্রাণী কূল জ্যৈষ্ঠে তৃষ্ণার্থ তখন মানুষ পিপাসা মেটায় বিভিন্ন প্রজাতির রসালো ফল দিয়ে।

জ্যৈষ্ঠ দাবদাহের মাঝে তৃষ্ণার্থ প্রাণকে শীতলতার পরশ বুলিয়ে দিতে গ্রীষ্মের ঋতুর শেষ মাস জ্যৈষ্ঠ আমের দেখা মিলে প্রাচার্য নিয়ে যেন প্রিয় ফল আম যেন ফুরাবার নয়, সেই সাথে তরমুজ, বাঙ্গিতে বাগান, উঠান বাজার হাট পরিপূর্ণ সেই তারিকায় যোগ হয় জাতীয় ফল কাঁঠাল, আনারস, লিচু, কালো জাম, আমলকী, আতা, করমচা, জামরুল, বেল, ইত্যাদি ফল। যত ফলই পাওয়া যাক না কেন এই জ্যৈষ্ঠে এক এক ফলের এক রকমের স্বাদ কোনোটা টক, কোনোটা তিতা কোনটা, নোনতা পানসে যাই হোক নাকে তবে রসালো ফলের মধ্যে মিষ্টির আধিক্য বেশি।

তীব্র তাপদাহ যখন মানুষকে ক্লান্তিতে ফেলে দেয় তখন আম, কাঁঠাল, লিচু জাম গাছের পাতায় পাতায় দোল লাগে সেই নানান ফলের দোল খাওয়ার দৃশ্য শরীর মন চাঙ্গা হয়ে উঠে, নিমিষেই দূর হয়ে যায় যত ক্লান্তি।।

জ্যৈষ্ঠ কাঠফাটা রোদে গ্রীষ্মের পদধ্বানি যেন প্রখর তীব্র বেগে ছুটে চলা ঘোড়া। যত খানা না চৈত্রে ও বৈশাখে তাপদাহ তা জ্যৈষ্ঠ সেই তীব্রতাকে আরও বৃদ্ধি করে। সূর্যের প্রখোর তাপে সমস্ত প্রকৃতি ঝিমিয়ে পড়ে। গাছের সবুজ পাতা তাপে ঝিমিয়ে পড়ে জগতের সকল ক্লান্তি যেন তাদের মাঝেও। হঠাৎ ঘূর্ণি বাতাসে ধূলিতে ঢাকা পড়ে ঝকঝকে প্রকৃতি, ঝরে পড়ে গাছের সবুজ পাতা। আকাশে ইচ্ছা মত পাখা মেলে চিল যেন মেঘ বৃষ্টিকে নিমন্তণ জানায়। গাছের পাতায় পাতায় লুকিয়ে থেকে নানান পাখির মনের আনন্দে নিজে রচনায় সুরে গান গেয়ে যায়।

গ্রীষ্মের দুপুর গ্রামজীবনে নিয়ে আসে বিশ্রামের সুযোগ।কেউ কেউ নির্জন দুপুরে দিবানিদ্রায় ঢলে পড়ে।গৃহীনিরা সংসারের কাজের একটু অবসরে বিশ্রামের সুযোগ খোঁজে।তালপাখার বাতাসে একটু প্রাণ জুড়ায়।শীতের পাটিতে ক্লান্ত শরীর এলিয়ে দিতে ইচ্ছে হয়।আমবাগানের দুষ্টু ছেলেদের আনাগোনা হয়তো বেড়ে যায় ।

ক্লান্তি ও শ্রান্তি ঘিরে ধরে কর্মচঞ্চল জীবনপ্রবাহকে।গ্রীষ্মের শান্ত দুপুর মনে করিয়ে দেয় ধরিত্রীর সঙ্গে মানুষের জন্ম-জন্মন্তরের সম্পর্কের কথা।অন্য এক উপলদ্ধির জগতে নিয়ে যায় মানুষকে ।

গ্রীষ্মের দুপুরের প্রখর তাপ প্রকৃতি ও জনজীবনের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করে। এই প্রভাব শুধু বাহিরের নয়, মনের ভিতরের‌ও । রহস্যময় প্রকৃতির এ যেন এক গোপন আয়োজন। গ্রীষ্মের তপ্ত আকাশে এক সময় দেখা যায় সজল–কাজল মেঘ। নেমে আসে স্বস্তির বৃষ্টি। গ্রীষ্মের দুপুরের ঝিমধরা প্রকৃতি আর নিশ্চল স্থবির জনজীবন,শস্যহীন মাঠ,নদীর ঘাটে বাঁকা নৌকা,রোদ ঝলসানো তপ্ত বাতাসের এই পরিচিত দৃশ্যের কথা এ সময় ভুলে যায় মানুষ ।

রবি ঠাকুর তার বিখ্যাত গানে জ্যৈষ্ঠের বর্ণনায় লিখেছেন-

এমনি করে কালো কাজল মেঘ জ্যৈষ্ঠ মাসে আসে ঈশান কোণে।

রবি ঠাকুর তাঁর করুণা গল্পে যে ভাবে জ্যৈষ্ঠের রূপ ফুটিয়ে তুলেছেন

জ্যৈষ্ঠ মাসের মধ্যাহ্ন। রৌদ্র ঝাঁ ঝাঁ করিতেছে। রাশি রাশি ধূলি উড়াইয়া গ্রামের পথ দিয়া মাঝে মাঝে দুই-একটা গোরুর গাড়ি মন্থর গমনে যাইতেছে। দুই-একজন মাত্র পথিক নিভৃত পথে হন্‌ হন্‌ করিয়া চলিয়াছে। স্তব্ধ মধ্যাহ্নে কেবল একটি গ্রাম্য বাঁশির স্বর শুনা যাতেছে, বোধ হয় কোনো রাখাল মাঠে গোরু ছাড়িয়া দিয়া গাছের ছায়ায় বসিয়া বাজাইতেছে।

এই বর্ণনায় কেমন তার রূপ বুঝতে অসুবিধা হয় না।

গ্রীষ্মের শেষ ভাগে যদি কেউ জ্যৈষ্ঠ প্রকৃতির ভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করতে চায় তাহলে আরেকটু নিবিড়ভাবে চোখ রাখতে হয় গাছে গাছে। তখন থেকেই বর্ষার ফুলগুলো ফুটতে শুরু করে। বর্ষার কয়েকটা দিন বাকি থাকতেই ফোটে চালতাফুল, স্পাইডার লিলি, কাঁঠালিচাঁপা, দোলনচাঁপা, মালতিলতা, ঝুমকোলতা, কেয়া, নিশিপদ্ম, জুঁই, সুখদর্শন ইত্যাদি ফুল।

এই তাপদাহের জ্যৈষ্ঠের আবহাওয়া বলে দেয় তপ্ত ধরাকে শীতল করতে প্রাণের বর্ষা আসন্ন আর বর্ষার আগমনে কৃষক জেলে শুরু করে দেয় জীবন গানের সূচনা পর্ব আর প্রস্তুতি নিতে থাকে জ্যৈষ্ঠ বিদায়ের। রোদ- ছায়া এই বৃষ্টি এই রোদ্দুরের এমনি এক মনোরম আবহাওয়ায় জ্যৈষ্ঠকে যেন আমরা পাই একেবারে প্রাণের মধ্য খানে, কোথাও হারিয়ে গিয়ে শান্তি প্রশান্তির মধ্য খানে।

গ্রীষ্ম ঋতুতে জ্যৈষ্ঠ যেমনই হোক আমাদের মানস পটে আঁকা থাক জ্যৈষ্ঠ মাস সেই আমাদের চির চেনা প্রাণের জানা বিশাল নীল আকাশে তীব্র রোদের দাপট, সন্ধ্যা নামলে গুমোট গরমের পাশাপাশি দমকা বাতাসের ছোঁয়ায় একটি মনোরম পরশ। প্রাণের জ্যৈষ্ঠের , শুভ হোক তোমার আগমন এই বাংলায় । শুভ হোক জ্যৈষ্ঠের আগমন আমাদের এই প্রিয় বাংলায়।

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪,সোমবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ