কবিগুরু তার অধিকার কবিতায় লেখা শুরু করেছেন
” অধিকার বেশি কার বনের উপর
সেই তর্কে বেলা হল, বাজিল দুপর। পাথর চুনি পান্না
বকুল পলাশ গোলাপ নানা যুক্তিতে তাদের গুনাগুন তুলে ধরলেন প্রধান্য বজায় রাখতে চাইলেন, কিন্তু শেষ লাইন দুইটিতে রবি ঠাকুর লিখলেন
মাটির ভিতরে তার দখল প্রচুর,
প্রত্যক্ষ প্রমাণে জিত হইল কচুর।
ধরা যায় বনে জংগলে যে কচুকে কখনও গন্য করা হয় না উপযুক্ত যুক্তি দেখিয়ে প্রত্যক্ষ প্রমাণে জিত হইল কচুর। কে কখন কোন যুক্তিতে, জনপ্রিয়তায় উঠে যাবেন তা বলা মুশকিল, বিশেষ করে লেখা-লেখির ক্ষেত্রে, আগে সাধুু ভাষা বা খাঁটি চলতি ভাষায় আবার মিত্রাক্ষর ও অমিত্রাক্ষর ছন্দে বাংলা বর্ণমালায় লিখতেন। আমাদের ইদানিং কালের লেখাগুলি মানে গুনগত না হয়েও কোন সু-নিদৃষ্ট ধারায় না চলে যদি কচুর মত অনেক গভীরতার ছাপও রেখে যায়, দীর্ঘ কালের জন্য পাঠকের দরবারে থেকে যায় তার বা কে নিশ্চয়তা দিবে !
আমি নিজেও সখের বসে লিখি তবে জানা নেই কোন ধারায় লিখি বা কী লিখি, অনেক সময় মনে হয় আমাদের বাংলা ভাষায় লেখার মাটি বেশ উর্বর, প্রতি দিন কিছু কিছু লিখতে ইচ্ছা জাগে আর লিখেও যাই তবে আমার লেখার কোন ধারা নেই, আর এই লেখার অ-ধারা কোন লেখার ধারার জন্ম নিবে এমন ভাবার সময়ও হবে না কখনও। একদিন যখন লেখার হিসাব মিলবে না ঠিক, তখন ঠিক হাতের কলমে কোন লেখাও আসবে না, এটাই হিসাব, হিসাব খুব শক্ত আবেগে চলে না, লেখা অনেক সময় চলে আবেগে। সু-সময়ে অনেক লেখা আসে অ-সময়ে লেখা-লেখি দৌড়ে পালায় কেননা আমরা অনেকেই হিসাব করতে জানি।
সঠিক ঔষুধি চারাটি কী আমার জানা আছে বা চেনা আছে ! নাকি তাকে আগাছা মনে করেছি কিম্বা আগাছাটিকে একটি প্রিয় ফুলের গাছ ভেবে বসে আছি ! অনেক গুলি পাথর নাড়াচাড়া করছি কোনটি রেললাইনের পাশে পড়া থাকা পাথর, কোনটি ইটের টুকরা আর কোনগুলি নীলকান্তমণি, চুনি, নীলা ও পান্না এসব যেদিন চিনতে পাব সঠিক চোখে, সঠিক অভিজ্ঞতায় সেদিন আমার লেখা থেমে যাবে এতে নিশ্চিত, আর সঠিক লেখা লিখতে না পারা পর্যন্ত লিখে যেতে চাই নিত্য দিনের লেখা।
( মনের আনান্দেই আমাদের যত লেখা বলেই তো আমরা আশ্রয়হীন লেখক, দ্রুত হারিয়ে যাওয়ার লেখক, শীতের তীব্র কষ্টে খেঁজুড়ের গাছ যেমন সারা রাত ধরে ফোঁটা ফোঁটা রস বিলিয়ে যায় আমার মত চলার পথের লেখকের পক্ষ্যে যে লেখক হওয়া সে তো বহু দূরের পথ ! তাই যা লেখা সব মনের খেয়ালে লেখা, তবে নিয়মিত লিখে যাওয়াটাই বড় কথা।
২. লিখে লিখে প্রবহমান জীবনের সাথে একটা সমঝোতা করে ফেলা যায়।
৩. “যতদিন মানুষের জানবার আগ্রহ থাকে ততদিন সে জ্ঞাণী,
যে দিন সে ভাবতে শুরু করে সে জ্ঞাণী হয়ে গেছে, মূর্খতা
তখনই তার উপর রাজত্ব করে” )
তারিখঃ ২ অক্টোবর ২০১৫
রেটিং করুনঃ ,