মুঘোলদের সম্রাজ্যে ইংরেজরা বা ব্রিটিশরা হাত দিয়ে ১৯৪৭ সালে বিভক্তির রেখা টেনে দেন। তারপর সীমান্তে প্রহরী। এই বিভক্তি পর ১৯৭১ এ বিভক্তি আরো বৃদ্ধি পেয়ে তিন ভাগে বিভক্ত। সীমান্তে বাংলাদেশের নূতন প্রহরী। অতন্দ্র প্রহরী। এরপর কাঁটা তারের বেড়া।
বাংলা, বিহার, উড়িষ্যার শেষ নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলামকে বিভক্তির রেখায় আর ভাগ করা যায় নি। বসানো যায় নি অতন্দ্র প্রহরী। কাঁটা তারের বেড়া।
সেই মুর্শিদাবাদ, ঢাকা। শান্তি নিকেতন, শিলাইদা। চুরুলিয়া, দরিরামপুর। সবই আমাদের অন্তরে অবিভক্ত। । অভিন্ন। এক। হতে পারে রাষ্ট্রের বিচারে ভিন্ন। অন্তরের বিচারে এক।
আগামী ১১ জ্যৈষ্ঠ আমাদের প্রতি সেকেন্ডের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৩তম জন্মজয়ন্তী।
বিদ্রোহী কবির ১১৩তম জন্মজয়ন্তীতে আমাদের আগাম শ্রদ্ধান্জলি।
“বল বীর —
বল উন্নত মম শির,
শির নেহারি আমারি নত-শির ওই শিখর হিমাদ্রির !
বল বীর —
বল মহাবিশ্বের মহাকাশ ফাড়ি
চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন আরশ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ব-বিধাত্রীর !
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর !
বল বীর —
আমি চির উন্নত শির। “
এবার কবি কাজী নজরুল ইসলামের ১১৩তম জন্মজয়ন্তী উদ্যাপনে যুক্ত হচ্ছে এক নূতন ধারা- দুই প্র্রতিবেশী বাংলাদেশ ও ভারত যৌথভাবে উদ্যাপন করবে দিবসটি। চলছে নানান প্রস্তুতি। কাজী নজরুলের জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে ভারতেরএকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আসবেন ঢাকায়। ঢাকা থেকে দিল্লীতে যাবেন একজন মন্ত্রীও। কথা এমনই। চুড়াস্ত হতে পারে আজ।
জাতীয় কবির জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠানের আগে রবীন্দ্রনাথের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানমালার সমাপনীতে অংশ নিতে ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি এখন ঢাকায়। নজরুলের জন্মজয়ন্তীর যৌথ অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা আজ।
একবার ভারতের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আমন্ত্রন পেয়ে ঢাকা থেকে খিলখিল কাজী ছুটে গেলেন দিল্লী। ভারতের ক্ষমতার মূল কেন্দ্র বিন্দুতে। ভারতের লোকসভা ভবনে। দাদা কাজী নজরুল ইসলামের প্রতিকৃতি উদ্বোধন অনুষ্ঠানে। কোথায় নেই আমাদের কাজী নজরুল ইসলাম !!
স্বাধীনতার পরে শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতা থেকে অসুস্থ কবিকে সপরিবারে নিয়ে আসলেন ঢাকায়। বরাদ্দ হলো বনানীতে ও ধানমন্ডিতে দুটি বাড়ী।
বাংলাদেশের নাগরিকত্ব। জাতীয় কবি হিসেবে ঘোষণা।
কিছুদিন সাবেক পিজি হাসপাতালে।
“তোমাদের পানে চাহিয়া বন্ধু আর আমি জাগিবনা
কোলাহল করি সারা দিনমান
কারো ধ্যান ভাঙ্গিবনা।
নিশ্চল-নিশ্চুপ,
আপনার মনে পুড়িব একাকী
গন্ধবিধুর-ধূপ।””
দেশে তখন সামরিক শাসন। বাংলা ১৩৮৩ সালের ১২ ভাদ্র, অনেকের সাথে জিয়াউর রহমান কবির শেষ আশা পূর্ন করালেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণ।
” মসজিদেরই পাশে আমার কবর দিও ভাই।
যেন গোরে থেকেও মোয়াজ্জিনের আজান শুনতে পাই।।”
তারিখ : মে ২৩, ২০১২
রেটিং করুনঃ ,