বাড়ির ছেলে আলো। যখন জন্মালো তখন সে আলোর মতই ছিলোভ প্রিয় দাদা বড় সখ করে নাম রেখেছিল আলো।
আলো এখন সপ্তম শ্রেনীতে। আলোদের ঘর গুলি খুব ফিটফাট গোছানো। আসবাবপত্র খুবই কম। সব্ই নূতন আর দামি দামি। যা প্রয়োজন। শুধু সেগুলি বাসায়। বাসার সেটাই একটা নিয়ম। বাড়তি কিছুই রাখা হয় ন। আলোর মায়ের নানান ধরণের বই পড়ার সখ। অবশ্য সখ নয় তিনি নিয়মিত বই পড়েন। এছাড়াও বাড়িতে আলোর বাবা ও দাদা থাকেন্।
আলো বাবা চাকুরী করেন, বেশ তাড়াতাড়ি ঘরে ফেরেন। আলোর মা বিকালেই নাস্তা করে রাখতেন। সন্ধায় দাদা, বাবা, মা আর আলো সহ নাস্তা খাওয়া আর নানান গল্প।
আলোর মা আলোর চাওয়ার মুখে একটা সাইকেল কিনে দিতে চেয়েছিল। সবাই মিলে কক্স বাজার বেড়াতেও যেতে রাজি হয়েছিল। আর একটা খেলনা। সব কিছুতে রাজি ছিল আলোর্ আম্মা।
আলো লক্ষ্য করলো, কিছুদিন ধরে আলোর বাবা মা প্রায়ই ডাক্তারের কাছে যান। ঘন ঘন। আলোকে দাদার কাছে যান।
হঠাৎ বেকদিন খুব সকালে সুদূর দিনাজপুর থেকে আলোর বড় খালা, মেঝ খালা, সাথে ছোট খালাও আসলো। আলোতের কলা বাগানের বাসাটায়।
এসেই আলোর গালটাতে একটি টোকা দিয়ে আগের মত বুকে না জড়িয়ে সোজা আলোর মায়ের রুমে চলে গেল।
দায় সাড়া গোছের মত সামান্য কিছু লিচু আর আম এনেছে। এত কম আনাটা আলোর পছন্দও হয়নি। তবে দিদ্ধান্ত নিয়েছে এ বিষয়ে কিছু বলেবে না। খালা মনিদের মন আগের বারের মত প্রফুল্ল নয়।
বাবা- মা, দাদা, খালামণিদের সাথে আলোর দিন কাটছে। কিন্তু একটা ব্যবধান। সবার মধ্যে একটা দূরুত্ব। কম কথা বলা একটি প্রচলন হয়েছে এখন বাসাটায়।
এভাবেই কাটছে দিন। আলো মা ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন। আর কয়েক দিন গেলেই সাইকেল কিনে দেওয়ার কথাটা আলো বলবে তাঁর মাকে।
আলো লক্ষ্য করেছে মা আর আগেন মত বই পড়ে না। নামাজ নিয়ে বেশি ব্যস্ত থকেন। মাঢের ওজন কমেছে। মায়ের মুখের লাবণ্য করেছে। প্রায় বিছানায় শুয়ে শুয়ে আলোকে ডাকে – মা আলো, আলো বাবা, তুমি কি খেয়েছ মা,
ডাক শুনে আলো দ্রুত ছুটে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। মা বলে- খালা মণিকে বল মুরগীর রাণটি তোমাকে দিতে।
আলো শুধু হ্যা বলে।
কখনো কখনো মা বিছানায় শুয়ে শুয়ে আলোকে ডাকে – আলো বাবা, আলো মা তোমার স্কুল ড্রেস আয়রন করা আছে তো
ডাক শুনে আলো দ্রুত ছুটে মায়ের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। মা বলে- কাল যে তোমার স্কুল আছে।
আলো শুধু হ্যা বলে।
আলোর মা সাবিনা সুলতানা আলোকে বুঝাতে চায় মায়ের ভাষায় কে আর তোমাকে খাওয়া বাবা, কাকে এসে মা, তোমার সব কথা বলবে বাবা। কে দেখবে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে তোমার স্কুলের খাতা !!!
আলো হয়তো একদিন জানবে অথবা জানবে না, জীবন শুকনো বালুকণার উপরে কয়েক ফোঁটা পানির স্থায়িত্ব কাল মাত্র। কোন এ শক্তি তরতাজা, প্রফুল্ল জীবনকে যে কোন সময় বালুকণার ভিতরে নিয়ে যাবেই খুব দ্রুত গতিতে। প্রিয় মানুষ, প্রিয় ভালো লাগাকে সব ছেড়ে চলে যেতে হবে শুধুই একা।
তারিখ: এপ্রিল ১০, ২০১৩
রেটিং করুনঃ ,