লেখকও অনেক ধরণের হন যেমন কিছু লেখক আছেন বাবুই পাখীর বাসার মত এই ধরণের লেখকরা বাবুই পাখীর মত নানান জায়গা থেকে খর-কুটার মত নানান তথ উপাত্ত সংগ্রহ করে যেমন নিজের মেধায় লিখে থাকেন, যেমন বাবুই পাখীর লক্ষ্য থাকে ঐ বাসাটি নিরাপদে বসবাসের অনেক লেখকের তেমন আশা থাকে লেখালিখির মধ্য দিয়ে নিরাপদে বসবাস।
কিছু লেখক আছেন বাঁশির মত, সবাইকে বাশির সুর শুনিয়ে মাতিয়ে রাখেন, অনেক লেখক আছেন যারা মাকড়শার মত সম্পূর্ন নিজের দেহের উপকরণ দিয়ে জাল বুনেন অর্থাৎ এই লেখকগন শুধু মাত্র নিজের মেধা দিয়ে লিখে থাকেন, মাকড়শা যেমন জাল বুনেন পোকা মাকড় ধরার আশায়, নিজের খাদ্য নিশ্চিত করার জন্য এই ধরণের লেখকরাও লিখে নিজের জীবনকে নিশ্চিত করতে চান।
আবার অনেক লেখক আছেন খেজুঁর গাছের মত যারা শুধুই লিখে যান কোন প্রাপ্তি আশা না করে, নিজের জীবনকে ক্ষত করে, যেমন তীব্র শীতের মধ্যে নিজের দেহ কেটে সারা রাত ধরে ফোঁটা ফোঁটা রসে ভরিয়ে তোলে রসের হাড়ী আর সকালে যিনি খেজুঁর গাছের মালিক তিনি বেঁচে দেন সেই খেজুঁর গাছের রস, সবই যায় মালিকের পকেটে।
আবার অনেক লেখক আছেন গরুর মতন যারা মালিকের টাকায় ঘাস খৈল খেয়ে মালিককে দুধ দেন। মালিক সে দুধ নিজে পান করেন বা বাজারে বিক্রি করে সংসারে বাড়তি আয় আনেন।
অনেক রকমের উদাহরণ টানা যায় লেখককে নিয়ে তবে লেখার বিনিময়ে যে লেখক কিছুই চান নি, লেখার ক্ষমতাটিকেই শুধু চেয়েছেন লেখার বিনিময়ে। এমন লেখক কোন পর্যায়ে পড়ে তা জানা নেই। তবে তিনি একজন ভালো মানের লেখক।
বেশ তো পাঠকের জন্য যে লেখক লিখে থাকেন তিনি একজন ভালো মানের লেখক নন, তবে পাঠক ছাড়া তিনি লেখক হবেন কী ভাবে !! একজন লেখকের যে লেখা কোন পাঠক কোন দিনেই পড়ল না, সে লেখা তো একটি পাথর খন্ড হওয়ার কথা।
কবি ভার্জিলের কথা যদি বলি, হোমারের কথা যদি বলি, তবে শতকের পর শতক তাদের লেখা পাঠকরা পড়বেন তা কিন্তু তারা ভাবেন নি। তারা লিখেছিলেন তাদের ভাবনায় যা ছিল তাই।
একশত বছর পরে রবীন্দ্রনাথের লেখা যে তাঁর পাঠকরা কৌতহল ভরে পড়বেন এতে তাঁর পূর্ণ বিশ্বাস ছিল।
” আজি হতে শতবর্ষ পরে
কে তুমি পড়িছ বসি আমার কবিতাখানি
কৌতূহলভরে–” – রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
বর্তমানের যে সন্মানিত লেখক তাদেরও লক্ষ্য হোক শত বছর পরেও যেন তাঁদের লেখা তাঁদের পাঠকরা যেন পড়েন !
তারিখ : জুন ১১, ২০১৪
রেটিং করুনঃ ,