একটা ধারণা মাথায় ভর করে বসলো বেশ শক্ত হয়ে, আজ যদি না লিখি তবে কাল আর লিখতে পারব না। যে প্রতিভা আমাকে লেখায় একদিন না লিখলে কী একটা ময়লার চাদরে আমার প্রতিভা ঢেকে যাবে !!
কিছুটা নিশ্চিত হলাম, রবি ঠাকুরের গানে –
“যখন জমবে ধুলা তানপুরাটার তারগুলায়,
কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়, আহা,
ফুলের বাগান ঘন ঘাসের পরবে সজ্জা বনবাসের,
শ্যাওলা এসে ঘিরবে দিঘির ধারগুলায়–“
যেখানে আমার লেখার প্রতিভা আছে সেই তারে যেন ধুলা না জমে, প্রতিভার দুয়ারে কাঁটালতা যেন না জন্মে, প্রতিভার বাগান যেন ঘন ঘাসে ভরে না উঠে, প্রতিভার দিঘিতে যেন শ্যাওলা না জমে। আর এ জন্যই হয়তো মনের মধ্যে ও মাথার মধ্যে ধারণাটা ভর করলো লেখার যে প্রতিভা আমাকে লেখায় একদিন না লিখলে একটা ময়লার চাদরে আমার প্রতিভা ঢেকে যাবে আর লেখা হবে না।
বেশ বুঝি মনের আবেগ দিয়ে, মেধার বিকাশ ঘটিয়ে আমাদের লেখা লেখি। লেখার বিষয়টা প্রতি দিন সকালে হাঁটা, বিকালে এক কাপ চা পানের মত নয়।
আমার অনেকগুলি পর্বত মালায় উঠা হয় নি, কয়লা খনিতে একজন শ্রমিক হয়ে কাজ করে কয়লা খনির ক্জের অভিজ্ঞতা নেই, অনেক সময় নানান অভজ্ঞতা ছাড়া লেখা যায় না, অভিজ্ঞতার সাথে কল্পনার মিশ্রন লাগে।
আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের উপর, ভাষা আন্দোলনের উপর অনেক লেখা, তেমনি মহা প্লাবন, দূর্ভিক্ষ্য, যুদ্ধের ঘনঘটা লেখার উপরণ হিসাবে কাজ করে। একটি মহা প্লাবন, একটি দূর্ভিক্ষ্য, একটি যুদ্ধের পটভূমিকায় কী আর্তনাদ, আহাজারী ভিত্তি হয়ে থাকে আমরা অন্তত কল্পনায় একটা ছবি আঁকতে পারি। একটা সহজ ব্যাখ্যায় বলা যায় লেখার যে উপকরণ তা কোন সহজ বা সুখের বিষয় নয়। কাজের ফাঁকে ফাঁকে রাত জেগে জেগে যে আমার লেখার প্রাণ পণ চেষ্টা, না হোক সে কোন লেখা, হোক সেগুলি আমার অ-লেখা, যতই হয় আমি অ-লেখক এ সবই ত্যাগের উপকরণ, দুঃখের উপকরণ, কষ্টের বিষাদ মাখা হাত !!
সুখের পাখায় ভেসে ভেসে, পাখা মেলে মেলে কত খানি লেখার উপকরণ সংগ্রহ করে কাব্য মহাকাব্য লেখা যায় !! কবি লেখকের তালিকায় বেশি ভাগই কি রাজা- বাদশাহের নাম কী ছিল।
মাথার মধ্যে, মনের মধ্যে ভূমি-কম্পের মত একটা ভারি আর্তনাদ, আহাজারী না রেখে আমার কলমে আর কোন লেখা আসবে !! তাই তো মাথার মধ্যে উঁকি দিয়ে যাচ্ছে – আজ যদি না লিখি তবে কাল আর লিখতে পারব না।
লেখার সন্ধানে বের হয়েছি তবে লেখা আসুক কলমে সব বাঁধা দূরে ঠেলে।
জুলাই ০১, ২০১৩
রেটিং করুনঃ ,