Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

ছায়াতলা।

Share on Facebook

ছায়াতলা। বিশাল এক বাড়ীর রাজকুমারী। তবে যে বাড়ির তিনি রাজকুমারী সেই বাড়ীর মালিক ছায়াতলার দাদু। দাদা-দাদী, বাবা-মা ও ছায়াতলা এই বাড়ি বা এই রাজবাড়ীর বাসিন্দা। বাড়িটি কোন রাজবাড়ি নয়, একটি সাধারণ তবে একটি বিশাল বড় বাড়িতে থাকে, ছায়াতলা ঐ বাড়ীতে একজন রাজকুমারীর ভুমিকায় থাকেন বলেই ছায়াঘেরা বাড়িটি এক ধরণের রাজবাড়ি। বাড়ির দারোয়ান, মালি, ড্রাইভার, কাজের ছেলে, কাজের মেয়ে সকলে জানে ছায়াতলা এ বাড়ীর রাজকুমারী।

ছায়াতলার বাবা সাধারণ চাকুরে, মা ঐ বিশাল বাড়ীটির ছেলের বউ। বাবা চাকুরে নিয়ে ব্যস্ত থাকেন আর মা সংসারের সমস্ত দায়িত্ব পালন করেন, ছায়াতলার দাদা-দাদীর সেবা যত্ব করা স্বামীর সেবা করা এই সব কাজ, ছায়াতলার কোন খবর নেওয়া লাগেনা কেননা সে ঐ বাড়িতে চলেন রাজকুমারীমত। তার দাদাও চলেন ঐ বাড়ীতে রাজার মত। নির্দেশে আর পরিকল্পনায় চলে বাড়ীর চাকা। থামতে বললে সব থেমে যায় আবার বাড়িটির কর্ম-কান্ড চলে দাদা ও নাতনীর সংকেতে। এই বাড়িতে ছায়াতলার বাবা-মা যেন অতিথি।

উজ্বল বর্ণের, বেশ লম্বা, একেবারে ছিপছপে নয়, চেহারায় একটি মেধাবী ছাপ দেখলেই মনে হয় বেশ প্রতিভা নিয়ে চলে, ছায়াতলা নামটি ওর দাদুর দেওয়া, এই নাম নিয়ে এই বাড়ীর সাথে ওর নানুর মধ্যে বেশ মনোমানিল্য ছিল কাল, বহু দিন যায় নি ছায়াতলা মা -বাবা ওর নানি-নানির বাড়িতে।

ওর দাদুর আশা ছায়াতলা সবাইকে ছায়া দিবে যেমন করে রোদে হাঁটা পথিককে বটবৃক্ষ সুশিতল ছায়া দেয়, আশ্রয় দেয়। দাদুর পরিকল্পনা মতেই সে চলে সব কিছুতেই আলোচনা, আর চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত দাদা-নাতনীর, ছায়াতলা ভাস্কর্য শিল্পের উপর লেখাপড়ার সিদ্ধান্তটা দাদা-নাতনীর নিজেদের নেওয়া।

ছায়াতলার ভাস্কর্য শিল্পী হওয়া আর মেয়েকে চোখের সামনে হারিয়ে ফেলা একই কথা – এই কথা ভেবে ভেবে ওর বাবা-মা কেঁদেছে উভয়ে বহুদিন, খাওয়া না খাওয়ার মধ্যে কেটেছেও বহু দিন। বাড়িটিতে বড় ধরণের একনায়কতন্ত্র থাকায় তাঁদের কিছুই বলার ছিল না, ছায়াতলার বাবা ভালো করে জানতো এই বাড়ীর একমাত্র উত্তরাধিকারিনী ছায়াতলাই।

ছায়াতলার দাদু বাড়ির নিচ তলায় একটি রুম বরাদ্ধ করে দিয়েছে যেখানে ইনিস্টিউটের পাশাপাশি ঐ রুমটায় ভাস্কর্য শিল্পের নানান ব্যবহারিক কাজ করে। সে এবার একটি পুরুষ ভাস্কর্য তৈরীর কাজে হাত দিয়েছে, প্রায় নয় মাস ধরে একনাগাড়ে সে কাজ করে পুরুষ ভাস্কর্যে দাঁড় করিয়ে ফেলেছে, শুধু ফিনিসিং দেওয়া বাকি। ছায়াতলা ভাবলো ভাস্কর্যটির একটি নাম দেওয়া দরকার।

বেশ ভেবে নিজে নিজে বলল রৌদ্রছায়া রাখলে কেমন হয় !! নিজের নামের সাথে মিল দেখে সে একটু ভেবে সিদ্ধান্ত নিল যে এই পুরুষ ভাস্কর্যটির নাম রৌদ্রছায়া রাখবে যদিও নামটি মেয়ে মেয়ে ধরণের, তবে এটা একটি পুরুষ ভাস্কর্য আর এটি তাঁর নিজের হাতে গড়া পুরুষ দেহ কাঠামোতে বা পুরুষ ফিগারে। নিজে নিজে বলল- পুরুষ ভাস্কর্যটি আমি গড়েছি, নাম তো আমি দিব, ওর নাম রৌদ্রছায়া। নাম রৌদ্রছায়া হলে ভাস্কর্যটির দেহ কাঠামো তো নারীর মত হবে না। ছায়তলা নিজে নিজে বলল সৃষ্টকর্তা নারীর দেহ কাঠামোটা এমন ভাবে এমন একটি সেফ বা আকৃতি দিয়েছেন যে যা জ্যামিতির যন্ত্রাংশ দিয়ে বা সাহায্য নিয়ে তৈরী করা যায় না যেমন স্কেল, সমকোণী ত্রিভুজ ইত্যাদী, নারী ভাস্কর্যের সেফ দিতে হয় মনের যন্ত্র দিয়ে।

এবার একা ঘরে নিজের দিয়ে তাকিয়ে থেকে ছায়াতলা বেশ জোড়ে জোড়ে হাসল আর বলল এই নারী ফিগারে কত পুরুষ পাগল একে পাগল পারা বলে গুন গুন করে রবীদ্র সংগীতের সুরে গাইলো কয়েকটি লাইন

” ওগো নদী, আপন বেগে
পাগল-পারা,
আমি স্তব্দ চাঁপার তরু
গন্ধভরে তন্দ্রাহারা।।
আমি সদা অচল থাকি,
গভীর চলা গোপন রাখি, ”

শেষের এই লাইনটিতে এসে সে থেমে গেল, আর গানটি থেকে দুইটি লাইন সে কোট করল
” আমি সদা অচল থাকি,
গভীর চলা গোপন রাখি,”

স্থির হয়ে ভাবলো এই লাইন দুটি কি রৌদ্রছায়ার নিজের কথা !! নিজে নিজে বলল রৌদ্রছায়া তো অচল, সে তো অচল থাকে, সে তো চলে না বা কখনই চলবে না। একটি পুরুষ ন্থির ভাস্কর্যে। নিজে নিজে বলল – বাহ, আবার বলল বাহ্ ; রৌদ্র ছায়া কেন তার গভীর চলা আর কেনই বা তার কথা গোপন রাখে !!

ছায়তলার মনে একটি রঙিন অনুভুতি দোলা দিয়ে গেল, নিচেই যেন ময়ূরীর মত নেচে উঠল এক অজানা স্পর্শে, মনে মনে স্থির করল কয়েদিন পরেই দাদুকে সারপ্রাইজ দিয়ে দাদুকে দেখিয়ে দিবে আর বলবে ‘ দেখ তোমার রৌদ্রছায়া ” নিজে নিজে বলল দাদু নিশ্চয় বলবে ” এবার তোর জন্য সত্যিকারের রৌদ্রছায়া নিয়ে আসব। ঘর আলো করে, বাড়ি আলো করে, পাড়া আলো করে – এ জগৎ হবে আলোকিত। ”

কিছু সময় কিছুটা অন্য মনা হয়ে ছায়াতলা কি যেন ভাবলো, বেশ কয়েক বার মাথার ঘনচুলে ঝাঁকি দিয়ে বলল’ আমি তো একজন মেয়ে’ বলে থেমে গেল। ঠিক বুঝা গেল না আমি তো একজন মেয়ে এই কথাটি বলে সে কি বুঝাতে চাইলো।

গ্রীক পুরাণ কাহিনী অনুশারে সাইপ্রাসের স্বর্গীয় আশীর্বাদ প্রাপ্ত তরুণ ভাস্কর পিগম্যালিয়ন অনেক নিখুঁত ও মততা দিয়ে গ্যালাটী নামে একটি পাথরে মূর্তী গড়ার প্রায় শেষের দিকে গ্যালাটী নামের নারী মূর্তিটির প্রেমের পড়ে যান অথচ ভাস্কর পিগম্যালিয়ন ছিলেন নারী-বিদ্বেষী, কিন্তু সে গ্যালাটীকে রক্তে মাংসে গড়া একজন নারী হিসাবে দেখার বাসনা মনে রেখেছিল, গ্রীক পুরাণের প্রমের দেবী আফ্রেদিতি তরুণ ভাস্কর পিগম্যালিয়নের মনের কথাটি জানতে পেরে আইভরি পাথরের গড়া নারী মূর্তি গ্যালাটীকে জীবন দিয়ে দিয়েছিলেন- এই সব কাহিনী গ্রীক পুরাণে লিখা আছে।

গ্রীক এই পুরানের কাহিনীর মত ছায়তলা কি ভেনাসের মত বা আফ্রেদিতির মত কোন দেবীর কাছে প্রার্থনা করতে চেয়েছিল যে রৌদ্রছায় যেন জীবন্ত হয়ে উঠে, তার জীবনের একজন কাংখিত যুবক যাকে সে তিলে তিলে নয় মাস ধরে গড়েছে ! কিম্বা জীবন সংগি হিসাবে পেতে চায় !

সত্যই কি ছায়াতলা রৌদ্রছায়া নাসের পুরুষ মূর্তিটিকে জীবনের সংগি করতে চেয়ে নানান কল্পনা ও মনে বাসনা ধারণ করেছে !! এর সঠিক কোন উত্তর পাওয়া যায় নি ছায়াতলার আচরণে বা কথায়, তবে ধারণা করা যায় যে সে কখনই চায় নি রৌদ্র ছায়া কোন ক্ষমতা বলে জীবনের ছোঁয়া পেয়ে জীবন্ত হয়ে উঠুক, তাঁর জীবনের সংগী হয়ে উঠুক।

খুব কম নারী কল্পনার আকাশে বিচরন করেন, বাস্তবতার ছবি এঁকে এঁকে সামনের দিকে নারীরা চলেন।

একজন সৌন্দর্য বান পুরুষ মূর্তির মধ্যে জীবন খোঁজার, জীবনের ছোঁয়া পাওয়ার এমন কল্পিত বাসনা নারীদের না তাই হয় তো ছায়াতলা কল্পনায় বিচরণ না করে বলছে আমি তো একজন মেয়ে এই কথাটি বলে হয় তো সে তা বুঝাতে চেয়েছিল।

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ