Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

দাঁড়াও, পথিক-বর জন্ম যদি তব বঙ্গে!

Share on Facebook

তিনি আমাদের মহা-কবি, নিজ পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি লিখেছেন –

“…….যশোরে সাগরদাঁড়ি কবতক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী “

বঙ্গে জন্মানো মানুষদের প্রতি তাঁর চির অগাধ বিশ্বাস, ধরণীতে থেকে বিদায় নেওয়ার পরে সেই প্রিয় মানুষরা যেন তাঁকে মনে করেন তাই তিনি মিনতী করেছেন বঙ্গে জন্মানো মানুষর প্রতি !

দাঁড়াও, পথিক-বর জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে

তিনি পরিচয়ে মহা-কবি, এই মহা কবি নিয়ে কোন কিছু লিখার অধিকার রাখেন যারা তারা হচ্ছেন বাংলা সাহিত্যে অথবা মাইকেল মধু সূদনের জীবনী, সাহিত্য কর্ম নিয়ে গবেষনা করেন নতুন কিছু লিখে আমাদের সামনে তুলে ধরতে পারেন তারাই , কিন্তু তিনি তো আমাদের মধু কবি, আমাদের সকলের কবি, খুব সাধাসিধে ভাবে আমাদের মধু কবিকে নিয়ে আমাদের যতটুকু জানা তা লিখা যায়। তাই তো মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ১৯৫ তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে যশোহরের সাগরদাঁড়িতে ২৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে সপ্তাহব্যাপী মধু মেলা। আজ ২৫ জানুয়ারি তাঁর শুভ জন্মদিন।

বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথের আগে প্রথম তিনি বাংলা সাহিত্যকে বিশ্বের দরবারে পিরিচিত করেদিয়েছিলেন, আর তা ছিল শত বছরের উপরে, আমাদের দেখা হয় নি মহা কবিকে আর তিনি ছিলেন বাংলা সাহিত্যের সব চেয়ে বৈচিত্রময় সাহিত্য সমৃদ্ধ কবি, বাংলা সাহিত্যকে সু-প্রতিষ্ঠিত করে যাওয়ার কবি, বাংলা সাহিত্যকে অলংকৃত করার কবি।

একজন কবি, লেখক বা একজন উঁচু মানের মানুষ পরবর্তি প্রজন্মের কাছে কতটুকু পরিচিত বা জীবন্ত হয়ে থাকবেন তা নির্ভর করে বিশেষ করে শিক্ষা সিলেবাসে প্রথম শ্রেনী থেকে দ্বাদশ শ্রেনী পর্যন্ত তাঁদের লেখা, কর্ম অবদান বা জীবনীর যতখানি উল্ল্যেখ থাকে, নির্ভর করে তাঁদেরকে কতটুকু শিক্ষা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তার উপর।

যতটুকু মনে পড়ে আমাদের শিক্ষা জীবনের এই মহা কবির বেশ কিছু কবিতা আমাদের পাঠ্য পুস্তুকে অন্তর্ভুক্ত ছিল তাই কবিকে বার বার মনে পড়ে, মনে পড়ে প্রিয় কবির কিছু কবিতার লাইন, যেমন করে বহু দূরের প্রবাসে থেকে কবির মনে নিত্য মনে পড়ত তাঁর প্রিয় কপোতাক্ষ নদকে, লিখেছেন তিনি তার কপোতাক্ষ নদ কবিতায় –

” সতত, হে নদ তুমি পড় মোর মনে
সতত তোমার কথা ভাবি এ বিরলে।
সতত যেমনি লোক নিশার স্বপনে
শোনে মায়া যন্ত্র ধ্বনি তব কলকলে
জুড়াই এ কান আমি ভ্রান্তির ছলনে।
বহু দেশ দেখিয়াছি বহু নদ দলে
কিন্তু এ স্নেহের তৃষ্ণা মেটে কার জলে
দুগ্ধস্রোতরূপি তুমি মাতৃভূমি স্তনে।
আর কি হে হবে দেখা যত দিন যাবে
প্রজারূপে রাজরূপ সাগরেরে দিতে
বারি রূপ কর তুমি এ মিনতি গাবে
বঙ্গজ জনের কানে সখে-সখারিতে।
নাম তার এ প্রবাসে মজি প্রেমভাবে
লইছে যে নাম তব বঙ্গের সঙ্গীতে। “

যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু কায়স্থ পরিবারে মধুসূদন দত্তের জন্ম, কথিত আছে ছোট্ট বেলা থেকে তিনি অনেকটাই রাজপুত্রের মত চলা ফেলা করতেন একই পোষাকে তিনি দ্বিতীয় বার স্কুলে যান নি। জনপ্রিয় কবি বনফুল মধু কবিকে নিয়ে লেখা ” শ্রী মধুসূদন” নামে একটি নাটক যা এক সময় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলা সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত ছিল। সেই নাটকে তরুণ মধুর একটি দাম্ভিকতা পূর্ণ সংলাপ ছিল —‘রাজনারায়ণের ছেলে কাউকে গুনে টাকা দেয় না।’ এই লাইনটি থেকে বুঝা যায় তিনি কতটা রাজকীয় ভাবে চলতেন। সাহিত্য প্রেম, দেশ প্রেম, বেহিসাবী চলাফেরায় তার শেষ জীবন কেমন কেটেছে, কী ভাবে তিনি চির বিদায় নিয়েছেন তা আর নতুন করে বলার প্রয়োজন পরে না।

প্রবাস জীবনের মোহ কাটিয়ে পরবর্তীকালে কলকাতায় ব্যারিস্টারি পেশা শুরু করেছিলেন, প্রবাস জীবনের মোহ যে তাঁকে দগ্ধ করেছিল আর তা শুদ্ধ করতে চেয়েছিলেন তার বিখ্যাত কবিতায়।

” হে বঙ্গ, ভাণ্ডারে তব বিবিধ রতন; –
তা সবে, (অবোধ আমি!) অবহেলা করি,
পর-ধন-লোভে মত্ত, করিনু ভ্রমণ
পরদেশে, ভিক্ষাবৃত্তি কুক্ষণে আচরি।
কাটাইনু বহু দিন সুখ পরিহরি।
অনিদ্রায়, নিরাহারে সঁপি কায়, মনঃ
, মজিনু বিফল তপে অবরেণ্যে বরি; –
কেলিনু শৈবালে; ভুলি কমল-কানন!
স্বপ্নে তব কুললক্ষ্মী কয়ে দিলা পরে –
“ওরে বাছা, মাতৃকোষে রতনের রাজি,
এ ভিখারী-দশা তবে কেন তোর আজি?
যা ফিরি, অজ্ঞান তুই, যা রে ফিরি ঘরে!”
পালিলাম আজ্ঞা সুখে; পাইলাম কালে
মাতৃ-ভাষা-রূপে খনি, পূর্ণ মণিজালে।”

কলকাতায় ব্যারিস্টারি পেশা শুরু করেছিলেন আর তখনও মধুসূদন মক্কেলের হাত থেকে অনেক সময়ই গুনে টাকা নিতেন না। আইন ব্যবসায়ে অর্থ উপার্জনের জন্য যে রকম পেশাদারি মনোভাব নেওয়া উচিত, তা তিনি গ্রহণ করেন নি বরং মামলা চালিয়েছেন কিন্তু ফি নেন নি এমন অনেক অনেক উদাহরণ ছিল তাঁর জীবনীতে।

অর্থ, সঞ্চয় ভবিষ্যতের চিন্তা কোন কিছু্ই থাকে আর্ষণ করতে পারে নি, রেখে গেছেন আমাদের জন্য বাংলা সাহিত্যের এক রত্ন ভান্ডার আর বাংলা ভাষায় সনেট ও অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রবর্তক। তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ কীর্তি অমিত্রাক্ষর ছন্দে রামায়ণের উপাখ্যান অবলম্বনে রচিত মেঘনাদবধ কাব্য নামক মহাকাব্য।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমাধিস্মারক, কলকাতা, তাঁর সমাধিস্থলে নিচের কবিতাটি লেখা রয়েছেঃ
দাঁড়াও, পথিক-বর জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধিস্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহানিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ী কপোতাক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী!

ছবিঃ নেট থেকে সংগ্রহিত।

তারিখ : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯

রেটিং করুনঃ ,

৭ টি মন্তব্য

  1. ফেরদৌসী শিল্পী বলেছেন:

    মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তকে নিয়ে আপনার এই অসাধারণ লেখা থেকে আরো কিছু জানা হলো। প্রিয় কবির প্রতিটা কবিতা আমি যতবারই পড়তাম ততবারই মুগ্ধ হয়ে পড়তাম, এখনো মুগ্ধ হয়ে পড়ি। আজ মহাকবির জন্মজয়ন্তীতে রইলো বিনম্র শ্রদ্ধা। আপনার এই চমৎকার পোস্টটির জন্য অশেষ ধন্যবাদ আপনাকে রব্বানী ভাই।

    বঙ্গভূমির প্রতি-মাইকেল মধুসূদন দত্ত

    রেখো মা দাসেরে মনে, এ মিনতি করি পদে
    সাধিতে মনের সাধ,
    ঘটে যদি পরমাদ,
    মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে।
    প্রবাসে দৈবের বশে,
    জীব-তারা যদি খসে
    এ দেহ-আকাশ হতে, – খেদ নাহি তাহে।
    জন্মিলে মরিতে হবে,
    অমর কে কোথা কবে,
    চিরস্থির কবে নীর, হায় রে, জীবন-নদে?
    কিন্তু যদি রাখ মনে,
    নাহি, মা, ডরি শমনে;
    মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত-হ্রদে!
    সেই ধন্য নরকুলে,
    লোকে যারে নাহি ভুলে,
    মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্ব্বজন; –
    কিন্তু কোন্ গুণ আছে,
    যাচিব যে তব কাছে,
    হেন অমরতা আমি, কহ, গো, শ্যামা জন্মদে!
    তবে যদি দয়া কর,
    ভুল দোষ, গুণ ধর,
    অমর করিয়া বর দেহ দাসে, সুবরদে! –
    ফুটি যেন স্মৃতি-জলে,
    মানসে, মা, যথা ফলে
    মধুময় তামরস কি বসন্ত, কি শরদে!

    • রব্বানী চৌধুরী বলেছেন:

      অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানবেন আপা,

      প্রিয় কবির শুভ জন্ম দিনে তার একটি বিখ্যাত কবিতা মন্তব্য কলামে যুক্ত করে দে‌ওয়ার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

  2. মধু কবির শুভ জন্মদিনে
    আন্তরিক শুভেচ্ছা।
    ধন্যবাদ রব্বানী ভাই
    চমৎকার লেখনীর জন্য।

  3. শহীদুল ইসলাম প্রামানিক বলেছেন:

    মধু কবির শুভ জন্মদিনে শুভেচ্ছা।

  4. পথিক বলেছেন:

    প্রিয় কবির কথা যে ভাবে বর্ণানায় এনেছেন তাতে মুগ্ধ।

  5. নাহার বলেছেন:

    আপনার সমৃদ্ধ লেখায় আবারও পড়লাম মহাকবির জীবনী, দাথে তাঁর লেখা কবিতা।

    অনেক অনেক শুভেচ্ছা ভাই!

,

নভেম্বর ২২, ২০২৪,শুক্রবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ