Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে উল্টো বিপদে ইউরোপ (২০২২)

Share on Facebook

লেখা:সাইমন জেনকিন।

রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি রাখার খেসারত হিসেবে আগামী শীতে ব্রিটেনের অন্তত ৬০ লাখ পরিবার হাড় হিম করা ঠান্ডায় সকাল-সন্ধ্যা, যখন-তখন বিদ্যুৎবিহীন অবস্থায় কাটাবে—এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুধু ব্রিটেন নয়, গোটা ইউরোপের বিদ্যুৎ–গ্রাহকেরা এই অবস্থায় পড়তে পারেন বলে আন্দাজ করা হচ্ছে। তেল-গ্যাসের মূল্য বাবদ ইউরোপ দৈনিক রাশিয়ার টাঁকশালে প্রায় ১০০ কোটি ডলার ঢালার পরও এ অবস্থা তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও ইইউ যা করছে, তাকে স্রেফ পাগলামি ছাড়া কিছু বলা যায় না।

তেল–গ্যাস বাবদ রাশিয়ার পাওনা অর্থ পরিশোধ স্থগিত করতে ইইউ যে প্রস্তাব দিয়েছে, তা রাশিয়া লাগোয়া ইউরোপীয় দেশগুলো, বিশেষ করে যে দেশগুলো রাশিয়ার জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল, তারা এটি মানতে পারছে না। তারা যথার্থ বুঝদারের মতোই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করছে। যেমন জার্মানি তার তেলের মোট চাহিদার ১২ শতাংশ এবং গ্যাসের মোট চাহিদার ৩৫ শতাংশ রাশিয়ার কাছ থেকে কেনে। হাঙ্গেরির ক্ষেত্রে এই হিসাব আরও অনেক বেশি।

ব্রাসেলসে ইইউকে কী করতে হবে, তা তারা এখনো ঠিক করে উঠতে পারছে না বলেই মনে হচ্ছে। সেখানে তারা একটি কূটনৈতিক সমঝোতার প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। তাতে বলা হয়েছে, রাশিয়া থেকে পাইপলাইনে তেল ও গ্যাস আমদানির ওপর যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তা প্রত্যাহার করা যেতে পারে। এটি কার্যকর করা গেলে হাঙ্গেরি ও জার্মানি গ্যাসসংকট থেকে বাঁচতে পারবে। তবে এখন পর্যন্ত এটি চূড়ান্ত প্রস্তাব হিসেবে রূপ পায়নি। এর কারণ অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা নিয়ে ইইউর নিজেদের মধ্যে তর্কবিতর্ক মারমুখী বক্তব্যে পরিণত হয়েছে।

কোনো অগ্রহণযোগ্য নীতি থেকে কোনো বিদেশি সরকারকে সরে আসতে বাধ্য করতে সাধারণত এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে বাস্তবতা হলো, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিয়ে বিদেশি সরকারের নীতি বদলানোর ঘটনা কালেভদ্রে ঘটে থাকে। আর রাশিয়ার ক্ষেত্রে তো এটি স্পষ্টতই ব্যর্থ হয়েছে। অনেকে এখন বলছেন, রাশিয়ার ওপর যে নিষেধাজ্ঞাগুলো আরোপ করা হয়েছে, সেগুলো আসলে মাঝারি থেকে দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করবে—এমন বিবেচনায় আরোপ করা হয়ে থাকে। তাৎক্ষণিক ফল পেতে এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয় না। তাঁরা মনে করছেন, ইউক্রেনের যুদ্ধ এখন একটি ভিন্ন ধাপে স্থানান্তরিত হয়েছে এবং এই যুদ্ধ প্রলম্বিত হতে পারে।

নিষেধাজ্ঞাগুলো হয়তো রাশিয়ার ক্রেডিটওর্দিনেসকে (ঋণ পাওয়ার যোগ্যতা বা কারও অর্থনৈতিক সক্ষমতার বিষয়ে অন্যের সাধারণ ধারণা) ক্ষতিগ্রস্ত করে থাকতে পারে; কিন্তু বাস্তবতা হলো বিশ্বব্যাপী গ্যাসের দামের ৭০ শতাংশ বৃদ্ধি রাশিয়ার আয়ের হিসাবকে বিদ্যুৎ–গতিতে স্ফীত করেছে। রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবমতে, ইউক্রেনে অভিযানের আগে রাশিয়ার হিসাবে যে বাণিজ্য উদ্বৃত্ত ছিল, এখন তার তিন গুণ বেশি অর্থ জমা হয়েছে। অন্যদিকে যে নিষেধাজ্ঞাগুলো পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার ওপর আরোপ করেছে তাদের ওপরই সেগুলো স্পষ্টভাবে বুমেরাং হয়ে আঘাত করেছে।

জ্বালানির অভাবে মরার দশায় পড়া হাঙ্গেরি ইতিমধ্যেই বলেছে, রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে প্রকারান্তরে হাঙ্গেরির ওপর ‘পারমাণবিক বোমা’ ফেলা হয়েছে। হাঙ্গেরির নেতারা মনে করছেন, নিষেধাজ্ঞার লক্ষ্য অস্পষ্ট এবং কত দিনের মধ্যে এর সুফল পাওয়া যাবে, তার কোনো সময়সীমা দেখা যাচ্ছে না। নিষেধাজ্ঞার সহজাত প্রবণতা হলো, দিন যত যায় এটি তত কঠিন হতে থাকে এবং তা একসময় ভেঙে ফেলা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। সেই বিবেচনা থেকে দেখলে বলা যায়, সামনের দিনগুলো আরও খারাপ হতে পারে।

নিষেধাজ্ঞার প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়া ইউরোপে গ্যাস বিক্রি বন্ধের হুমকি দিয়েছে এবং ইতিমধ্যেই জ্বালানির দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রাশিয়া কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো অবরোধ করে রেখেছে। এসব বন্দর থেকে ইউক্রেনের লাখ লাখ টন শস্য বহির্বিশ্বে যায়। রাশিয়ার কারণে ইউক্রেনের খাদ্যবাহী জাহাজ বের হতে পারছে না। এতে বিশ্ববাজারে খাদ্যের দাম আকাশছোঁয়া হচ্ছে। আফ্রিকাজুড়ে খাদ্যশস্যের দাম ৪৮ শতাংশ বেড়ে গেছে। ইউক্রেনের খাদ্য রপ্তানি বন্ধ করে রাশিয়া বিপুল পরিমাণ খাদ্যশস্য চড়া দামে বিক্রি করছে।

মস্কো বলছে, তার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলে তারা আটকে রাখা খাদ্যবোঝাই জাহাজগুলো ছেড়ে দেবে। খাদ্যসংকট কাটাতে সহায়তা করবে। রাশিয়ার এই প্রস্তাব মেনে নেওয়ার বিষয়টি তর্কসাপেক্ষ হতে পারে কিন্তু পশ্চিমারা তাদের নিষেধাজ্ঞা-যুদ্ধের অনিচ্ছাকৃত পরিণতির ব্যাপারে অন্ধ হতে পারে না। ইউক্রেন–রাশিয়া যুদ্ধকে সারা ইউরোপে ছড়াতে না দিয়ে ন্যাটো বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছে। কিন্তু ইউরোপের আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা সে ধরনের কোনো সংবেদনশীলতা বোঝে না। ফলে খাদ্য ও জ্বালানির সংকটে ইউরোপজুড়ে লাখ লাখ মানুষ ভুগবে। এই নিষেধাজ্ঞায় সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যাহত হচ্ছে। বাণিজ্য যোগাযোগ ভেঙে পড়েছে।

এই কদিনে স্পষ্ট হয়েছে, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রাশিয়াকে ইউক্রেন থেকে তার বাহিনী গুটিয়ে আনতে বাধ্য করার যে লক্ষ্য ছিল, তা স্পষ্টতই অর্জিত হয়নি। সে তুলনায় ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া অনেক বেশি কাজে এসেছে। কিন্তু ইউরোপের বাকি অংশ এবং বহির্বিশ্বের ক্ষতির মাত্রা এখন প্রকাশ পেতে শুরু করেছে। এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের উচিত রাশিয়ার বিরুদ্ধে আরোপ করা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দ্রুত তুলে নিয়ে ইউক্রেনকে সামরিক সহায়তা দেওয়া। কারণ, এই নিষেধাজ্ঞাগুলো যারপরনাই আত্মঘাতী ও নির্বিকারভাবে নিষ্ঠুর।

**** দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, অনুবাদ: সারফুদ্দিন আহমেদ

● সাইমন জেনকিন্স একজন গার্ডিয়ান কলামিস্ট।

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুন ০১, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ