বাগেরহাটের মোংলায় ৫৫ মেগাওয়াট ক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মোংলা গ্রিন পাওয়ার লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। চুক্তি স্বাক্ষরের দুই বছরের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির উৎপাদন শুরু করার কথা রয়েছে।
আজ রোববার রাতে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত হয়। এতে অনলাইনে যুক্ত হয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর দিকে ঝুঁকছে বিদ্যুৎ বিভাগ। ২০৪১ সালের মধ্যে ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদন করার লক্ষ্য সরকারের।
মোংলা বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ২০ বছর বিদ্যুৎ কিনবে পিডিবি। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম হবে শূন্য দশমিক ১৩২০ মার্কিন ডলার। ডলারের বিনিময় হার ধরে প্রতি মাসের বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা হবে কেন্দ্রটিকে। বর্তমান বিনিময় হার (৯৫ টাকা) ধরে হিসাব করলে ইউনিট খরচ দাঁড়ায় সাড়ে ১২ টাকা।
বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে গত বছরের ১৯ জানুয়ারি প্রাথমিক সম্মতিপত্র দেওয়া হয় নির্মাতাপ্রতিষ্ঠানকে। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যৌথভাবে নির্মাণ করবে চীনের ইনভিশন এনার্জি কোম্পানি লিমিটেড, বাংলাদেশের এসকিউ ট্রেডিং অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড ও হংকংয়ে নিবন্ধিত কোম্পানি ইনভিশন রিনিউয়েবল এনার্জি বাংলাদেশ লিমিটেড। এ তিন প্রতিষ্ঠান মিলে মোংলা গ্রিন পাওয়ার লিমিটেড গঠন করেছে। এ কেন্দ্রে আড়াই মেগাওয়াট ক্ষমতার মোট ২২টি টারবাইন থাকবে।
পিডিবির চেয়ারম্যান মো. মাহবুবর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মো. হাবিবুর রহমান। পিডিবির পক্ষে পরিচালক গোলাম রব্বানী এবং মোংলা গ্রিন পাওয়ার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জু ওয়েনতাও চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) তথ্য বলছে, দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মিত হয় ফেনীতে ২০০৫ সালে। এটির বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা শূন্য দশমিক ৯০ মেগাওয়াট। ত্রুটির কারণে ২০০৭ সালে এটি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ২০১৪ সাল থেকে এটি নিয়মিত উৎপাদন করছে। ২০০৮ সালে কক্সবাজারের কুতুবদিয়ায় করা হয় এক মেগাওয়াট ক্ষমতার বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র। এটিও চালুর পর কয়েক বছর বন্ধ ছিল, এখন চালু আছে।
পিডিবি বলছে, দেশে বায়ুবিদ্যুতের সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন সময় একাধিক সমীক্ষা চালানো হয়েছে। এর ভিত্তিতে নয়টি এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য। ইতিমধ্যেই সিরাজগঞ্জে দুই মেগাওয়াট ক্ষমতার একটি বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে পিডিবি। আগামী ডিসেম্বরে এটি বাণিজ্যিকভাবে চালু হতে পারে। এর বাইরে বেসরকারি খাতে দেশের প্রথম বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করতে কক্সবাজারে কাজ করছে ইউএস–ডিকে গ্রিন এনার্জি। ৬০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সঙ্গে ২০১৪ সালে চুক্তি করেছে পিডিবি। আগামী বছরের ডিসেম্বরে এটির উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে। মোংলা বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বেসরকারি খাতে চুক্তি হওয়া দ্বিতীয় বায়ুবিদ্যুৎকেন্দ্র।
সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০৪, ২০২২
রেটিং করুনঃ ,