Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

৪৯ বছর পর আবারও কঠিন সংকটের মুখে আওয়ামী লীগ (২০২৪)

Share on Facebook

গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর ভয়াবহ সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব দেওয়া রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ। বিশ্লেষকরা বলছেন ‘পতন ও সঙ্কটের ধরন ভিন্ন’ হলেও এবারের সঙ্কট দলটিকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মতো ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে।

গত জুলাই এবং আগস্টে আগাস্টে তীব্র ছাত্র আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়ার পর দলটির অন্য নেতাদের অনেকেই আত্মগোপন করে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনেকে ভারতে কিংবা অন্য দেশে চলে গেছেন।

এছাড়া অনেকে আটক হয়ে কারাগারে আছেন।
দলটির দুয়েকজন নেতার নামে বিচ্ছিন্নভাবে দুয়েকটি বিবৃতি গণমাধ্যমে এলেও দলের নেতৃত্ব কিংবা কার্যক্রম কোনোটাই এখন দৃশ্যমান নয়। এমনকি ঢাকায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ও আন্দোলনকারীদের হামলার তছনছ হয়ে গেছে।

৪৯ বছর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগাস্টে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যাকাণ্ডের পরেও ভয়াবহ এক সঙ্কটকালের মুখোমুখি হতে হয়েছিল দেশের সবচেয়ে প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলটিকে।

১৯৭৫ ও ২০২৪ উভয় ঘটনাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে ‘ছন্নছাড়া’ অবস্থায় ফেলে দিয়েছে বলে মনে করেন ইতিহাসবিদ ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। তিনি মনে করেন, ‘দুটি ঘটনাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়েছে।’

রাজনৈতিক গবেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, দুটি ঘটনাতেই সরকারের পতন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘১৫ আগাস্ট ছিল রক্তাক্ত ও সহিংস।

অনেক হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু এবার তা হয়নি। কিন্তু উভয় ঘটনার পরিণতিতেই কঠিন সঙ্কটে পড়েছে দলটি।’
১৯৭৫ এর ১৫ আগাস্টের পরের পরিস্থিতি

১৯৭৫ সালের ১৫ আগাস্টে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িতে যখন আক্রমণ হয়, তখন কোনো ধরনের প্রতিরোধ ছাড়াই পুরো বাড়ির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সপরিবারে তাকে হত্যা করে হত্যাকারীরা। শেখ মুজিবুর রহমানের দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বিদেশে থাকায় তখন বেঁচে গিয়েছিলেন।

এ ঘটনায় কার্যত তছনছ হয়ে পড়েছিল আওয়ামী লীগ। এর জের ধরে পরে তখন সারাদেশে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে পড়ে দলটি। তখন ওই বাড়ির নিচতলায় একটি কক্ষে কর্মরত ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী এ এফ এম মুহিতুল ইসলাম। মুহিতুল ইসলাম ২০১৬ সালে মারা যান। ১৯৯৬ সালে তিনি শেখ মুজিব হত্যা মামলার বাদি হয়েছিলেন।

২০১০ সালে এক সাক্ষাৎকারে মুহিতুল ইসলাম বলেন, ‘একজন রাষ্ট্রপতির বাড়িতে যে ধরনের নিরাপত্তা থাকা দরকার সেটি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে ছিল না। তাছাড়া রাষ্ট্রপতির বাড়িতে আক্রমণের পরও কোনো তরফ থেকে কোনো ধরনের সহায়তা আসেনি।’

হত্যাকাণ্ডের পর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাড়িটি অভ্যুত্থানের সাথে জড়িত সেনাদের নিয়ন্ত্রণে ছিল। তৎকালীন আওয়ামী লীগেরই একজন সিনিয়র নেতা এবং মন্ত্রিপরিষদের সদস্য খন্দকার মোশতাক আহমেদ রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেন। এরপর আওয়ামী লীগের যারা মোশতাক সরকারকে সমর্থন করেননি তারা অনেকে আত্মগোপনে যান। অনেক নেতা পরবর্তীতে আটক হয়ে দীর্ঘসময় ধরে কারাভোগ করেন। অনেকে ভারতে চলে যান।

পরবর্তী আব্দুল কাদের সিদ্দিকীসহ কেউ কেউ আবার প্রতিরোধ তৈরির চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সে বছর ১৫ আগাস্টের আগে শেখ মুজিবুর রহমান কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ বা বাকশাল পদ্ধতি প্রবর্তন করেছিলেন। পরে ১৯৭৬ সালে রাজনৈতিক দলগুলো নিবন্ধনের সুযোগ পেলে তখন আবার আওয়ামী লীগ নামেই দলটি নিবন্ধিত হয়ে রাজনীতি শুরু করেছিল।

মহিউদ্দিন আহমদ বলছেন, আওয়ামী লীগ নামে দলটি আবার ফিরে আসে ১৯৭৬ সালে। তিনি বলেন, ‘তবে শেখ মুজিব ছাড়া দ্বিতীয় কোনো নেতা তৈরি না হওয়ায় তার হত্যাকাণ্ডের পর দলের মধ্যে দলাদলি শুরু হয়। এক পর্যায়ে দল কয়েক ভাগে ভাগ হলো।’

এরপর ১৯৭৯ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ (মালেক) ৩৯টি এবং আওয়ামী লীগ (মিজান) দু’টি আসন লাভ করে। আওয়ামী লীগের একটি অংশ আবার বাকশালকেও সক্রিয় করে। এর আগেই দেওয়ান ফরিদ গাজী এবং আব্দুল মালেক উকিলের নেতৃত্বে দুটি অংশ হয়ে যায় আওয়ামী লীগের। এর বাইরে দল থেকে বেরিয়ে আব্দুর রশীদ তর্কবাগীশ এবং এম এ জি ওসমানি আলাদা দল গঠন করেছিলেন।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘শেখ মুজিব রক্ষীবাহিনী এবং অন্য বাহিনীর ওপর নির্ভর করে দেশ শাসন করেছিলেন। দলের সব ক্ষমতা নিজের হাতে নিয়েছিলেন। ফলে দল হয়েছিল মুজিব নির্ভর। এ কারণে ১৫ আগাস্টের পর দলকে খুঁজে পাওয়া যায়নি।’

তিনি বলেন, ১৫ আগাস্ট পরবর্তী সরকার পরবর্তীকালে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে পুনর্গঠিত হওয়ার সুযোগ দিয়েছিল। এরপর দল টেকানোর জন্য দলের বিবদমান নেতারাই ১৯৮১ সালে শেখ হাসিনাকে দলের সভাপতি করে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন। এরপর থেকে এ পর্যন্ত শেখ হাসিনাই দলের সভাপতি পদে আছেন।

২০২৪ সালের আগাস্ট পরবর্তী পরিস্থিতি

ব্যাপক ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে ৫ আগাস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গেলে আওয়ামী লীগের টানা ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এর পরপরই ঢাকায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর, ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ কয়েকটি কার্যালয়ে ব্যাপক হামলা ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। দেশের বহু জায়গায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের বাড়িঘর, দোকানপাটেও হামলার ঘটনা ঘটেছে।

গোপালগঞ্জে শুধু আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা ‘শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে’ দাবি করে গত ৫ আগাস্টের পরপর বেশ কয়েক দফায়, কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পরপরই দলের নেতারা আত্মগোপনে চলে যান এবং দলটির কোনো স্তরের কোনো নেতাকেই আর প্রকাশ্যে দেখা যায়নি। শেখ হাসিনাসহ দলের সব নেতার বিরুদ্ধেই বহু মামলা দায়ের হয়েছে।

এরপর গত দুই মাসে দলের নেতা ও সাবেক মন্ত্রী এমপিদের অনেককেই আটক করেছে পুলিশ। যার মধ্যে রয়েছেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, দীপু মনি, সালমান এফ রহমানসহ অনেকেই। সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এবং মাহবুব উল আলম হানিফসহ সহ-সিনিয়র নেতারা, যাদের আটকের কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি তারা কে কোথায় আছেন নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

তবে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, ওবায়দুল কাদের এবং জাহাঙ্গীর কবির নানকসহ নেতাদের বড় একটি অংশ ভারতে চলে গেছেন। কেউ কেউ ভারত হয়ে অন্য দেশে গেছেন। যদিও নিরপেক্ষ কোনো সূত্র থেকে এসব তথ্যের সত্যতা যাচাই করা যায়নি।

দলের কোনো নেতাকে প্রকাশ্যে দেখা না গেলেও কয়েকটি বিবৃতি গণমাধ্যমে এসেছে জাহাঙ্গীর কবির নানক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং মাহবুব উল আলম হানিফের নামে। এছাড়া দল এবং শেখ হাসিনার অবস্থান ব্যাখ্যা করে একাধিকবার ভিডিও বার্তা দিয়েছেন শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়।

এমন অবস্থায় গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগে চরম নেতৃত্বশূন্যতা দেখা দিয়েছে। এতে সাংগঠনিকভাবে দলটি রীতিমত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন দলটির তৃণমূলের নেতারা। তাদের অনেকেই এখন উদ্বেগ ও আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। গণমাধ্যমে কথা বলার সময় কেউ তাদের নামও প্রকাশ করতে চান না।

মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘দুই মাস হয়ে গেছে সরকারের পতন হয়েছে। এখনো কিন্তু নেতা হিসেবে কেউ দাঁড়াতে পারছেন না। এখন শেখ হাসিনার ছেলে বিবৃতি দিচ্ছেন। কথা বলছেন। তার পরিবারের বাইরে দলের কোনো নেতাকে এখনো দেখা যাচ্ছে না।’

অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার আমলে যে পরিমাণ অন্যায় অত্যাচার হয়েছে তার প্রতিক্রিয়ায় এবারে দলটির অবস্থা আরো সঙ্কটাপন্ন বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। কিন্তু এবারে সরকারের পতনের পর তার সব চিহ্ন মুছে দেওয়া হয়েছে। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ ছন্নছাড়া হয়ে গেছে।’

শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার পরপরই তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছিলেন, তার মার আর রাজনীতিতে ফিরবেন না। আরেক সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, ‘আমার মনে হয় এখানেই শেষ। আমার পরিবার এবং আমি- আমাদের যথেষ্ট হয়েছে।’

তবে কিছুদিনের মধ্যেই অবশ্য তাকে ভিন্ন সুরে বলতে শোনা গেছে। আরেকটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশে ফিরবেন, যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে।’

এরপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে গুঞ্জন শোনা গেছে, শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পরিবর্তন আসতে যাচ্ছে। যদিও পরে এ বিষয়টি আওয়ামী লীগের কোনো পর্যায় থেকে নিশ্চিত করেননি দায়িত্বশীল কেউ।

**** বিবিসি বাংলার বিশ্লেষণ।

সূত্র:কালের কন্ঠ।
তারিখ: অক্টোবর ১০, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ৩, ২০২৪,মঙ্গলবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ