Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

২০১১ সালে জন্মের পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সাদিয়া ৭০০ কোটিতম শিশু(২০২২)

Share on Facebook

লেখক:মানসুরা হোসাইন।

জন্মের সময় বিশ্বের নজরকাড়া সাদিয়া এখন কেমন আছে

সাদিয়া সুলতানা (ঐশী) এখন পড়ছে পঞ্চম শ্রেণিতে। সে বিশ্বের কাছে প্রতীকী শিশু। ২০১১ সালে জন্মের পর জাতিসংঘের পক্ষ থেকে সাদিয়া ৭০০ কোটিতম শিশুর স্বীকৃতি পেয়েছিল। মুঠোফোনে হাসতে হাসতে সাদিয়া বলল, ‘স্কুলে আমাকে সবাই একটু বেশি পাত্তা দেয়। সবাই আমাকে ৭০০ কোটিতম শিশু বলে ডাকে। আগে বুঝতাম না, মা-বাবার কাছে গল্প শুনে এখন এর মানে একটু একটু বুঝতে পারি।’

বাবা মহাসিন হোসেন ও মা শেফালী আক্তারের সঙ্গে সাদিয়া সুলতানা মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার হাটভোকদিয়া গ্রামে থাকে। দীঘলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে সে। তারা তিন বোন। বড় বোন মাহিয়া সুলতানা ঢাকায় একটি কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষে পড়ছেন। আরেক বোন লৌহজং মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে পড়ছে নবম শ্রেণিতে।

১৫ নভেম্বর বিশ্বের জনসংখ্যা ৮০০ কোটিতে পৌঁছায়। এদিন ফিলিপাইনের ম্যানিলার টন্ডোতে ডক্টর হোসে ফাবেলা মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানীয় সময় রাত ১টা ২৯ মিনিটে জন্ম হয় শিশু ভিনিস ম্যাবানস্যাগের। তাকে প্রতীকী হিসেবে বিশ্বের ‘৮০০ কোটিতম’ শিশু বিবেচনা করা হচ্ছে। ফিলিপাইনের কমিশন অন পপুলেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ শিশুটির জন্মের ঘটনাটি উদ্‌যাপন করেছে। তাদের পক্ষ থেকে ফেসবুকে মা ও নবজাতকের একটি ছবিও পোস্ট করা হয়েছে।

৮০০ কোটিতম শিশু ভিনিস ম্যাবানস্যাগের জন্মের পর আবার বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে ৭০০ কোটিতম শিশু ১১ বছরের সাদিয়া সুলতানার নামটি উঠে আসে। বিশ্বের জনসংখ্যা যখন ৫০০ কোটিতে পৌঁছায়, তখন থেকে শতকোটিতম প্রতীকী শিশুর নাম ঘোষণা শুরু করে জাতিসংঘ। এর পর থেকে সেটা ধারাবাহিকভাবে চলছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ব্রিটিশ কর্মকর্তা অ্যালেক্স মার্শাল শতকোটিতম শিশু নির্বাচনের বিষয়টি প্রস্তাব করেছিলেন। ১৯৮৭ সালের ১১ জুলাই ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে জন্ম নেওয়া মাতেজ গাস্পার ছিলেন ৫০০ কোটিতম শিশু। এ শিশুর জন্মের সময় অ্যালেক্স মার্শাল হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন।

বসনিয়া-হার্জেগোভিনায় ১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবর জন্ম হয় আদনান মেভিকের। ৬০০ কোটিতম শিশু আদনানের পৃথিবীতে আগমনকে স্বাগত জানাতে সেদিন হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনান।
রোববার মুঠোফোনে কথা হয় সাদিয়া সুলতানার সঙ্গে। এ সময় সাদিয়ার পাশে থাকা তার মা শেফালী আক্তার মেয়ের কথা শুনে হাসছিলেন। সাদিয়া বলল, তার পড়াশোনা করতে ভালো লাগে। স্কুলে ফুটবল, ব্যাডমিন্টনসহ বিভিন্ন খেলা খেলে। বাড়িতে মায়ের কাজে হাত লাগায়। আর বড় হয়ে সে চিকিৎসক হতে চায়।

২০১১ সালের ৩১ অক্টোবর দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে রাজধানীর আজিমপুর মাতৃসদন ও শিশুস্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সাদিয়ার জন্ম হয়। হাসপাতালে তখন সাজ সাজ রব। সাদিয়া বলল, ‘আম্মু বলেছে, আমার জন্মের সময় হাসপাতাল সাজানো হয়েছিল। অনেক সাংবাদিক ছিলেন। এগুলো শুনতে আমার ভালো লাগে।’

সাদিয়া সুলতানা জন্মের পর হাসপাতালে তাকে দেখতে যান মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ (চুমকি), জাতিসংঘ জনসংখ্যাবিষয়ক তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশের প্রতিনিধি আর্থার আরকেনসহ অন্য কর্মকর্তারা

সাদিয়া সুলতানা জন্মের পর হাসপাতালে তাকে দেখতে যান মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ (চুমকি), জাতিসংঘ জনসংখ্যাবিষয়ক তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশের প্রতিনিধি আর্থার আরকেনসহ অন্য কর্মকর্তারা

সাদিয়ার জন্মের পর পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি তাকে স্বাগত জানান মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ (চুমকি) এবং জাতিসংঘ জনসংখ্যাবিষয়ক তহবিলের (ইউএনএফপিএ) বাংলাদেশের প্রতিনিধি আর্থার আরকেনসহ অন্য কর্মকর্তারা। আর্থার আরকেন বর্তমানে ইউএনএফপিএর পলিসি অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজি বিভাগের পরিচালক হিসেবে কর্মরত।

সাদিয়ার জন্মের পরে কেক কাটা, ছবি তোলা, ছোট শিশুটিকে উপহার দেওয়া, ফটোসাংবাদিকদের ক্লিক ক্লিক—সব মিলে ছিল এলাহি ব্যাপার। সাদিয়ার মা শেফালী আক্তার উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন সুন্দর একটি শাড়ি। শেফালী আক্তার তাঁর এবং মেয়ের পাওয়া উপহারগুলো সুন্দর করে গুছিয়ে রেখেছেন।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রথম ডিজিটাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২’-এর প্রাথমিক প্রতিবেদন বলছে, বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন ১৬ কোটি ৫১ লাখ ৫৮ হাজার ৬১৬। গত এক দশকে দেশে জনসংখ্যা বেড়েছে ২ কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ৯১৯ জন।
জাতিসংঘ জনসংখ্যাবিষয়ক তহবিল (ইউএনএফপিএ) থেকে এখনো সাদিয়া সুলতানার খোঁজখবর নেওয়া হয়

সাদিয়ার মা শেফালী আক্তার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন গর্ভের পানি কমে যাওয়া, পেটের ভেতর বাচ্চার ঘাড়ে নাড়ি পেঁচিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন জটিলতা নিয়ে। তাই সাদিয়ার জন্মের আগে জনসংখ্যার জটিল হিসাব-নিকাশ নিয়ে আলোচনা করা বা বোঝার মতো পরিস্থিতি ছিল না তাঁর। তবে বুঝতে পারছিলেন, হাসপাতালে বড় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন চলছে। অস্ত্রোপচারকক্ষে নিয়ে যাওয়ার পর চিকিৎসকদের আলোচনায় তিনি বুঝতে পারেন, ১২টা ১ মিনিটে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে যে শিশুর জন্ম হবে, সে হবে বিশ্বের প্রতীকী শিশু। তবে তিনিই সেই শিশুর মা হবেন, তা তখনো অনিশ্চিত ছিল।

মুঠোফোনে শেফালী আক্তার বললেন, ‘ওটিতে (অস্ত্রোপচারকক্ষ) তিনজন মায়ের মধ্যে অস্ত্রোপচারের জন্য কার সিরিয়াল আগে আসবে, তা তখনো আমরা জানি না। এরপর চিকিৎসকদের সিদ্ধান্তে আমার অস্ত্রোপচার হলো ওই সময়। আমাকে যখন অস্ত্রোপচারকক্ষ থেকে বের করা হয়, তখন চারপাশে অনেক মানুষ আর সাংবাদিক দেখে তেমন কিছু বুঝতে পারিনি। পরদিন সকালে পত্রিকায় মেয়ের ছবিসহ অন্যদের মুখে গল্প শুনে বুঝলাম, মেয়েকে নিয়ে তো এলাহি কাণ্ড ঘটে গেছে। এ প্রতীকী শিশুর মা হতে পেরে আমি গর্বিত।’
সাদিয়া সুলতানার জন্মের পর বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো তাকে নিয়ে খবর প্রকাশ করে

শেফালী আক্তার জানালেন, সাদিয়ার জন্ম পরিকল্পিত ছিল না। এ ছাড়া তাঁর আগের দুই সন্তান মেয়ে। আবার যদি মেয়েসন্তান হয়, স্বামী ও অন্যরা বিষয়টি কীভাবে নেবেন—এসব নিয়ে চিন্তিত ছিলেন তিনি। পরিবারের সবাই আশা করেছিলেন যেন দুই মেয়ের পর একটি ছেলেসন্তান হয়। তবে সাদিয়ার জন্মের পর সে বিশ্বের প্রতীকী শিশু হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ায় ছেলে না মেয়েসন্তান হয়েছে, এ নিয়ে পরিবারের কেউ মাথা ঘামানোরই সুযোগ পাননি।

শেফালী আক্তার বলেন, ‘তিন মেয়ে তাদের বাবার চোখের মণি। নিজেদের রক্ত পানি করে হলেও মেয়েদের পড়াশোনাসহ কোনো কিছুর কমতি রাখা হবে না।’
সাদিয়া সুলতানা বা তার পরিবারের সদস্যরা কেমন আছেন, এ প্রশ্নে শেফালী আক্তার বলেন, ‘মধ্যবিত্তের সমস্যা হলো যত সমস্যার মধ্যেই থাকুক, মুখ ফুটে বলতে পারে না।

আমাদের অবস্থাও এখন তেমনই। করোনার আগে থেকেই স্বামীর কাপড়ের ব্যবসা খারাপ যাচ্ছিল। করোনায় সেটা পুরো এলোমেলো হয়ে যায়। আমরা যাঁদের কাছে টাকাপয়সা পেতাম, তাঁরা তা ফেরত দিতে পারেননি, আবার আমরাও অন্যদের টাকা শোধ করতে পারিনি। এখন নতুন করে ধারদেনাও হয়ে গেছে অনেক।’

শেফালী আক্তার জানালেন, ২০১৮ সালের শেষের দিকে ঢাকার সংসার ও ব্যবসা গুটিয়ে তাঁরা গ্রামের বাড়িতে ফিরে যান। তখন ঢাকায় বাড়ি ভাড়া করে থাকা তাঁদের পরিবারের পক্ষে কঠিন হয়ে যাচ্ছিল। তিন মেয়ের পড়াশোনাসহ অন্যান্য খরচ তো ছিল, এর ওপর করোনা মহামারি শুরু হয়। তাঁদের ব্যবসায় ধস নামে।

সাদিয়া সুলতানা প্রতীকী শিশুর স্বীকৃতি পেলেও এটার সঙ্গে টাকাপয়সার কোনো সম্পর্ক নেই। ইউএনএফপিএ সাদিয়ার খোঁজখবর রাখছে। শেফালী আক্তার বললেন, ‘আমরা মেয়ের জন্য এমনিতেই অনেক সম্মান পেয়েছি। তাই সরকারের কাছে কিছু চাইতে লজ্জা লাগে। মেয়ের বাবার ব্যবসা খারাপ না হলে কিছু চাওয়ার দরকার ছিল না।

তবে বর্তমানে এক মেয়েকে ঢাকায় রাখাসহ তিন মেয়েকে পড়াশানো করাতে বেশ কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সরকারের তো বিভিন্ন কার্যক্রম বা কর্মসূচি আছে, কোনোটার আওতায় সরকারের পক্ষ থেকে মেয়েটার পড়ার দায়িত্ব সরকার যদি নিজ উদ্যোগে নিত, তাহলে খুব ভালো হতো।’

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ:নভেম্বর ২৪, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ