Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

১৫০ মৃত্যুর বিশ্লেষণ-নিহত ১১৩ জন কম বয়সী, শিক্ষার্থী ৪৫ (২০২৪)

Share on Facebook

লেখা: রাজীব আহমেদ ও আহমদুল হাসান ঢাকা।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী বিক্ষোভ-সংঘর্ষে বেশি মৃত্যু হয়েছে শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষের। নিহত ব্যক্তিদের ৭৫ শতাংশ শিশু, কিশোর ও তরুণ।

হাসপাতাল, স্বজন ও মরদেহ নিয়ে আসা ব্যক্তিদের সূত্রে সংঘর্ষ-সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বয়স, পেশা ও আঘাতের ধরন এবং কোন এলাকায় আহত অথবা নিহত হয়েছিলেন, তার বিস্তারিত তথ্য পাওয়া গেছে ১৫০ জনের। এর মধ্যে ১১৩ জন শিশু, কিশোর ও তরুণ।

বিশ্লেষণে দেখা গেছে, নিহতদের বেশির ভাগের শরীরে প্রাণঘাতী গুলির ক্ষতচিহ্ন ছিল। ছররা গুলি বা প্যালেট, রাবার বুলেটের ক্ষতচিহ্ন এবং অন্যান্য আঘাত কম। মৃত্যুর কারণ ও গুলির ধরন নিশ্চিত করতে ময়নাতদন্ত দরকার। অনেক ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত হয়েছে, তবে প্রতিবেদন তৈরি হয়নি। অনেক ক্ষেত্রে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষ শুরু হয় ১৫ জুলাই। ওই দিন কারও মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। ১৬, ১৮, ১৯, ২০ ও ২১ জুলাই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে (১৭ জুলাই কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি)। এরপর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় অনেকের মৃত্যু হয়।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান গতকাল রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, সাম্প্রতিক সহিংসতায় এখন পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যুর সংবাদ তাঁদের হিসাবে রয়েছে। তাঁরা অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছেন। এরপর যদি মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে সংখ্যাটি বাড়তে পারে। তিনি বলেন, নিহতদের মধ্যে যাঁরা ছাত্র, তাঁদের মধ্যে ছাত্রলীগের ছেলেও রয়েছেন। বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার, বিভিন্ন বয়সের মানুষ রয়েছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিচয়ের মানুষও রয়েছেন। এসব বিষয় পরে বিস্তারিতভাবে জানানো যাবে।

সংঘর্ষ চলাকালে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আহত ও নিহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে এনেছিলেন বিক্ষোভকারী ও সাধারণ মানুষেরা। কিছু ক্ষেত্রে পুলিশও তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাঁরা অনেক ক্ষেত্রেই আহত ও নিহতের পরিচয়, বয়স ও পেশা সম্পর্কে জানতেন না। গত সাত দিনে এসব তথ্য জানতে প্রথম আলোর পক্ষ থেকে নিহত ব্যক্তিদের অনেকের স্বজনকে খুঁজে বের করে কথা বলা হয় এবং হাসপাতাল থেকে নথি সংগ্রহ করা হয়। এখন পর্যন্ত ১৫০ জনের ক্ষেত্রে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব হয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়
কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ হয়ফাইল ছবি
বিশ্লেষণে দেখা যায়, নিহতদের মধ্যে ১৯ জন শিশু ও কিশোর। এর মধ্যে চার বছর বয়সী শিশুও রয়েছে। ১৮ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে ৯৪ জন। ৩০ থেকে ৩৯ বছর বয়সী ২১ জন। ৪০ বা এর বেশি বয়স ১৬ জনের।

এই বিশ্লেষণে ১৮ বছরের কম বয়সীদের শিশু এবং ২৯ বছর পর্যন্ত বয়সীদের তরুণ হিসেবে ধরা হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) ১৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের যুবা হিসেবে উল্লেখ করে এবং সাধারণভাবে তাঁদের তরুণ বলা যায় বলে জানান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পপুলেশন সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ মঈনুল ইসলাম।

মৃত্যু বেশি হয়েছে ঢাকায়। ১৫০ জনের মধ্যে ৮৮ জনই ঢাকায় নিহত হয়েছেন। এরপর রয়েছে নরসিংদী (১৫), নারায়ণগঞ্জ (১৪), সাভার (৮), গাজীপুরসহ (৫) অন্যান্য জেলা।

বাংলাদেশে স্বাধীনতার আগে ও পরে গণ–আন্দোলনে শিক্ষার্থী ও তরুণেরাই বেশি অংশ নিয়েছেন এবং এবারও সেটাই হয়েছে বলে মনে করেন লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলন যখন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে গেল, তখন মানুষের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল। সর্বস্তরের মানুষ নেমে এসেছিলেন। তার মধ্যে কিছু লুটপাটকারী হয়তো ছিল, সেটা সব সময় থাকে। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে ঢালাওভাবে সন্ত্রাসের কথা বলা হচ্ছে। মানুষ ক্ষুব্ধ কেন, সেটার বিশ্লেষণ করা হচ্ছে না।

মহিউদ্দিন আহমদ আরও বলেন, যুদ্ধের সময় ছাড়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার আগে ও পরে কোনো আন্দোলনে এতটা নির্বিচারভাবে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার দেখা যায়নি। এত অল্প সময়ে এত মৃত্যুও কখনো হয়নি।

নিহত শিশুরা
নিহত চার বছর বয়সী শিশুটির নাম আবদুল আহাদ। ১৯ জুলাই রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর রাজারবাগে বাসার আটতলার বারান্দায় চোখে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায় সে। নারায়ণগঞ্জের রিয়া গোপের বয়স সাড়ে ছয় বছর। বাসার ছাদে খেলার সময় মাথায় গুলিবিদ্ধ হয় সে।

শিশু-কিশোরদের মধ্যে আরও আছে নারায়ণগঞ্জের হোসেন মিয়া (১০), মিরপুরের সামির (১১), যাত্রাবাড়ীর ইব্রাহিম (১৩), সাভারের সাদ মাহমুদ খান (১৪), নরসিংদীর তাহমিদ ভূঁইয়া (১৫), নারায়ণগঞ্জের ইমরান (১৬), ময়মনসিংহের সাগর (১৬) ও নরসিংদীর সুজন মিয়া (১৭)।

হোসেন মিয়ার বাবা হকার। নাম মানিক মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার এইটুকু একটা পোলা। তার শইল্যে দুইডা গুলি লাগছে। একটা গুলি তার তলপেট দিয়া ডুইক্কা আরেক দিক দিয়া বাইর অইচে, আরেকটা তার কোমরে ডুইক্কা গেছে। আমার পোলাডা কত কষ্ট না জানি পাইছে।’

প্রথম আলোর পক্ষ থেকে ১৫০ জনের মৃত্যুর তথ্য যেমন বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তেমনি ঢাকার ৩১টি হাসপাতাল ঘুরে আহত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, আহত ব্যক্তিদেরও বড় অংশ কিশোর ও তরুণ। ২৩ জুলাই জাতীয় অর্থোপেডিক ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (পঙ্গু হাসপাতাল) ক্যাজুয়ালটি-২ ওয়ার্ডে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ ৩৫ জন ব্যক্তি ভর্তি ছিলেন। তাঁদের মধ্যে কিশোর ও তরুণ ছিলেন ২৬ জন।

বিক্ষোভকারী, আহত ব্যক্তি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সূত্র বলছে, বিক্ষোভকালে কিশোর ও তরুণদের উপস্থিতিই বেশি ছিল। তাই তাঁদের মধ্যে হতাহত বেশি। আর বাসাবাড়িতে থেকে আহত হওয়ার কারণ গুলি। মৃত্যু বেশি হয়েছে পেটে, বুকে ও মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বাধ্য হলে সাধারণত পা লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এলোপাতাড়ি গুলির ঘটনাও ঘটে না। এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র।

ঢাকার বনশ্রীতে বাসার মধ্যে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন মায়া ইসলাম নামের এক নারী। বয়স ৬০ বছর। তাঁর ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ১৯ জুলাই বেলা সাড়ে তিনটার দিকে তাঁর মা বাসার ভেতরে মাথায় গুলিবিদ্ধ হন। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়।

শিক্ষার্থী ৪৫ জন
যে ১৫০ জনের মৃত্যু বিশ্লেষণ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে অন্তত ৪৫ জন শিক্ষার্থী, যা ৩০ শতাংশ। নিহতদের মধ্যে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন।

পাবলিক ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আবু সাঈদ (২২), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদয় চন্দ্র তরুয়া (২২), জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আহসান হাবীব তামিম (২৩), শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রুদ্র সেন (২২), মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন (২২), বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) মীর মাহফুজুর রহমান (মুগ্ধ-২৬), নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়ের আসিফ হাসান (২১), ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) জাহিদুজ্জামান তানভীন (২৩), সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ইমতিয়াজ আহমেদ (জাবির-২৩), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইরফান ভূঁইয়া (২১), মানারাত ইউনিভার্সিটির পারভেজ শাকিল (২২) প্রমুখ।

ঢাকায় কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক (২৩) ও জিহাদ হোসেন (২২) এবং ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ কর্মী সবুজ আলী (২৬) রয়েছেন নিহত শিক্ষার্থীদের মধ্যে।

নিহত স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকার রেসিডেনসিয়াল মডেল কলেজের একাদশ শ্রেণির ফারহান ফাইয়াজ (রাতুল-১৭), সরকারি মোহাম্মদপুর মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাহামুদুর রহমান (১৯), ইমপেরিয়াল কলেজের জিল্লুর শেখ (১৭), মাইলস্টোন কলেজের নাইমা সুলতানা (১৫), মাদারীপুর সরকারি কলেজের দীপ্ত দে (২১), সরকারি শহীদ আসাদ কলেজের ইমন মিয়া (২২) প্রমুখ।

কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হয়েছিল মূলত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে। ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজয় একাত্তর হলে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষ হয়। এরপর ছাত্রলীগের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালানো হয়। মারধর করা ছাত্রীদেরও। ১৬ জুলাই থেকে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভে অংশ নেন।

নিহতদের বড় অংশ শ্রমজীবী
নিহত ব্যক্তিদের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, তাঁদের বড় অংশই শ্রমজীবী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, দোকানকর্মী, গাড়িচালক, শ্রমিক ও স্বল্প আয়ের মানুষ।

১৫০ জনের মধ্যে দোকান, হোটেল, বিক্রয়কেন্দ্র ইত্যাদির কর্মী ২৫ জন, দোকানদার, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও হকার ১৬ জন, দিনমজুর ও সমজাতীয় পেশায় রয়েছেন ১১ জন, গাড়ি, ট্রাক, রিকশা-ভ্যানচালক ও সহকারী ১৩ জন এবং পোশাক কারখানার শ্রমিক ও কর্মী ৫ জন। চাকরিজীবী ও অন্যান্য পেশায় রয়েছেন ২৭ জন। এর মধ্যে একজন চিকিৎসক।

বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করছেন, শ্রমজীবী মানুষেরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ও অন্যান্য আর্থসামাজিক কারণে বিক্ষোভে নেমেছিলেন। বাংলাদেশে প্রায় দেড় বছর ধরে মূল্যস্ফীতি চড়া, ১০ শতাংশের কাছাকাছি।

নিহতের মধ্যে তিনজন পুলিশ সদস্য ও একজন আনসার সদস্যও রয়েছেন। পুলিশের পরিদর্শক (এসআই) এস এম মাসুদ পারভেজ ভূঁইয়া, উপপরিদর্শক (এএসআই) মুহাম্মদ মুক্তাদির ও নায়েক গিয়াস উদ্দিনের মৃত্যু হয়েছে আঘাতে। আনসার সদস্য জুয়েল শেখের বুকে গুলির ক্ষতচিহ্ন ছিল।

সাংবাদিক মারা গেছেন চারজন। তাঁরা হলেন দৈনিক নয়াদিগন্ত-এর সিলেট প্রতিনিধি এ টি এম তুরাব (ছররা গুলি), ঢাকা টাইমস-এর হাসান মেহেদী (ছররা গুলি), দৈনিক ভোরের আওয়াজ-এর শাকিল হোসেন (গুলি) ও ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক তাহির জামান (গুলি)।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে (১৫০ জনের হিসাব) সরাসরি রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত পাঁচজনকে পাওয়া গেছে। তাঁরা হলেন ঢাকা কলেজের ছাত্রলীগের কর্মী সবুজ আলী, নরসিংদীর মৎস্যজীবী লীগ নেতা টিপু সুলতান, যুবদলের বাউফল থানার আহ্বায়ক নবীন তালুকদার এবং চট্টগ্রাম কলেজের ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়াসিম আকরাম ও ছাত্রশিবিরের কর্মী ফয়সাল আহমেদ।

নিহত ব্যক্তিদের কারও কারও স্বজন দাবি করেছেন, সংঘর্ষকালে তাঁরা নানা প্রয়োজনে বেরিয়েছিলেন। সে সময় গুলি লাগে। পরিবারের উপার্জনক্ষম সদস্য হারিয়ে অনেক পরিবারই সংকটে পড়েছে।

উত্তরায় সংঘর্ষে নিহত জসিম উদ্দীন (৩৫) দুই সন্তানের বাবা। তাঁদের বাড়ি বরিশালের বানারীপাড়ায়। তাঁর ভাই নিজাম উদ্দিন বলেন, জসিম একটি গাড়ির দোকানের ব্যবস্থাপক ছিলেন। দোকানের মালিকের নির্দেশে যন্ত্রাংশ কিনতে বেরিয়ে তিনি সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান। তাঁর বুকে একটি গুলি লেগেছিল। মুখমণ্ডল ও শরীরে ছিল অসংখ্য রাবার বুলেটের ক্ষতচিহ্ন। নিজাম আরও বলেন, ‘আমরা যে গরিব, জীবনটা কীভাবে টিকিয়ে রাখব, সেই চিন্তায় দিন যায়, তারপর তো বিচার।’

‘প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার হয়েছে’
১৫০ জনের মৃত্যুর নানা দিক নিয়ে দুজন নিরাপত্তা বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে প্রথম আলো। তাঁদের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে বোঝা যাচ্ছে বিক্ষোভে কারা অংশ নিয়েছিলেন। দেখা যাচ্ছে, এতে সরাসরি রাজনৈতিক দলের কর্মীদের সংশ্লিষ্টতা কম ছিল। এতে বেশি সংখ্যায় অংশ নিয়েছিলেন শিক্ষার্থী ও নিম্ন আয়ের মানুষ।

অন্যদিকে বিক্ষোভ দমনে প্রাণঘাতী অস্ত্র (বুলেট বা গুলি) ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের কাছে অহরহ যেসব অস্ত্র দেখা যায়, তা চায়নিজ রাইফেল। এ ধরনের অস্ত্র সাধারণত সামরিক বাহিনী ও আধা সামরিক বাহিনী বিজিবির কাছে থাকে। আর্মড পুলিশের কাছেও থাকতে পারে। তবে সাধারণ পুলিশের কাছে থাকার কথা নয়। তিনি বলেন, যুদ্ধক্ষেত্র ছাড়া বিশ্বের কোথাও নিরস্ত্র মানুষের বিক্ষোভ দমনে এভাবে প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার দেখা যায় না।

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম, রংপুর, বগুড়া, সাভার এবং প্রতিনিধি, সিলেট, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, চাঁদপুর ও মাদারীপুর]

সূত্র: প্রথম আলো।
তারিখ: জুলাই ২৯, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ