Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

হায় ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ক্যাপিটল হিলে হামলা ! (২০২১)

Share on Facebook

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে ২০১৬ সাল থেকে ২০২০ সাল সময়টা এমনিতেই স্মরণীয় হয়ে থাকত। কিন্তু একে চিরস্মরণীয় করে রাখতে অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ধসিয়ে দিয়ে সে কাজটিও তিনি সেরে ফেলেছিলেন। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট হননি তিনি। সন্তুষ্ট যে হননি, তারই রূপ ৬ জানুয়ারি দেখল গোটা বিশ্ব। মার্কিন গণতন্ত্রের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত ক্যাপিটল হিলের দেয়াল ডিঙিয়ে, দরজা ভেঙে, জানালার কাচ গুঁড়িয়ে সারে সারে লোক ঢুকে পড়লেন কংগ্রেসের অধিবেশন কক্ষে, যেখানে উভয় কক্ষের আইনপ্রণেতারা বসেছিলেন গত নভেম্বরের নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ের প্রত্যয়ন করতে। আতঙ্কিত আইনপ্রণেতা, সাংবাদিক ও অন্য কর্মকর্তাদের নিরাপত্তাপ্রহরীদের সহায়তায় পাশের ভবনে গিয়ে আশ্রয় নিতে হলো। গোটা বিশ্ব বিস্মিত হয়ে দেখেছে গণতন্ত্রের ফেরিঅলা রাষ্ট্রটির গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে তারই প্রেসিডেন্টের সমর্থকদের পদদলিত করার ঘটনাটি। কিন্তু এতে কি আদৌ বিস্ময়ের কিছু আছে?

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার্কিন নির্বাচনের আগে-পরের আচরণ ছিল অসংযত। ভোটের ফল তাঁর পক্ষে না এলে তিনি যে তা মানবেন না, তা আগে থেকেই বলে আসছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তিনি মানেনওনি। এমনকি গতকাল জর্জিয়ায় সিনেট নির্বাচনে নিজের দুই প্রার্থী হেরে যাওয়ার পরও তা মানতে চাননি। নির্বাচনের বহু আগেই ‘প্রাউড বয়েজের’ মতো নিজের কট্টর সমর্থক গোষ্ঠীগুলোকে প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। এমনকি তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে নির্বাচনের দিন ভোটকেন্দ্র পাহারাও দিয়েছে তাঁর সমর্থকেরা। নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর সহিংসতায় জড়িয়েছে তারা। সে সময়ও প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প একবারের জন্যও তাদের নিরস্ত করতে কোনো কথা বলেননি। বরং বারবার নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির ভুয়া দাবি তুলে গেছেন। একের পর এক মিথ্যা বলেছেন। আর এ সবই চুপ হয়ে দেখেছেন রিপাবলিকান শীর্ষ নেতারা। মিট রমনির মতো গুটিকয় নেতা ছাড়া কেউ তাঁর এসব আচরণের বিরোধিতা করেননি।

এরই ফল দেখল যুক্তরাষ্ট্রসহ গোটা বিশ্ব। ওয়াশিংটনে মার্কিন কংগ্রেসের ক্যাপিটল ভবনে ২০৬ বছর পর প্রথম হামলার ঘটনা ঘটল, যা এর আগে ১৮১৪ সালে হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে যুদ্ধের সময়। ‘ওয়ার অব ১৮১২’ নামে পরিচিতি এ যুদ্ধ ১৮১২ সালের জুনে শুরু হয়ে শেষ হয় ১৮১৫ সালে। সেই যুদ্ধে ব্রিটিশ বাহিনী হামলা করেছিল ক্যাপিটল হিলে। এর ২০৬ বছর পর এমন ন্যক্কারজনক ঘটনা ঘটল খোদ মার্কিনদের হাতেই; কোনো যুদ্ধ পরিস্থিতি ছাড়াই। এ হামলার জেরে ওয়াশিংটনে জারি করতে হলো কারফিউ। ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ওয়াশিংটনে জরুরী অবস্থা জারি থাকবে।

ইলেকটোরাল ভোট প্রত্যয়নের এই আনুষ্ঠানিকতার সময় ট্রাম্প সমর্থকেরা কেন ক্যাপিটল হিলের বাইরে এসে সমবেত হলেন? উত্তর, ট্রাম্প নিজেই তাদের ডেকে এনেছেন। তিনিই বলেছেন, সর্বোচ্চ প্রতিরোধের কথা। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ ডিসেম্বর এক টুইটে লেখেন, ‘পরিসংখ্যানগত দিক থেকে ২০২০-এর নির্বাচনে হার মেনে নেওয়াটা অসম্ভব। ৬ জানুয়ারি ওয়াশিংটন ডিসিতে বড় বিক্ষোভ। সেখানে আসুন। ঝোড়ো বিক্ষোভ হবে!’ আর ৬ জানুয়ারি সেই বিক্ষোভে তিনি বলেছেন, ‘আমরা কখনো হাল ছাড়ব না, কখনো পরাজয় মানব না।’ ডেমোক্র্যাটদের বিজয়কে ‘বাজে কথা’ আখ্যায়িত করে সমর্থকদের উসকে দেন তিনি।

পরের দৃশ্যগুলো এখন সবারই জানা। ট্রাম্পের উত্তেজিত সমর্থকেরা মিছিল করে ক্যাপিটল ভবনে ঢুকে পড়েন। পুলিশের প্রতিবন্ধকতা ডিঙিয়ে ঝোড়ো গতিতে একেবারে ভবনের ভেতর আইনপ্রণেতাদের অধিবেশনকক্ষে ঢুকে পড়েন। তাঁদের তাণ্ডবে সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায় যৌথ অধিবেশন। পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হন চারজন। গ্রেপ্তার করা হয় অর্ধশতাধিক। ট্রাম্প সমর্থকদের সরিয়ে যৌথ অধিবেশন বসে রাতে। সেখানে অ্যারিজোনা, পেনসিলভানিয়া, মিশিগানসহ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যের ভোটের ফলকে প্রতিনিধি পরিষদের কয়েকজন সদস্য চ্যালেঞ্জ জানালেও তা আর ধোপে টেকেনি। বাইডেনের বিজয়কে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিল কংগ্রেস। এর পরপরই ট্রাম্প বলেন, ‘যদিও নির্বাচনের ফলাফলে আমি খুবই হতাশ; তারপরও ২০ জানুয়ারি নিয়মতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে।’

এই হলো মোটাদাগে এবং এক লহমায় ৬ জানুয়ারির ক্যাপিটল হিল। কিন্তু ক্যাপিটল হিল যখন আক্রান্ত তখন কী করছিলেন ট্রাম্প? ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প, মেয়ে ইভানকা ও মেয়ে-জামাই জ্যারেড কুশনারসহ ঘনিষ্ঠ শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে হোয়াইট হাউসে বসে ট্রাম্প তখন ক্যাপিটল হিলে তাণ্ডব দেখছেন। জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা যখন তাঁকে এই হামলার নিন্দা জানানোর অনুরোধ করছেন, তখনো তিনি নিজের সমর্থকদের সাফাই গেয়ে বলছেন, ‘তাদের অধিকাংশই শান্তিপূর্ণ। গ্রীষ্মে হওয়া দাঙ্গা নিয়ে কী বলবেন? অন্য পাশকে নিয়ে কী বলবেন? তারা যখন দাঙ্গা করছিল, তখন কেউ কিছু বলেনি। আমার লোকেরা শান্তিপূর্ণ। আমার লোকেরা ডাকাত নয়।’

উপদেষ্টারা ট্রাম্পকে বারবার অনুরোধ করলেও তিনি তাঁর সমর্থকদের নিরস্ত করতে কোনো পদক্ষেপ নিতে রাজি হননি। এমনকি ফক্স নিউজের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার অনুরোধও তিনি ফিরিয়ে দেন। পরে তিনি টুইট করতে রাজি হন। এবং উপদেষ্টাদের অনুরোধে একটি ভিডিও ধারণে সম্মত হন, যা পরে টুইটারে প্রচার করা হয়। কিন্তু সেই বার্তাতেও তিনি তাঁর ভুয়া অভিযোগগুলো উত্থাপন করলেন। হামলা ও সহিংসতায় ক্যাপিটল অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর করা টুইটে তিনি বিক্ষোভকারীদের ‘শান্ত থাকা উচিত’ বলে মন্তব্য করেন। আর ভিডিওতে অভিযোগের পুনরাবৃত্তি করে তিনি বলেন, ‘আমি জানি, আপনারা ব্যথিত। আমাদের এমন এক নির্বাচন হয়েছে, যেখানে আমাদের কাছ থেকে বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।’ আরেক বার্তায় তিনি তাঁর উন্মত্ত সমর্থকদের ‘মহান দেশপ্রেমী’ আখ্যায়িত করেন।

এটা কি নতুন ঠেকছে? না, কোনোভাবেই নতুন লাগার কথা নয়। যাদের মনে আছে ২০১৭ সালের শার্লোৎসভিলের ঘটনা, তারা অন্তত বলবেন ট্রাম্প এমনই। সে সময় ট্রাম্প উগ্র শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদীদের করা হামলার ক্ষেত্রেও অনুরূপ ভূমিকা নিয়েছিলেন। শার্লোৎসভিলের হামলায় জড়িতদের তিনি ‘বীর’ বলতেও কুণ্ঠিত হননি। আর এই তো কিছুদিন আগের ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের দিকে তাকালে দেখা যাবে, একই আচরণ করছেন ট্রাম্প। নিজের উগ্র সমর্থকদের সহিংসতা বন্ধে কোনো পদক্ষেপ এমনকি তাদের নিরস্ত করতে একটি বাক্যও ব্যয় না করে ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার আন্দোলনকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া সহিংসতা দমনে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের কথা বলেছিলেন তিনি। যদিও এই সহিংসতার পেছনেও তাঁর হাত রয়েছে বলে মনে করা হয়।

এই প্রতিটি পর্যায়েই ট্রাম্পের উগ্র ও বর্ণবাদী চরিত্রটির মাত্রা সম্পর্কে সবাই ধারণা পেয়েছিল। কিন্তু রিপাবলিকান নেতৃত্ব তাকে আমলে নেয়নি। মার্কিন আইন ও সংবিধানকে প্রতিনিয়ত বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যাওয়া ট্রাম্পের পাশেই বরং থেকেছে বরাবর। সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের নেতা মিচ ম্যাককনেলসহ বহু জ্যেষ্ঠ নেতা ট্রাম্পের পক্ষে শেষ দিন পর্যন্ত ছিলেন। এখন তাঁরা সটকে পড়ছেন। ট্রাম্প ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত অনেকেই নৈতিকতা-গণতন্ত্র ইত্যাদি নানা বিষয়ের উল্লেখ করে ট্রাম্পের সঙ্গ ত্যাগ করছেন। হামলার পর ট্রাম্পের সঙ্গ ছাড়ার তালিকায় একেবারে প্রথমেই আছেন হোয়াইট হাউসের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি সারাহ ম্যাথিউস। মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের চিফ অব স্টাফ এবং ট্রাম্পের সাবেক প্রেস সচিব স্টেফানি গ্রিশামও পদত্যাগ করেছেন। একইভাবে উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে হোয়াইট হাউসের তিন জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা পদত্যাগ করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে।

এ তো গেল সঙ্গ-ত্যাগের বিষয়। ক্ষমতা থেকে ট্রাম্পকে অপসারণের বিষয়ে মন্ত্রিসভা আলোচনায় বসেছে বলেও খবর বেরিয়েছে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক কর্মকর্তা প্রেসিডেন্টের ট্রাম্পের আচরণকে ‘দানবীয়’ আখ্যা দিয়েছেন। এটা কতটা দানবীয়, তা বোঝা যাবে আইনপ্রণেতাদের মধ্যে বিরাজমান শঙ্কার দিকে তাকালে। তাঁরা মনে করছেন, বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগের এই দুই সপ্তাহ সময়টিও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে যদি ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকেন। তাঁরা মনে করছেন, এই সময়ে ট্রাম্প এমন অনেক কিছুই করতে পারেন, যা যুক্তরাষ্ট্রকে এক ভয়াবহ সহিংসতার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে তাঁরা মার্কিন সংবিধানের ২৫তম সংশোধনীর দিকে তাকাচ্ছেন। এই সংশোধনী অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট যদি তাঁর ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনে অসমর্থ বলে বিবেচিত হন, তাহলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ও মন্ত্রিসভার সদস্যরা তাঁকে অপসারণ করতে পারেন। এ প্রক্রিয়ায় ভাইস প্রেসিডেন্টকে নেতৃত্ব দিতে হয়। এরই মধ্যে বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রিসভায় আলোচনা হয়েছে। তাঁরা ট্রাম্পকে ‘নিয়ন্ত্রণহীন’ বলে বর্ণনা করেছেন।

কিন্তু ট্রাম্পের এই প্রবণতা কি নতুন। সহিংসতা তৈরির ক্ষমতা ও ইচ্ছার প্রদর্শন কি তিনি এই প্রথম করলেন। ক্ষমতা থেকে অপসারণের সুযোগ কি এই প্রথম এল? প্রতিটি প্রশ্নের উত্তরই, না। অথচ রিপাবলিকান নেতারা এত দিন এই প্রশ্নগুলোকে আমলেই নেননি। যে উগ্রবাদ ট্রাম্প ছড়িয়েছেন, তা থেকে ভোটের মাঠে সুবিধা নিতে চেয়েছেন তাঁরা। ট্রাম্পের এমন একচেটিয়া হয়ে ওঠা, মার্কিন প্রেসিডেন্সিকে বাদশাহি মসনদে রূপান্তরিত করা ট্রাম্পের নির্মাণ কি তাঁরাও করেননি? ট্রাম্প যখন একের পর এক বিতর্কিত কাজ করছিলেন, যখন মার্কিন গণতান্ত্রিক কাঠামোর প্রতিটি ভিতে একের পর এক আঘাত করছেন, তখনো তাঁরা কিছু করেননি। এমনকি ২০১৬ নির্বাচনের রুশ সংশ্লিষ্টতার তদন্ত এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টকে বাইডেনের বিরুদ্ধে তদন্ত চালানোর অনৈতিক চাপ প্রয়োগের জেরে যখন তাঁর বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রস্তাব উঠল, তখন তাবৎ প্রমাণকে তাঁরা এক ঝটকায় উড়িয়ে দিয়ে ট্রাম্পের পাশেই দাঁড়ালেন। ফলে আজকের এই বাস্তবতার নির্মাতা ট্রাম্প একা নন। রিপাবলিকান দলের নেতাদের অদূরদর্শী ও ক্ষমতার মোহই ট্রাম্পের ভেতরে সব সময় থাকা ও অনেকাংশেই দৃশ্যমান দানবটিকে পেলে-পুষে বড় করেছে। আগামী কয়েক বছর নিশ্চিতভাবেই এর দায় শোধ করতে হবে দলটিকে।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: জানুয়ারী ০৮, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

,

ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪,সোমবার

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ