Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

হাসিনার গোপন কারাগার ‘আয়নাঘরের’ বর্ণনা দিলেন গুম হওয়া ব্যারিস্টার (২০২৪)

Share on Facebook

নিজের ক্ষমতাকে দীর্ঘস্থায়ী করতে ভিন্ন মতালম্বীদের কঠোরভাবে দমন করেছিলেন বাংলাদেশের সদ্য ক্ষমতাচ্যুত নেতা শেখ হাসিনা। তার শাসনামলে গুম, খুন অনেকটাই স্বাভাবিক রীতি নীতিতে পরিণত হয়েছিল। ২০১৬ সালে জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আহমদ বিন কাসেমকে গুম করা হয়। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ‘আয়নাঘর’ নামে পরিচিত হাসিনার গোপন কারাগারে। যেখানে তিনি দীর্ঘ ৮ বছর বন্দী ছিলেন। বার্তা সংস্থা এএফপির বরাতে লুক্সেমবার্গভিত্তিক গণমাধ্যম আরটিএল আহমদ বিন কাসেমের সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করেছে।
এতে বলা হয়েছে, চোখ বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে ব্যারিস্টার আহমদকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল হাসিনার ওই গোপন কারাগার থেকে। বের হওয়ার সময় তিনি গুলির আওয়াজ শুনে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এমনভাবে আহমদকে বের করা হয়েছিল যেন তিনি শ্বাস রোধ হয়ে মারা যাচ্ছিলেন। পরে তিনি টের পেলেন কর্দমাক্ত একটি ময়লা খাদে তাকে ফেলে দেয়া হয়েছে। তখনও তিনি জানতে পারেননি এক ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা এবং আহমদ সম্পূর্ণরূপে মুক্তি পেয়েছেন।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে ৪০ বছর বয়সী আহমদ বলেছেন, আট বছরের মধ্যে তিনি কোনো প্রাকৃতিক আলো-বাতাসের ছোঁয়া পাননি।

তিনি ভেবেছিলেন তারা তাকে হত্যা করবে। তিনি এটাও জানতেন না তাকে হাত, চোখ বেঁধে নিয়ে আসার মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। ৫ আগস্ট ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের পর হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। এই দিনও গুম হওয়া আহমদ অন্ধকার সেই আয়নাঘরেই ছিলেন। সেনাবাহিনীর গোয়েন্দারা ছাড়া ওই গোপন কারাগারের খবর কেউই জানতেন না। বন্দী ছাড়া কারো সাথে যোগাযোগের কোনো উপায় সেখানে ছিল না বলে জানিয়েছেন আহমদ। দীর্ঘ ৮ আট বছর তিনি সেখানে একটি কক্ষে আটক ছিলেন। আয়নাঘর সম্পর্কে যেন কেউ কোনো তথ্য না পায় সে বিষয়ে গোয়েন্দারা কঠোর নীতি অনুসরণ করতেন।

আহমদ বলেছেন, তিনি আয়নাঘর থেকে বাহিরের আযান শুনতে পেতেন। সেখানে উচ্চ আওয়াজে মিউজিক বাজানো হতো। মূলত আজান শুনে শুনে দিন রাতের পার্থক্য করতেন আহমদ। তবে সেখানে তিনি ঠিক কত দিন অতিবাহিত করেছেন সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো ধারণা তার ছিলনা। মিউজিক বন্ধ হলেই তিনি অন্য বন্দীদের চিৎকার শুনতে পেতেন। আহমদ বলেছেন, ধীরে ধীরে আমি বুঝতে পারি সেখানে আমি একা নই। আমি সেখানে প্রতিনিয়ত অন্য বন্দীদের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেতাম। সম্ভবত সেখানে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে বন্দীরা চিৎকার করত।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তথ্যমতে, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর হাসিনা ছয় শতাধিক লোককে জোরপূর্বকভাবে গুম করেছে। ২০২২ সালে একটি গণমাধ্যমে আয়নাঘর সম্পর্কে খবর প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত হাসিনার ওই গোপন কারাগার সম্পর্কে মানুষের কোনো ধারণাই ছিলনা। আয়নাঘর নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর হাসিনা সরকার তা অস্বীকার করেছিল। এছাড়া তারা গুমের বিষয়টিও অস্বীকার করে আসছিল। সেসময় বলা হয়েছিল যারা নিখোঁজ হয়েছে তারা অবৈধ উপায়ে ইউরোপে পারি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে প্রাণ হারিয়েছেন।

আহমদের বাবা জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। যে বছর মীর কাসেম আলীকে ১৯৭১ সালে মানবতা বিরোধী অপরাধের দায়ে ফাঁসি কার্যকর করে হাসিনা প্রশাসন সেবছরই আহমদকে গুম করা হয়েছিল। সরকার জামায়াতের ওই নেতাকে মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির কথা বললেও এ নিয়ে বেশ মতবিরোধ রয়েছে। বিশ্লেষকদের কেউ কেউ বলেছেন হাসিনা বিরোধী মতকে দমন করতে বিচারিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে মীর কাসেম আলী সহ জামায়াতের অন্যান্য নেতাদের ফাঁসি কার্যকর করেছে। কাসেম আলী দোষী কিনা এ বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য সেসময় আদালতের বিচারিক কার্যে কোনো আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দল জড়িত ছিলনা। আহমদ তার বাবার বিচারিক কার্যক্রমে আইনি লড়াই করতে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছিলেন। তখন তার বয়স ছিল ৩২ বছর। সেসময় ট্রইব্যুনালের বিভিন্ন পদ্ধতিগত ত্রুটি এবং বিচারিক পক্ষপাতের বিষয়ে গণমাধ্যম এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থার রিপোর্টে উঠে আসে।

এক রাতে সাদা পোশাকধারী কয়েকজন আহমদের বাড়িতে প্রবেশ করে এবং তার পরিবারের কাছ থেকে তাকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তাকে সিঁড়ি দিয়ে টেনে নামিয়ে একটি গাড়িতে তোলা হয়। আহমদ বলেছেন, আমি কখন স্বপ্নেও আমার এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির কথা ভাবতে পারিনি। আমি বুঝতে পারিনি বাবার ফাঁসির কয়েক দিন আগে আমাকে এভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া হবে। ‘আমি তখন বারবার তাদের বলছিলাম আপনারা কি জানেন আমি কে? মামলা পরিচালনার জন্য আমাকে বাবার ওখানে থাকতে হবে।’ আহমদকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চার সপ্তাহ পর কাসেম আলীর ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

আহমদকে কর্দমাক্ত নর্দমায় ফেলে যাওয়ার পর তিনি তার বাড়ির পথ খোঁজার চেষ্টা করছিলেন। পরে তিনি তার বাবার প্রতিষ্ঠিত একটি হাসপাতালের খোঁজ পান এবং সেখানে যেয়ে তিনি তার পরিচয় দেন। হাসপাতালটির এক স্টাফ তার পরিচয় শনাক্ত করতে পেরে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেন। হাসপাতালে উপস্থিত লোকজনের কথা শুনে আহমদ জানতে পারেন সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র আন্দোলনের কথা। যার ফলে তিনি মুক্তি পেয়েছেন। আহমদ বলেছেন, দেশের তরুণদের কারণে আমি মুক্তি পেয়েছি। আমি যখন এই তরুণদের দেখি যে তারা দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছে, তখন আমি বাংলাদেশের সঠিক গন্তব্য সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারি। আহমদ পরিবারের কাছে ফিরে আসলেও তার মানসিক অবস্থা এখনও খারাপ বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

সূত্র:মানবজমিন।
তারিখ: আগষ্ট ১৪, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ