Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

হাসিনাকে প্রত্যর্পণে ঢাকার অনুরোধকে কেনো গুরুত্ব দিচ্ছে না ভারত? (২০২৪)

Share on Facebook

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে প্রত্যর্পণের ‘অনুরোধ’ বা ‘দাবি’ যে আসবে, তা একরকম জানাই ছিল। অবশেষে সেটা এলো শেখ হাসিনার ভারতে পদার্পণের ঠিক চার মাস ১৮ দিনের মাথায়!

গত ২৩ ডিসেম্বর সকালে দিল্লির চাণক্যপুরীতে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে সেই বার্তা ‘নোট ভার্বাল’ আকারে তুলে দেওয়া হলো সাউথ ব্লকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হাতে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা বা নীতিনির্ধারকরা বেশ কিছুদিন ধরেই আকারে ইঙ্গিতে বা খোলাখুলি বলে আসছিলেন যে, তারা ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবেন। যাতে তাকে ‘গণহত্যা’র জন্য বিচারের কাঠগড়ায় তোলা যায়।

কিন্তু যে কোনো কারণেই হোক, আনুষ্ঠানিকভাবে সে বার্তা বা চিঠি কিন্তু দিল্লির কাছে পাঠানো হচ্ছিল না।অবশেষে সেটা যখন এলো, তখন তা এলো নোট ভার্বালের আকারে।

নোট ভ‍ার্বাল হলো- দুই দেশের সরকারের মধ্যে এক ধরনের ‘ডিপ্লোম্যাটিক কমিউনিকেশন’ বা কূটনৈতিক যোগাযোগের মাধ্যম। তবে তাতে প্রেরকের কোনো স্বাক্ষর থাকে না।

নোট ভার্বালের রীতি অনুযায়ী, ধরেই নেওয়া যায় এ ক্ষেত্রেও বার্তাটি পাঠানো হয়েছে দিল্লির বাংলাদেশ দূতাবাসের লেটারহেডে এবং তাতে হাই-কমিশনের রাবারস্ট্যাম্পও ছিল।

বার্তাটি হাতে আসার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই দিল্লির পক্ষ থেকে প্রকাশ্যে সেটির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়।তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এটাও জানিয়ে দেন যে, তাদের এ বিষয়ে এখনই কিছু বলার নেই!

এরপর আরও কয়েকদিন কেটে গেছে। দিল্লির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো প্রতিক্রিয়া যেমন দেওয়া হয়নি, তেমনি বাংলাদেশকে নোট ভার্বালের কোনো জবাবও পাঠায়নি ভারত।

বস্তুত, ভারত সরকারের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সূত্র দিল্লিতে বিবিসি বাংলাকে আভাস দিয়েছেন যে, তারা এই অনুরোধকে আদৌ খুব একটা আমলে নিচ্ছেন না।

এমনকি বাংলাদেশ সরকারও যে খুব একটা গুরুত্বের সঙ্গে অনুরোধটা করেছে, তেমনটাও মনে করছেন না ভারতের কর্মকর্তারা।

তারপরেও এই বার্তার জবাব নিশ্চয়ই দেওয়া হবে। কিন্তু তার জন্য দিল্লি কোনো ধরনের তাড়াহুড়ো করবে না বলেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

কেনো ভারত সরকার ওই নোট ভার্বাল নিয়ে এরকম মনোভাব পোষণ করছে? কর্মকর্তা এবং বিশ্লেষকদের সঙ্গে কথা বলে তার কারণগুলোই অনুসন্ধান করা হয়েছে এই প্রতিবেদনে।

‘সাক্ষ্যপ্রমাণ কোথায়?’

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যদিও দাবি করছে যে, শেখ হাসিনাকে ফেরানোর প্রচেষ্টাকে তারা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। তবে ভারত মনে করছে তাদের বার্তা পাঠানোটা একটা ‘দায়সারা পদক্ষেপে’র চেয়ে বেশি কিছু নয়!

দিল্লিতে শীর্ষস্থানীয় একজন সরকারি কর্মকর্তা বিবিসিকে বলছিলেন, ‘সত্যিই যদি বাংলাদেশ এই ব্যাপারটা নিয়ে সিরিয়াস হতো, তাহলে তারা শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগগুলো এবং তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণসহ বিবরণ পেশ করত। মানে যেমনটা একটা চার্জশিটে থাকে!’

‘এক-দু’পাতার একটা নোটে যে সেটা থাকতে পারে না, তা তো বলাই বাহুল্য!’

অর্থাৎ, বাংলাদেশ সরকার আসলে তাদের দেশের মানুষকে এটা দেখাতে চাইছে যে, তারা ভারতের কাছে প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানিয়ে দিয়েছে এবং ফলে ‘বল এখন ভারতের কোর্টে– আমাদের এখন আর কিছু করার নেই!’

ভারতের একজন সাবেক কূটনীতিবিদের কথায়, ‘আমার তো মনে হচ্ছে বাংলাদেশ এই পদক্ষেপের মাধ্যমে যেন একটা বক্সে টিক দিয়ে দায়িত্ব সারলো- আমাদের প্রত্যর্পণের অনুরোধ জানানোর কথা ছিল, জানিয়ে দিয়েছি, ব্যাস!’

কিন্তু ভারত যে শেখ হাসিনাকে বিচারের জন্য হস্তান্তর করবে– বাস্তবে এরকম সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই বাংলাদেশ হয়তো সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালায়নি। এমনটাও ধারণা করছেন তিনি।

প্রকৃত কারণটা যাই হোক, নোট ভার্বালে যে যুক্তি দেখিয়ে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে, (জুলাই-অগাস্ট গণহত্যার বিচারের জন্য তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে) সেটাকে ভারত আসলে জোরালো কোনো দাবি বলে মনেই করছে না!

‘কারণটা হলো- কোনো সাক্ষ্যপ্রমাণ ছাড়া এ অভিযোগ জানানোর অর্থ- এ বার্তার চরিত্র পুরোপুরি রাজনৈতিক’।

ভারতীয় ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘এখন দু’দেশের প্রত্যর্পণ চুক্তিতেই পরিষ্কার বলা আছে- রাজনৈতিক অভিযোগে অভিযুক্ত কোনো ব্যক্তিকে হস্তান্তর করা যাবে না। ফলে শেখ হাসিনার ক্ষেত্রেও নিশ্চয়ই সেই যুক্তিই প্রযোজ্য হবে’।

‘লেটার রোগেটরি দিলেও না হয় হতো!’

কোনো দেশের সঙ্গে ভারতের প্রত্যর্পণ চুক্তি বা বিশেষ কোনো ব্যবস্থা বা অ্যারেঞ্জমেন্ট থাকলে, সেই দেশের কোনো নাগরিককে ভারত তাদের হাতে তুলে দিতে পারে– যদি তিনি একজন ‘ফিউজিটিভ ক্রিমিনাল’ তথা এফসি বা পলাতক আসামি হন।

এখন কোন কোন শর্তের অধীনে ভারত একজন ‘এফসি’-কে তার নিজ দেশের হাতে তুলে দিতে পারে, তার নিয়মকানুন খুব স্পষ্ট এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও তার পুরোটাই উল্লেখ করা আছে।

এইসব রীতিনীতি কিছুটা নির্ভর করে, বিশেষ ওই দেশের সঙ্গে প্রত্যর্পণ চুক্তির বিশেষ ধারার ওপর।

তবে মূল ধারাটা সব দেশের ক্ষেত্রেই এক। আর তা হলো- যাকে ফেরত চাওয়া হচ্ছে, তাকে কোনো ‘প্রত্যর্পণযোগ্য অপরাধ’র মামলায় পলাতক আসামি হতে হবে।

এখন শেখ হাসিনা যখন ভারতে এসে নামেন, তখন তিনি কিন্তু কোনো পলাতক আসামি বা এফসি ছিলেন না।

ভারতের সাবেক শীর্ষস্থানীয় কূটনীতিবিদ পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী এ যুক্তি দেখিয়েই বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘মনে রাখতে হবে, ৫ অগাস্ট তারিখেও শেখ হাসিনার নামে সে দেশে কোনো মামলা ছিল না। ফলে ভারত যখন তাকে আতিথেয়তা দিচ্ছে, সেই মুহূর্তে তিনি কিন্তু কোনো পলাতক আসামি নন’।

পিনাকরঞ্জন আরও যুক্তি দেন, ‘এখন শেখ হাসিনা দেশ ছাড়ার পর যদি তার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে শত শত মামলা একসঙ্গে দায়ের করা হতে থাকে, তাহলে এটা মনে করার যথেষ্ঠ কারণ থাকতে পারে যে, এগুলো রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক– যার ভিত্তিতে প্রত্যর্পণের কোনো প্রশ্নই ওঠে না’।

তাহলে কি ধরেই নেওয়া যেতে পারে যে, অনুরোধ যে আকারেই আসুক বা যতই জোরালো সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করা হোক– ভারত কোনো অবস্থাতেই শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে না?

জবাবে পিনাকরঞ্জন চক্রবর্তী বলছেন, ‘না, বিষয়টা ঠিক সেরকম নয়। যদি সব নিয়ম মেনে এবং আঁটঘাট বেঁধে ভারতের কাছে এই অনুরোধ জানানো হয়, তাহলে ভারত নিশ্চয়ই সেটা বিবেচনা করবে’।

ভারতের সাবেক এই হাই কমিশনারের ধারণা, এ ক্ষেত্রে একটি নোট ভার্বালের চেয়ে হয়তো অনেক বেশি কার্যকরী হতো একটি ‘লেটার রোগেটরি’।

ল্যাটিন শব্দ ‘রোগাটোরিয়াস’ কথার অর্থ হলো- তথ্য জানতে চাওয়া। আর ‘লেটার রোগেটরি’ হলো- এক দেশের আদালত যখন অন্য দেশের আদালতের কাছে কোনো বিষয়ে আইনি সহায়তা চেয়ে চিঠি দেয়।

সেটা কোনো অভিযুক্তের বিরুদ্ধে সাক্ষ্যপ্রমাণ হতে পারে, কিংবা আইনি প্রক্রিয়ায় সাহায্য করার অনুরোধ হতে পারে।

সুতরাং এক্ষেত্রে বাংলাদেশের আদালত বা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল যদি ভারতের বিচার বিভাগের কাছে (সুপ্রিম কোর্ট) শেখ হাসিনার বিচার প্রক্রিয়ায় সহায়তা চেয়ে কোনো চিঠি দিতো (লেটার রোগেটরি), সেটার প্রভাব এই ‘দায়সারা’ নোট ভার্বালের চেয়ে অনেক বেশি হতো বলে মনে করছেন ভারতের কোনো কোনো পর্যবেক্ষক।

তবে এ ধরনের কোনো চিঠি পাঠানোর আগে সংশ্লিষ্ট বিচার প্রক্রিয়াতেও যথেষ্ঠ অগ্রগতি হওয়া দরকার। শেখ হাসিনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে তা এখনো আদৌ হয়েছে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ আছে দিল্লির।

‘আগে নিজেদের সেনাবাহিনীকে জিজ্ঞেস করুন’

বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধ ভারতের তেমন একটা আমলে না নেওয়ার বড় কারণ হলো- তার দেশ ছাড়ার পেছনে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন।

তারা বলছেন, শেখ হাসিনা যে বাংলাদেশের সেনাবাহিনীর ‘প্রচ্ছন্ন সমর্থনেই’ নিরাপদে দেশ ছাড়তে পেরেছিলেন, বা একটা ‘সেফ প্যাসেজ’ পেয়েছিলেন– তা এখন আর কোনো গোপন তথ্য নয়।

ভারতের শাসক দল বিজেপির ঘনিষ্ঠ পররাষ্ট্র নীতি বিশেষজ্ঞ শুভ্রকমল দত্ত বিবিসিকে বলেন, ‘ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়ার আগে আমি তো বলবো ড. ইউনূস সরকারের উচিত তাদের নিজেদের সেনাবাহিনীর কাছে জবাবদিহি চাওয়া। কেন তারা শেখ হাসিনাকে ভারতে যেতে দিল?

বস্তুত, শেখ হাসিনা গত ৫ অগাস্ট বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর একটি মিলিটারি এয়ারক্র্যাফটে করেই দিল্লির কাছে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে এসে অবতরণ করেন।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শংকর এর পরদিনই অর্থাৎ ৬ অগাস্ট পার্লামেন্টে জানান, শেখ হাসিনাকে বহনকারী বিমানটি যাতে দিল্লিতে এসে নামতে পারে, তার জন্য বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর তরফে ভারতের কাছে আগাম অনুমতি বা ‘ফ্লাইট ক্লিয়ারেন্স’ও চাওয়া হয়েছিল।

সেই ঘটনার পর থেকে আজ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তনও হয়নি। তখনও বাহিনীর প্রধান ছিলেন জেনারেল ওয়াকার উজ জামান, এখনো তিনিই সেনাপ্রধান আছেন।

শুভ্রকমল দত্ত বলেন, ‘ফলে, যে পরিস্থিতিতেই শেখ হাসিনা ভারতে এসে থাকুন, তার পেছনে বাংলাদেশের বর্তমান সেনা নেতৃত্বের একটা সক্রিয় ভূমিকা অবশ্যই ছিল। যা অস্বীকার করা কঠিন’।

তার কথায়, ‘বাস্তবিক শেখ হাসিনা এখন আমাদের অতিথি হতে পারেন, কিন্তু এটাও মনে রাখতে হবে- তাকে কিন্তু আমরা নিজে থেকে ডেকে আনিনি’।

বস্তুত ভারত সরকারের কর্মকর্তারা এর আগে একাধিকবার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়েই শেখ হাসিনা ভারতে এসেছেন। ভারত কিন্তু তাকে বিমান পাঠিয়ে ‘ইভ্যাকুয়েট’ করেনি বা তুলে নিয়ে আসেনি।

ফলে ৫ অগাস্টের সেই ঘটনাক্রম আজ শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের অনুরোধকে বেশ কিছুটা দুর্বল করে দিচ্ছে বলেই ভারতের বিশ্বাস।

কারণ হিসেবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বিবিসিকে বলেন, ‘রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ (সেনাবাহিনী) তাকে ভারতে আসতে সাহায্য করেছে। আর এখন রাষ্ট্রেরই আর একটি স্তম্ভ (নির্বাহী বিভাগ) তাকে ভারত থেকে ফেরত চাইছে। সুতরাং এর মধ্যে তো একটা স্ববিরোধিতা আছেই’।

এসব কারণেই বাংলাদেশের নোট ভার্বালের তড়িঘড়ি একটা জবাব দেওয়া উচিত কিংবা শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের ব্যাপারে দ্রুত একটা সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত- তেমনটা মনে করছে না ভারত!

(বিবিসি বাংলার সাংবাদিক শুভজ্যোতি ঘোষের লেখা অবলম্বনে)

সূত্র: যুগান্তর।
তারিখ: ডিসেম্বর ২৯, ২০২৪

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ