প্রথমে একটি লেখার ধারা প্রতিষ্ঠা করানো একজন লেখক বা কবির প্রধান কাজ, একবার একজন লেখক বা কবি তার লেখার ধারা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে তার মাথা থেকে লেখার বিষয়গুলি নেমে এসে তার লেখার কলমে পৌঁছিয়ে যায় তারপর তিনি লিখতে থাকেন এক জন পাকা লেখক, কবি কিম্বা প্রবন্ধকারের মত।
এর পূর্বের সময় কালটা অনেকটাই অস্পষ্টতার মধ্যে থাকে তখন নাম এসে যায় সৌখিন লেখক, কবি হিসাবে; সৌখিন শব্দটা নামের পূর্ব থেকে উঠিয়ে ফেলা বা মুছে ফেলাটা নিঃসন্দেহে সব চেয়ে কঠিন কাজ। এক জন জাত লেখক ও কবি কখনই সৌখিন নয়, তার চলার পথটা অনেক লম্বা কিম্বা দীর্ঘ, সৌখিন লেখক বা কবিদের সব চেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট হলো হঠাৎ উদয়, কিছুটা সময় একটি গ্রোত্রের মধ্যে তোলপাড় করে আবার হঠাৎ করেই অন্তরালে চলে যায় আর ফিরে আসে না।
বর্তমান সময় কলে লেখার ভুবনের ” একটি গ্রোত্র ” বলতে বুঝায় লেখার ব্লগ, ফেসবুক সহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলি সেই সাথে মাসিক সাহিত্য প্রত্রিকাগুলি আর দুই চারটি বই ছাপিয়ে পারিবারিক ও কাছের সমাজের বা বন্ধু মহলের গন্ডির মধ্যে নিজের পরিচিতি ছড়িয়ে দেওয়া।
বাংলা ভাষার কম পক্ষ্যে এক কোটি পাঠকের কাছে একজন লেখক বা কবির একটি লেখা বা একাধিক লেখা বা কবিতা পৌঁছিয়ে দেওয়াটা অনেক কষ্ট সাধ্য বিষয় বলে লেখক ও কবির সামনে থেকে সৌখিন শব্দটি তুলে ফেলা প্রায় সমান ভাবেই কঠিন।
প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক মূল ধারার লেখক বা কবির বাইরে যারা সৌখিন লেখক বা কবি তাদের কি বাংলা সাহিত্যে বা সমাজে প্রয়োজন নেই ! এই সৌখিন লেখক বা কবিরা লিখছে বলেই মূল ধারার লেখক বা কবিগন তাদের বড় পাঠক সাগর তৈরী করতে পেরেছেন। সৌখিন লেখক বা কবিগন লিখছেন বলেই মূল ধারার লেখক বা কবিগন নিয়মিত পাঠক পাচ্ছেন, বই বিক্রি একটি নিয়মের মধ্যে আছে এখনও।
নিজ নিজ জায়গা দখল করে রাখার দায়িত্বটা একান্তই নিজের, এটাও সত্য যে সৌখিন লেখক বা কবি কয়েক বছর বা এক যুগ পর পর অনেক মূল ধারার লেখক বা কবির জায়গা দখল করে নেয়। এর জন্য সৌখিন লেখক বা কবিদের পাড়ি দিতে হয় দীর্ঘ পথ, হাঁটতে হয় একা একা অনেক অনেক ত্যাগের পথ ধরে, আজকের পাঠকের প্রশংসাটা লুকিয়ে রাখতে হয় কোথাও, নিজের মত করে একটি লেখার রাজ্য তৈরী করে নিজেকে হতে হয় সেখানকার রাজা। নিজের মত করে লেখার ক্ষমতা অর্জন, তারপর লেখা আর লেখা যেন পিছনে তাকাবার আর সময় নেই।
রেটিং করুনঃ ,
বেশ ভাল বলেছেন।
আমরা আগের দিনে লিটলম্যাগের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। ভাবতাম সম্পাদককে বলে কোন লেখা ছাপানো যায় কিনা। এমনও সময় গেছে, একটা লেখা প্রকাশ পেলে বুকের মধ্যে চেপে রেখে ঘুমাতে যেতাম।
কিছু লেখা প্রকাশ পেলে সোই ঘোর কেটে গেলো। জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সে কি প্রানন্ত আকাঙ্ক্ষা কখন একটি লেখা জাতীয় দৈনিকে দেখব। সম্পাদকের পরিচিত লোক মারফত যোগাযোগ পরে যে দিন প্রথম কবিতা প্রকাশ পেল কি যে আনন্দ!! জনে জনে দেখিয়েছিলাম, মনে আছে। লিটলম্যাগে একটা চাহিদা তৈরী হয়েছিল, স্থানীয় যে ম্যাগাজিনগুলি প্রকাশিত হতো, লেখার জন্য তাগাদা দিত। জাতীয় পর্যায়ে তেমন হয়নি। লেখা প্রকাশের জন্য আলাদা মনোয়োগ দিতে ইচ্ছা হতো না।
পেলাম ব্লগের সন্ধান। পেলাম মুক্তি। বলতে দ্বিধা নেই সরাসরি পাঠকের প্রতিক্রিয়া দেখতে এত ভালো লেগেছে যে, প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য আর আলাদা সময় দিলাম না। ব্লগিং করতে করতে জড়িয়ে গেলাম ব্লগিং পলিটিক্সে, না হলে এখন কমপক্ষে একডজন বইয়ের লেখক হতাম সন্দেহ নেই। তবু একটি কবিতার বই বের করেছিলাম ব্লাগারস ফোরামের ব্যানারে। বইটি ব্যাপক প্রশংসিত না হলেও কিছু লোক খুবই প্রশংসা করলো।
গল্প লিখলাম ব্লগে পোষ্ট দিব বলে। আমরা তখন শব্দনীড়ের ব্যানারে কাজ করি। সম্পাদনা করলাম, ব্লগারদের লিটল ম্যাগের, ব্লাগারদের কবিতা নিয়ে প্রকাশ করলাম কবিতার সংকলন (আমার কবিতাও ছিল)। গল্প সংকলন করলাম ব্লগের লেককদের গল্প নিয়ে।
নিজেকে নিবেদন করি ব্লাগারদের লেখা বই প্রাকাশে।
আগেই বলেছি ব্লগিং পলিটিক্স সব কেড়ে নেয় সৃষ্টিশীলতা।
এখন নিরিবিরি লিখালিখিতে আছি।
আহা যদি আবার ব্লগারদের লেখা নিয়ে কিছু কাজ করতে পারতাম! :guitar:
অনেক কষ্ট ও পরিশ্রমের মন্তব্য, এমন মন্তব্যে আরও অনেক অনেক লিখতে ইচ্ছা জাগে।
মালেক ভাই, আপনার মন্তব্যের জবাবে আবারও আসবো, ততক্ষণ পর্যন্ত শুভেচ্ছা।
পেলাম ব্লগের সন্ধান। পেলাম মুক্তি। বলতে দ্বিধা নেই সরাসরি পাঠকের প্রতিক্রিয়া দেখতে এত ভালো লেগেছে যে, প্রিন্ট মিডিয়ার জন্য আর আলাদা সময় দিলাম না।
আসলেই কিছু বছর আগেও একটি লেখা প্রকাশ করা আর বৃহত আকারের একটি পাথর সরানো প্রায় একই কথা ছিল, অথচ আজ প্রযুক্তির বদৌলতে একটি . (ডট) প্রকাশ করার কেউ ইচ্ছা পোষন করলেও তা প্রকাশ হয়ে যাচ্ছে। সামগ্রীক ভাবে এটি একটি বড় অর্জন।
বর্তমান প্রযুক্তি বহু সংখ্যক মানুষকে যেমন বাংলা দেখায় দক্ষ করে তুলেছেন একই ভাবে লেখার মানও কমেছে প্রায় একই ধারায়।
পরিশ্রম সাধ্য মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আরো কিছু মন্তব্য থাকবে………..
// এই সৌখিন লেখক বা কবিরা লিখছে বলেই মূল ধারার লেখক বা কবিগন তাদের বড় পাঠক সাগর তৈরী করতে পেরেছেন। সৌখিন লেখক বা কবিগন লিখছেন বলেই মূল ধারার লেখক বা কবিগন নিয়মিত পাঠক পাচ্ছেন, বই বিক্রি একটি নিয়মের মধ্যে আছে এখনও। //—
চমৎকার মূল্যায়ন!!
আর বিশ্লেষণ করবার ভাষা জানা নেই!!