Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সোভিয়েত নেতা গর্বাচেভ যে কারণে অনন্যসাহসী (২০২২)

Share on Facebook

লেখক:আর্চি ব্রাউন।

বিশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে বিশ্বে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক নেতা হলেন মিখাইল গর্বাচেভ। রাশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংস্কারক তিনি। সোভিয়েত ইউনিয়নের শেষ সময়টাতে তিনি প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন। রাশিয়াকে একটি মুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে গর্বাচেভের ভূমিকা ছিল নিষ্পত্তিমূলক। দেশে নতুন সহনশীলতা ও স্বাধীনতার পরিবেশ সৃষ্টি, সোভিয়েত আমলের বিদেশনীতির রূপান্তর, পূর্ব ও কেন্দ্রীয় ইউরোপের জনগণকে কমিউনিস্ট শাসনের মোড়ক থেকে মুক্ত হতে সাহসী করে তোলা এবং মস্কোর কর্তৃত্বকে অস্বীকার করার মতো ঘটনা তাঁর সময়ে ঘটে।

পুরো সোভিয়েত ও রুশ নেতাদের মধ্যে গর্বাচেভ ছিলেন সবচেয়ে বেশি শান্তিকামী। ১৯৮৯ সালে ওয়ারশ চুক্তিভুক্ত দেশগুলো যখন স্বাধীন হচ্ছিল এবং সেই বছরেই যখন বার্লিন দেয়ালের পতন হচ্ছিল কিংবা ১৯৯০ সালে যখন দুই জার্মানির একত্রকরণ হচ্ছিল—একজন সোভিয়েত সেনাও একটা গুলি ছোড়েননি।

পশ্চিমাদের মধ্যে একটা জনপ্রিয় ভ্রান্ত ধারণা হচ্ছে, ১৯৮৫ সালের মধ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন সংকটে পৌঁছায় এবং কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো গর্বাচেভকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। কারণ, তিনি ছিলেন সংস্কারবাদী। এবং এ কারণে আমূল পরিবর্তন গ্রহণ করা ছাড়া তাঁর কাছে আর কোনো বিকল্প ছিল না। আইনকানুন যখন কেউ মানে না, গণবিক্ষোভ যখন চলতেই থাকে এবং রাজনৈতিক অভিজাতদের মধ্যে যখন বিভক্তি প্রকাশ্যে চলে আসে, তখন যেকোনো কর্তৃত্ববাদী শাসন বড় সংকটে পড়ে।

কিন্তু এ ধরনের কোনো ঘটনার অস্তিত্বই ১৯৮৫ সালে ছিল না। গর্বাচেভের পেরেস্ত্রোইকা সংস্কার কর্মসূচি শুরুর পর কয়েক বছরে এ ধরনের অসন্তোষ দেখা দেয়নি। প্রকৃতপক্ষে সংকটের অস্তিত্ব ছিল আরও গভীরে, সংস্কার ছাড়া আর কোনো বিকল্প ছিল না। আর আমূল সংস্কার সংকটকে আরও গভীর করে তোলে। গর্বাচেভের নতুন স্বাধীনতা ৭০ বছরের দমনমূলক শাসনে তেমন কার্যকর হতে পারেনি।

গর্বাচেভ অর্থনৈতিক সংস্কারের চেয়ে রাজনৈতিক সংস্কারকে প্রাধান্য দিয়েছিলেন। তবে আগের জমানার সেই খবরদারিমূলক অর্থনৈতিক নীতি বদলাতে কোনো পদক্ষেপ নেননি। নতুন রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেটি বাদ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল। খাদ্য মজুতের ঘাটতি কিংবা রেশনের দীর্ঘ লাইন কেন, সে বিষয়ে জনগণের মধ্যে কানাঘুষা নয়, বরং খোলাখুলি অভিযোগ জানানোর সুযোগ দেওয়ার দরকার ছিল।

১৯৯০ সালে বাজার অর্থনীতিকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করেন গর্বাচেভ। সামাজিক গণতন্ত্রের ওপর জোর দেন তিনি। কিন্তু তখন অনেক দেরি হয়ে গেছে। গর্বাচেভ তাঁর রাজনৈতিক কর্তৃত্ব অনেকখানি হারিয়ে ফেলেছেন। ফলে মৌলিক খাদ্যপণ্য ও সেবার মূল্যবৃদ্ধি আয়ত্তে আনতে বাজারব্যবস্থাকে কাজে লাগানোর ঝুঁকি তিনি নিতে পারেননি। সুতরাং একটা আধাখেচড়া অবস্থায় সোভিয়েত অর্থনীতির পরিসমাপ্তি হয়। সেটাকে না বলা যাবে কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণাধীন অর্থনীতি, না বলা যাবে বাজার চালিত অর্থনীতি।

গর্বাচেভ যেসব রাজনৈতিক সংস্কার কর্মসূচি নিয়েছিলেন, তা সত্যিই অনন্যসাহসী। তিনি ছিলেন অত্যন্ত খোলামনের মানুষ। একজন রাজনৈতিক নেতার পক্ষে সেটা ছিল অস্বাভাবিক। সোভিয়েত কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে সেটা তো একেবারেই বেমানান।

গর্বাচেভ তাঁর নেতৃত্বের সূচনাকাল থেকেই গ্লাসনস্ত বা উদারীকরণের নীতির পক্ষে কথা বলেছেন। তাঁর কল্যাণে সোভিয়েত ইউনিয়নে মতপ্রকাশ ও প্রকাশনার ক্ষেত্রে স্বাধীনতার চর্চা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পায়। সোভিয়েতে জর্জ অরওয়েলের নাইনটিন এইটি ফোর–এর মতো বই প্রকাশ ছিল আইনত অপরাধ। ১৯৮৯ সালের পর এ ধরনের বই ব্যাপকভাবে প্রকাশ হতে থাকে।

বিরোধী মতের যাঁদের কারাগারে বন্দী রাখা হয়েছিল, তাঁদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল, যাঁদের নির্বাসনে কিংবা শ্রমশিবিরে পাঠানো হয়েছিল, তঁাদের দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল। যোগাযোগের ক্ষেত্রেও গর্বাচেভ নতুন স্বাধীনতার দুয়ার খুলেছিলেন। বিদেশি গণমাধ্যমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছিলেন এবং ভ্রমণ ও অভিবাসন সহজ করেছিলেন।

সাত বছরের কম সময়ের মধ্যে গর্বাচেভ এমন সব সংস্কার করেন, যার নজির আগের কোনো সোভিয়েত নেতা রাখতে পারেননি। ১৯৮৫ সালে এ ধরনের পরিবর্তন কল্পনা করা পশ্চিমের কোনো নেতার কাছেও স্বপ্নেরও অতীত ছিল। মার্গারেট থ্যাচার সেটা স্বীকারও করেছেন।

গর্বাচেভ ১৯৯৫ সালে কমিউনিস্ট সংস্কারক হিসেবে যাত্রা শুরু করেন। ১৯৮৮ সালে তিনি পরিণত হন একজন পদ্ধতিগত রূপান্তরকে। ১৯৯৬ সালে এ বিষয়ে গর্বাচেভ বলেছিলেন, ‘১৯৮৮ সাল পর্যন্ত পূর্বতন সংস্কারকদের মতো আমার একই বিভ্রম ছিল। আমার বিশ্বাস ছিল, ব্যবস্থার উন্নতি করা যায়। ১৯৮৮ সালে আমার উপলব্ধি হয়, আমাদের একটা পদ্ধতিগত সংস্কার প্রয়োজন। ব্যবস্থাটিরই বদল করতে হবে।’ গর্বাচেভের এ উপলব্ধি অতীতের কোনো ঘটনার পরবর্তীকালের মূল্যায়ন নয়। ১৯৮৮ সালের এপ্রিল মাসে আঞ্চলিক পার্টি সেক্রেটারিদের একটি সভায় গর্বাচেভ বলেছিলেন, কিসের ভিত্তিতে ২০ কোটি মানুষকে ২ কোটি (পার্টির সদস্যসংখ্যা) মানুষ শাসন করবে? তিনি নিজেই নিজের প্রশ্নের উত্তর দিয়েছিলেন, ‘জনগণকে শাসন করার অধিকার আমরা আমাদের নিজেদের ওপর নিজেরাই অর্পণ করেছি!’

***দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া, ইংরেজি থেকে অনূদিত
আর্চি ব্রাউন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিষয়ে ইমেরিটাস অধ্যাপক।

সূত্র:প্রথম আলো।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০৩, ২০২২

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ