Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

সেকালের চুরি

Share on Facebook

সেকালেও কলকাতায় চুরি হত। তখনও পাহারার বন্দোবস্ত থাকলেও সেকালের কলকাতা বহু রকমের চুরির সাক্ষী ছিল। কলকাতার রাস্তায় গ্যাস বাতির আগে ছিল রেড়ির তেলের বাতি। কর্পোরেশনের কর্মীরা রোজ বিকালে মই দিয়ে পোষ্টে উঠে এই বাতির কাঁচ পরিষ্কার করে তাতে রেড়ির তেল দিয়ে আলো জালিয়ে দিতেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারের সুযোগ নিয়ে চোর এই রেড়ির তেল প্রায়ই চুরি করত। পরের দিন সকালে এসে এই চুরি দেখে কর্পোরেশনের কর্মীরা রাগা রাগি করলেও এই চোর কিন্তু সহজে ধরা পড়ত না। তখন কলকাতা খানা খন্দ, পুকুর ডোবা এসবেই ভর্তি ছিল, যা আজকের কোলকাতার সঙ্গে মেলানোই দায়! সেই তখন থেকেই পগারপার কথাটির উৎপত্তি বলে মনে করা হয়। চুরি যখন ছিল, তেমনই এই চোর ধরার আজব পদ্ধতিও ছিল।

১৮২২ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে ফ্যানি পার্কস নামে এক পর্যটক কলকাতায় আসেন। মোট চব্বিশ বছর কলকাতায় তাঁর বসবাসের পুঙ্খনাপুঙ্খ অভিজ্ঞতা তিনি লিখে রেখে গেছেন। তাঁর বর্ণনায় যেমন উঠে এসেছে কলকাতার দুর্গা পুজো, তেমনই আবার কলকাতার চরক, বাইনাচ এসবও বাদ পড়ে নি। তিনি তাঁর লেখার মাধ্যমে সে যুগের চোর ধরার এক আজব পদ্ধতি বর্ণনা করে গেছেন। তাঁর বর্ণনানুযায়ী এই পদ্ধতি তিনি দেখেছিলেন তাঁর নিজের বাড়িতেই। একবার তাঁর স্বামীর এক দামি হাত ঘড়ি বাড়ি থেকে চুরি হয়। এমনিতেই তখন মাঝে মধ্যেই চুরির ঘটনা ঘটত। তখন বাড়ির ভৃত্য দের অদল বদল ঘটিয়েও এই চুরি আটকানো যেত না। তা যাইহোক, চুরি যখন বাড়ির মধ্যে থেকেই হয়েছে, তখন এটা পরিষ্কার যে বাড়িরই কোন আসাধু ব্যেক্তিরই কাজ এটা এবং সন্ধেহটাও সহজেই বাড়ির ভৃত্যেদের ওপর গিয়ে পড়বে। তাই বাড়ির সমস্ত ভৃত্যকে সন্ধেহ ভাজনের তালিকায় রেখে পরের দিন পুলিশে খবর দেওয়া হল। পুলিশ এসে সিদ্ধান্ত নিল যে এই চুরি ধরতে এই বাড়ির প্রত্যেক ভৃত্যকে সেই সময়ের প্রথা মেনে চালপড়া খাওয়া হবে।

তখন অনেক সন্ধেহ ভাজন ব্যেক্তির মধ্য থেকে নির্দিষ্ট ব্যেক্তিকে খুঁজে বার করার জন্য ‘চালপড়া’ নামক এক বিশেষ পদ্ধতি ব্যাবহার করা হত। প্রথানুযায়ি এই পদ্ধতি প্রয়োগের আগের দিন সকল ভৃত্যকে উপোষী রাখা হত। তখন আকবরাদি টাকাকে সবাই খুব গুরুত্ব দিত। খুব ছোট একটা নিক্তি (ওজন মাপার তুলা যন্ত্র)র একদিকে আকবরাদি টাকা দিয়ে চাল ওজন করে রাখা হত। ওজন করার কাজ শেষ হলে প্রত্যেক সন্ধেহভাজনদের সেই ওজন করে রাখা চাল হাতে দিয়ে চুরি না করার শপথ বাক্য পাঠ করানো হত। তারপর সেই চাল তাদের নিজ মুখে চিবিয়ে সামনে রাখা কলা পাতার ওপর ফেলতে হত। এখন চিবানোর পরে মুখ থেকে ফেলা সেই চাল যার বা যাদের লালারসে সিক্ত থাকবে তাঁরা হতেন নির্দোষ। কিন্তু যাদের এই চাল চিবানো সত্বেও কোন লালা রসের চিহ্ন থাকবে না তারা দোষী বলে গণ্য হতেন। পুলিশ তাদের নিয়ে গিয়ে জেরা করে চুরির রহস্যের কিনারা করতেন।

এই ছিল সে সময়ের কলকাতায় চোর ধরার পদ্ধতি। এই পদ্ধতি প্রয়োগের যুক্তি হল যারা নির্দোষ হবেন তাদের মুখে স্বাভাবিক ভাবেই লালারসের আধিক্য থাকবে। কিন্তু যারা সত্যিই দোষী হবেন কতকটা নার্ভাস হয়ে যাবার জন্য তাদের মুখে লালা রস পাওয়া যাবে না। এই ছিল সে যুগের অপরাধ দমনের এক পদ্ধতি। তবে এক্ষেত্রে ফ্যানি পার্কসের বক্তব্যানুযায়ী সেই চুরি যাওয়া ঘড়ি অবশ্য উদ্ধার করা যায় নি। কিন্তু সে না গেলেও এই আবাক করা অদ্ভুদ কাহিনী তিনি তাঁর ডায়েরির পাতায় বর্ণনা করে গেছেন। এখন কলকাতায় চুরির পদ্ধতি বদলেছে। এরই সঙ্গে খুব স্বাভাবিক ভাবেই বদলেছে চুরির কিনারা করার পদ্ধতি। এরই পাশাপাশি খুব স্বাভাবিক ভাবেই হারিয়ে গেছে চোর ধরার জন্য এই চালপড়া পদ্ধতি।

তথ্যসূত্রঃ
Bongodorshon

সূত্র: সংগৃহিত।
তারিখ: মার্চ ০৫, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ