শারদীয় দুর্গোৎসবে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, মণ্ডপ, বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার ‘সম্পূর্নভাবে দায়ী’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে ‘অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ ও আজকের প্রেক্ষাপট, আমাদের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তিনি অভিযোগ করেন,সাম্প্রদায়িকতাকে ‘অস্ত্র’ বানিয়ে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে দমন করতে চায়।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যারা বিনষ্ট করছে তারা অত্যন্ত সুচতুরভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধবংস করতে চায়। এর মাধ্যমে তারা একটি দলকে স্থায়ীভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য কাজ করছে। এ পর্যন্ত যত সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটেছে প্রত্যেকটি আওয়ামী লীগের কোনো না কোনো নেতাকর্মী জড়িত। এজন্য আজ পর্যন্ত এসব ঘটনার কোনো বিচার হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘এই অস্ত্রটা আওয়ামী লীগ সরকারের দরকার। এই অস্ত্র দিয়ে তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্রের জন্য যারা লড়াই করছে, ভোটের অধিকারের জন্য যারা লড়াই করছে তাদেরকে রুখে দিতে চায়, তাদেরকে স্তব্ধ করতে চায়। এটা তাদের কাছে বিএনপি দমনের অস্ত্র।’
গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে তরুণদের অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা সবাই পরিবর্তন চাই, এই মুহুর্তে পরিবর্তন চাই। এই পরিবর্তন ঘটাতে হলে সবার আগে যাদের এগিয়ে আসা প্রয়োজন সেই তরুন ও যুবকদের এগিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্যই তাদের ভূমিকা পালন করবে। সেই রাজনৈতিক দলগুলোর ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করবে তরুণ-যুবকরা। আমরা বিশ্বাস করি, আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, এদেশের মানুষের ঐক্যের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক সমাজ, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র অবশ্যই আমরা ফিরিয়ে আনতে পারব।’
অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা যদি একটু এক সঙ্গে হই, যদি একবার একসঙ্গে হুংকার দেই এই সরকার কিন্তু থাকবে না। এই সরকার এখন কাগুজে বাঘ। ছোট একটা টোকা দিলে তারা পড়ে যাবে। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা একটা খলের সাথে লড়াই করছি। সেই খলের ছলের অভাব নাই, তার দুর্বুদ্ধির অভাব নাই। এই সরকার যারা চালান তারা বুদ্ধিমান নয়, তারা চতুর, তারা ধূর্ত, তারা খল। আমরা যারা লড়াই করতে চাই এটা বুঝেই লড়াই করতে হবে। তা নাহলে লড়াইটাতে জিততে পারবেন না। কোনো সন্দেহ নাই- লড়াই একটাই- গণতন্ত্রের লড়াই।’
মান্না বলেন, ‘এই সরকার সাম্প্রদায়িকতাকে ঘরের মধ্যে পুষে রাখে। যখন দরকার তখন সেটাকে কাজে লাগায়, যখন যখন যেই কৌশল নিলে তাদের ক্ষমতাকে পোক্ত করবার মতো ব্যাপার হয় সেটা করে। লড়াই করার জন্য বিএনপিকে উদ্যোগ নিতে হবে। বিএনপি ডাকলে সবাই আস্থাটা পাবে সেটা আমি বা আমার মতো দল ডাকলে হবে না।’
গণফোরামের নেতা অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, ‘ঘটনার পরম্পরায় আমরা একটা ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে গেছি। পুরো দেশটা একটা ভণ্ডামির মধ্যে এসে গেছে প্রতিটা ক্ষেত্রে। এক যুগ ধরে রামু থেকে নাসিরনগর, গঙ্গাছড়া, মুরাদনগর, আবার ঘুরে ফেরে কুমিল্লা, হাজীগঞ্জ, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম। এখন আবার বগুড়ার ধুনট। এগুলো কী সরকারের ইন্ধন ছাড়া হচ্ছে?’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনের সদস্য সচিব নিপুণ রায় চৌধুরী।
সূত্রঃ সমকাল।
তারিখঃ অক্টোবর ৩১, ২০২১
রেটিং করুনঃ ,