( ছবিটি দিল্লির অভিজাত পাড়া থেকে তোলা )
দিল্লির অভিজাত পাড়া অর্থাৎ সরকার প্রধান, মন্ত্রী গুরুত্ব পূর্ণ রাজনীতি বিদ কূটনৈতিক সহ গুরুত্ব পূর্ণ মানুষদের সেখানে বাস সেখান কার সড়কগুলির নাম ভারতের বিখ্যাত মানুষদের নামে, কিছু মহা সড়কের নাম করণ ছিল মুঘল সাম্রাজ্যের গুরুত্ব পূর্ণ সম্রাটদের নামে যেমন মুঘল সাম্রাজ্যের প্রথম সম্রাট বাবর থেকে শেষ নম্রাট বাহাদুর শাহের নামে এছাড়া্ও মহা সড়কগুলি সম্রাট হুমায়ুন, সম্রাট আকবর, সম্রাট জাহাঙ্গীর, সম্রাট শাহজাহান, সম্রাট আওরঙ্গজেবের নামে ছিল।
বাকি মুঘল সাম্রাজ্যের সম্রাটের নামে যে সড়কগুলির নাম করণ ছিল তা সবই ঠিক আছে শুধু বাদ পড়েছে সম্রাট আওরঙ্গজেবের নাম, সেই সাথে দিল্লির অভিজাত পাড়ায় আওরঙ্গজেব রোডের নাম বদলে গিয়ে সেই সড়কের নামকরণ করা হয়েছে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি সদ্য প্রয়াত এ পি জে আবদুল কালামের নামে।
দিল্লির বিজেপি সাংসদ মহেশ গিরি আওরঙ্গজেব রোডের নাম বদলে কালামের নামে করার দাবি জানিয়েছিলেন। তার মতে সম্রাটের আওরঙ্গজেব একজন নিষ্ঠুর শাসক ছিলেন।
কিন্তু ইতিহাস বলে ভিন্ন কথা, মুসলমান প্রজারা সম্রাট আবু মোজাফ্ফর উদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেবের প্রতি এতটাই ভক্তি পূর্ণ ছিলেন যে তাঁকে তারা জীন্দা পীর বলে সম্মোধন করতেন, মুঘোল সম্রাজ্যে আরও মোট ১৭ জন এবং ১৭তম সম্রাট ও শেষ মুঘল সম্রাট বাহাদুর শাহ্ মুঘোল সম্রাজ্যে শাসন করেন। তবে সম্রাট বাবর থেকে আওরঙ্গজেবের শামনকাল ছিল সবচেয়ে ঘটনা বহুল এর পরের সম্রাটগন ছিলেন দূর্বল প্রকৃতির। সম্রাট আওরঙ্গজেবই মুঘল সাম্রাজ্যের সবচেয়ে সীমানা বিস্তারকারী সম্রাট তাঁর বিজয়ী বাহিনী মুঘল সাম্রাজ্যের পূর্ব দিকে চট্টগ্রাম, উত্তর দিকে পর্বত শ্রেনী অতিক্রম করে তিব্বত, পশ্চিমে কাবুল এবং দক্ষিণে কর্ণাটক পর্যন্ত মুঘল সাম্রাজ্যের বিস্তার ঘটান।
তিনি মদ চোলাই নিষিদ্ধ করেন, নাচ গান করলে মদ্য পানের প্রসংঙ্গ আসে তাই তিনি নাচ গানও, নিষিদ্ধ করেন, হিন্দু প্রধান রাজ্যগুলি দখল করে সেখানে তাঁর নিয়ম কানুন চালু করেন।
তিনি নিজের জন্য ঠিক ততটুকু ব্যয় করতেন যা তাঁর সম্রাজ্যের দরিদ্র ব্যক্তিটি ব্যয় করতেন, তার জীবন ধারণ তার পূর্ব পুরুষদের মত ছিল না বলে ইতিহাস থেকে জানা যায়, তিনি পবিত্র কোরাণ নিজ হাতে নকল করে লিখে ও টুপি সিলাই করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সম্রাট আবু মোজাফ্ফর উদ্দিন মোহাম্মদ আওরঙ্গজেব ছিলেল তাঁর পূর্ব পুরুষদের থেকে ভিন্ন, তাজ-মহল তৈরীকে কেন্দ্র করে মুঘোল রাজ ভান্ডার যখন প্রায় শূণ্য হতে চলেছিল তখন তিনি মুঘোল সম্রাজ্যকে রক্ষার জন্য পিতা শাহ-জাহানকে বন্দী করে ক্ষমতা গ্রহন করেন।
মৃত্যু পূর্বে তিনি লিখে গিয়েছেন যে, তাঁর কবরের উপরে যেন কোন সৌধ নির্মান না করা হয়, যেখানে আলো-বাতাসের প্রবাহ থাকে আর অপ্রয়োজনীয় কফিন ছাড়া তাঁকে যেন মাটিতে সঁপে দেওয়া হয়।
ভারতের মহরাষ্ট্র প্রদেশের অরংগাবাদের খুলদাবাদে তিনি ৮৯ বছর বয়সে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে সেখানে মৃত্যু বরণ করেন এবং সেখানে তাঁকে সমাহিত করা হয় খুব সাধারণ ভাবে
আরংগোজেবের সমাধিটি ১৯১১ সালে ভরতের তৎকালিন ইংরেজ গভর্নর লর্ড কার্জনের চোখে পড়লে তিনি খুব মর্মাহত হন ও সংঙ্কারের উদ্যোগ নেন সংঙ্কারের পরে আরংগোজেবের সমাধি ( ছবিগুলি উইকিপিডিয়া থেকে সংগ্রহিত
ভারতের আনন্দবাজার পত্রিকাটি উল্ল্যেখ করেছে যে, মুঘল স্থপতির গবেষক ও ঐতিহাসিক আর নাথের মতে, ‘কালামের নামে রাস্তা গর্বের বিষয় হতে পারে, কিন্তু আওরঙ্গজেবের নাম মুছে দেওয়ার পেছনেও হিন্দু মানসিকতা কাজ করছে।
তারিখ : আগষ্ট ৩০, ২০১৫
রেটিং করুনঃ ,