সংগ্রহ
প্রথম সাংবাদিক: আপনি লেখেন কেন?
হুমায়ূন: নিজের আনন্দের জন্য লিখি।
দ্বিতীয় সাংবাদিক: আপনি লেখেন কেন?
হুমায়ূন: টাকার জন্য লিখি। কারণ, জগতে ভালোভাবে বেঁচে থাকার জন্য অনেক টাকার দরকার।
নানা কারণে হুমায়ূন আহমেদ উঠতি লেখকদের কাছে দুর্দান্ত অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। কেবল লেখালেখি করেই যে ঐশ্বর্যময় জীবনযাপন করা যায়—এই উদাহরণ তাঁর আগে অন্য কারও মধ্যে পাওয়া যায়নি।
তাঁর গদ্যভাষাও নিজের যাপিত জীবনের মতো সাদামাটা, বাড়তি অলংকারবর্জিত, সরলরৈখিক। নিজের কোনো লেখাকেই তিনি অবহেলা করতেন না। আগাগোড়া ‘পাবলিক’-এর পছন্দ-অপছন্দ তোয়াক্কা না করে এই লেখক কিন্তু আজীবন তাঁর নিজের ভাষায় বলে গেছেন নিজস্ব কথাগুলোই।
উপন্যাসের নাম এসেছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কোনো গানের কলি থেকে। এর আগে জীবনানন্দ দাশের কবিতা ও রবীন্দ্রনাথের গানের চরণ থেকে দু-তিনটি শব্দ নিয়ে নাটক-উপন্যাসের নাম করার চল বের করেছিলেন হুমায়ূন।
গত শতকের আশির দশকে আমরা টেলিভিশনে পাই নতুন ধরনের নাটক। খুব অল্প দিনের মধ্যে রামপুরায়ও তিনি স্থাপন করেন আধিপত্য। নব্বইয়ের দশকে প্রবেশ করেন এফডিসিতে। প্রথম ছবি আগুনের পরশমণি বানিয়েই জিতে নেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। এদিকে বেসরকারি টেলিভিশন-পাড়াও তত দিনে তাঁর অনুগ্রহপুষ্ট হয়ে উঠেছে। খ্যাতির ভারে ক্রমেই ন্যুব্জ হতে থাকেন হুমায়ূন; এর সঙ্গে যুক্ত হয় কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাও। বইয়ের প্রকাশক বা টেলিভিশন নাটক কিংবা অনুষ্ঠানের প্রযোজকেরা দুয়ার ছাড়েন না হুমায়ূনের। তাঁরা বস্তাভর্তি নগদ টাকার বান্ডিল নিয়ে হাজির হন হুমায়ূনের কাছে। কাঁচা টাকার ঘ্রাণ তাঁর খুব প্রিয়। তিনি কাউকে ফেরান না। তাঁর মাথায় নতুন লেখা আসছে না, অথচ প্রকাশক চান তাঁর নতুন উপন্যাস। তাঁকে পাশ কাটানোর জন্য বাজারদরের চেয়ে দশ গুণ সম্মানী হাঁকেন। তাতেও হতোদ্যম নন প্রকাশকেরা, দশ গুণের সমান মুদ্রা নিয়ে তাঁরা হাজির হয়ে যান। পরের দিন পনেরো গুণ টাকা নিয়ে আসেন অন্য আরেক প্রকাশক। তিনিও ফেরত যান না। টাকার মোহে আবিষ্ট হয়ে যান হুমায়ূন। দিনে দিনে বাড়ে তাঁর উপন্যাসের সংখ্যা। লিখতে লিখতে একসময় নিজের অজান্তেই নিজের পুনরাবৃত্তি করতে থাকেন। আর এই সময় তিনি হারাতেও শুরু করেন কিছু পাঠক।
================
ড্রফট
লেখা-লেখির প্রতি আমাদের আগ্রহ কমেছে, মনে হয় কথাটি সঠিক নয় বরং বলা যেতে পারে লেখার ভাব বা ভাবনা মাথায় আসে কম, মানুশের মাথায় যখন কোন ভাবনা বা সূত্র আসে তখন সে তাড়াতাড়ি লিখে ফেলে না হলে কি ভাবনা বা ছন্দ মাথায় এসেছিল আমরা ভুলে যাই।
ভাব বা ভাবনার দিকে এখন আমাদের সময় কি ভাবে নিজেকে প্রতিষ্টা করা এর পিছনে সময় দিতে গিয়ে আমাদের বাড়তি ভাবনার সময় কোথায় ! আর কে বা চায় লেখা-লেখির পিছনে সময় অপচয় করতে আজকাল তো লেখা-লেখি করে আয় অর্জন হয় না। লেখা-লেখি করে কয়েক বছর আগে শুধু হুমায়ূন আহামেদ জ্বলন্ত প্রমান হয়ে দাড়িয়েছিলেন যে, লেখা-লেখি করে বিত্তবান মানুষের মত জীবন যাপক করা যায় লেখার বদলে আসে কাঁচা টাকার মত বস্তাভর্তি নগদ টাকা আর টাকার বান্ডিল। হওয়া যায় সম্পদের মালিক। অনেকেই তখন হুমায়ূন আহমেদকে মনে ধারণ করে লিখতেন কিন্তু কাঁচা টাকার গন্ধ তেমন আর কেউ পান না, যেমনটি হুমায়ূন আহমেদ পেয়েছিলেন।
থাক সে সব কথা
রেটিং করুনঃ ,