না, ভাগ করা যাই নি বা অনেক কিছুই ভাগ করা যায় না হয় তো। নিচের গানের লাইনগুলিকে ভাগ করা যায় নি-
……..বলি ও ননদী,
আর দু মুঠো চাল ফেলে দে হাঁড়িতে
ঠাকুর জামাই এল বাড়িতে লো ননদী,
ঠাকুর জামাই এল বাড়িতে।
অ-বিভিক্ত এ গানের সুরে সুরে শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসেছিলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জী, গানে যাকে ননদী বলা হয়েছে তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী ও ভারতের ফার্স্ট লেডি শুভ্রা মুখোপাধ্যায় কিন্তু জামাই এর সাথে করেই বিখ্যাত ভদ্রবিলা গ্রামের ঘোষবাড়ির উঠানে এসেছিলেন। বিবাহের সমস্ত বছর, যুগকে ক্ষুদ্র সময় কাল করে দিয়ে যেন কয়েক দিন আগের বিয়ে বাড়ির সাজ কাটিয়ে শ্বশুড় বাড়ি থকে মেয়ে বাবার ঘোষবাড়িতে ফিরে এলেন জামাইকে নিয়ে।
রেডক্লিপ সাহেব ১৯৪৭ এ এই উপমহাদেশে যে সিমান্ত রেখা বা Radcliffe Line টেনে দিয়েছিলেন তা হয় তো ভারতের রাষ্ট্রপতির সহধর্মিণী শুভ্রা মুখোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হল, একই ভাবে বিভক্ত হয় নি আমাদের রবি ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম, ফকির লালন শাহ কিম্বা আমাদের প্রথম আলো ব্লগের আবদুস শাকুর। আমাদের কাছে এক ও অ-ভিন্ন, আমাদের চির চেনা।
সংবাদ পত্রে পড়েছি ভারতের বর্তমান ফার্স্ট লেডি শুভ্রা মুখোপাধ্যায় বার বার ছোট্ট বেলায় বড় হয়ে উঠা ভদ্রবিলা গ্রামের দিকে বার বার তাকিয়ে ছিলেন। প্রথম বারেই মত এবারই স্বামী ভারতের রাষ্ট্রপতিকে ঘোষ বাড়ির উঠানে আনতে পেরে কত যে গর্বিত ছিলেন তিনি !! তিনি শৈশবকে ভাগ করতে পারেন নি, শৈশব স্মৃতিকে ভাগ করেননি, রেখে দিয়েছেন নিজের কাছে, নিজ স্মৃতি বাড়িতে।
আমরা কেউই আমাদের স্মৃতিকে ভাগ করে দিয়ে দিয়ে আমাদের অতীতের কথাকে আলাদা করে দিতে পারি নি। শৈশবকে কোন রেখা দিয়ে আলা্দা করে দিতে পারি নি।
পুরানা কোন স্মৃতিতে ফিরে গেলে কখনও কখনও বা বার বার মনে হয়েছে আর বুঝি ফেরা হবে না শৈশবের বাড়িতে, ফেরা না হলেও বার বার আমাদের স্মৃতি বাড়িতে ফিরে যেতে হয়, সেখানে বিশ্রাম নিতে হয়, আবার সেখান থেকে যাত্রা শুরু করতে হয়।
আমাদের কখনও কখনও শৈশবের কাটানো স্থানটিতে যেতে খুব ইচ্ছা হয়, কখনও সেখানে যাওয়া হয়, আর যাওয়া না হলে আমরা ঘুরে বেড়াই আমাদের নিজ নিজ স্মুতি বাড়িতে।
এই বিশাল বিশ্বের যে প্রান্তে থাকি না কেন ! ভিন্ন কোন দেশের নাগরিক হয়ে যাই না কেন ! মন পড়ে থাকে সেই শৈশবের বাড়িতে, তবেই তো আমরা মাটির মানুষ।
তারিখ: জুন ২৩, ২০১৩
রেটিং করুনঃ ,