” আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে —
আসে বৃষ্টির সুবাস বাতাস বেয়ে ।
এই পুরাতন হৃদয় আমার আজি
পুলকে দুলিয়া উঠিছে আবার বাজি
নূতন মেঘের ঘনিমার পানে চেয়ে
আবার এসেছে আষাঢ় আকাশ ছেয়ে । ” – রবি ঠাকুর।
রবীন্দ্র নাথের এই বিখ্যাত গানের লাইনটি নিজের কন্ঠে বা সমস্বরে উচ্চারণের সাথে আমাদের আর জানতে বাকি থাকে না আজ কোন দিন ! ছয় ঋতুর দেশে ২য় ঋতু, সব চেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ, বর্ষা ঋতু আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ, আবার আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন হলেও বাংলা মাসের আষাঢ়ই হচ্ছে বাংলায় সজীবতার প্রাণ, শান্তির পরশ।
প্রভাতে সূর্য্য উদয়ের সাথে সাথে আকাশ ঝরানো তাপের দাহ প্রখর আলো জ্বালায় রুদ্র মুখী ধরণী; শুষ্কতায় মাঠ ঘাট ফেটে চৌচির ফসলের শ্যামল ধরনীতে যেন শ্যামলতাহীন রুক্ষ মরুর পরিবেশ, তখনই আষাঢ় আগমনের প্রস্তুতি, জ্যৈষ্ঠ যায় আসে শান্তির বারতা নিয়ে আসে আষাঢ় সেই সাথে বিদায় নেয় ধরণীর তাপ দাহ ও শুষ্কতা।
জ্যৈষ্ঠ বা মধুমাস আমসাদের যে দিয়েছিল নানাান ফলের সমারোহ তা এখনও গাছে গাছে থোকায় থোকায় ঝুলে আছে সাথে শাঁসালো রসালো আম, লিচু, জামরুল, কাঁঠাল।
আষাঢ় মানেই মাঠে সবুজের সমারোহ, সবুজে সবুজে, আষাঢ়ের পানিতে খালে-বিলে নদীতে ফিরে আসে প্রাণ যেন নব উদ্যামে জেগে উঠে প্রাণ।
চৈত্র- জ্যৈষ্ঠে তাপদাহ আর পৌষ-মাঘের শীতের যে তীব্র কষ্ট আমাদের শরীরে যে যাতনা দিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে যায় আমরা এসেছি বা এসেছিলম, কিন্তু ঠিক তেমনটা আষাঢ় নয়, প্রকৃতিতে ভর করে দিয়ে যায় শান্তির বরিষণ, যা ধুয়ে মুছে নিয়ে যায় যত শুঙ্কতা দাহ, ঝরা পাতা, যত আবর্জনা ! থেমে যাওয়া জীবনে আসে প্রাণ, নদী বিলে নৌকার পাল তুলে চলাচলা।
আষাঢ় হোক আর বর্ষায়ই হোক, এর সাথে জড়িয়ে আছে নানান ফলের সাথে রবি ঠাকুরের ” বাদল-দিনের প্রথম কদম ফুল” ।
আষাঢ় এসেছে মানেই খালে বিলে শাপলা-শালুক-পদ্ম ফুলের মহাসমাবেশ। আপন মনে বিলিয়ে চলেছে সু-গন্ধি এই আষাঢ়ে আমাদের চির চেনা বর্ষার আর এক সুগন্ধি রজনীগন্ধা, নানান রঙের গোলাপের সাথে আছে মোরগঝুঁটি, দোপাটি, ইয়েলো কসমস, সন্ধ্যামণি, বেলি জিনিয়া, কলাবতী আর কত নাম অ-জানা ফুল বনে বাদরে।
আজ আষাঢ়ের প্রথম দিনে প্রাণের আষাঢ় আমাদের মাঝে হাজির হয়েছে তার চেনা বৈশিষ্টে, কখনও ঘন মেঘে ঢাকা আকাশ, কখনও হালকা বা ভারি বৃষ্টিতে, শুভ হোক আষাঢ়ের আগমন আমাদের এই বাংলায়……………………………..।
তারিখ: জুন ১৫, ২০১৫
রেটিং করুনঃ ,