Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শুভ জন্মদিন চে গুয়েভারা

Share on Facebook

মাত্র ৩৯ বছরের সংক্ষিপ্ত এক জীবন। অথচ এই জীবনেই কাঁদিয়ে উৎখাত করেছেন মার্কিন মদদপুষ্ট স্বৈরশাসক ফুলগেনসিও বাতিস্তাকে। কাঁদিয়ে ছাড়িয়েছেন পুঁজিবাদী মার্কিন মুলুককে।
.
বয়সন্ধি থেকে শুরু করে সারাটা জীবন তিনি কবিতার প্রতি আসক্ত ছিলেন বিশেষ করে পাবলো নেরুদা, জন কিটস, এন্টনিও মারকাদো, ফেদেরিকো গারসিয়া লোরকা, গ্যাব্রিয়েলা মিস্ত্রালএবং ওয়াল্ট হুইটম্যান, তিনি ভালো কবিতা আবৃত্তি করতে পারতেন। তিনি স্মৃতি থেকে আবৃতি করতে পারতেন রুডিয়ার্ড কিপলিং-এর “if-” কবিতা এবং জোসে হার্নান্দেজ-এর “Martin Fierro” কবিতা। গুয়েভারা পরিবারে ছিল ৩০০০ এরও বেশি বই।
.
তরুণ বয়সেই মেডিকেলের ছাত্র চে চষে ফেললেন সমগ্র লাতিন আমেরিকা। এই সব অঞ্চলের সর্বব্যাপী দারিদ্র্য তাঁর মনে গভীর রেখাপাত করে। এই ভ্রমণকালে তাঁর অর্জিত অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে এই অঞ্চলে বদ্ধমূল অর্থনৈতিক বৈষম্যের স্বাভাবিক কারণ হল একচেটিয়া পুঁজিবাদ, নব্য ঔপনিবেশিকতাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ; এবং এর একমাত্র সমাধান হল বিশ্ব বিপ্লব।
.
এই বিশ্বাসের বশবর্তী হয়ে চে রাষ্ট্রপতি জাকোবো আরবেনজ গুজমানের নেতৃত্বাধীন গুয়াতেমালার সামাজিক সংস্কার আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন।
.
১৯৫৪ সালে সিআইএ-এর ষড়যন্ত্রে গুজমানকে ক্ষমতাচ্যুত করা হলে চে-র বৈপ্লবিক আদর্শ চেতনা বদ্ধমূল হয়। পরবর্তীকালে মেক্সিকো সিটিতে বসবাসের সময় তাঁর সঙ্গে রাউল ও ফিদেল কাস্ত্রোর আলাপ হয়।
.
চে তাঁদের ছাব্বিশে জুলাই আন্দোলনে যোগ দেন। মার্কিন-মদতপুষ্ট কিউবান একনায়ক ফুলগেনসিও বাতিস্তাকে উৎখাত করার জন্য গ্রানমায় চড়ে সমুদ্রপথে কিউবায় প্রবেশ করেন।
.
কিছুদিনের মধ্যেই চে বিপ্লবী সংঘের এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। সেকেন্ড-ইন-কম্যান্ড পদে তাঁর পদোন্নতি হয় এবং বাতিস্তা সরকারকে উত্খাত করার লক্ষ্যে দুই বছর ধরে চলা গেরিলা সংগ্রাম অবশেষে বিজয়ী হয়।
.
কিউবান সমাজতন্ত্রের প্রচারে বিশ্বপর্যটন পদাধিকারের কল্যাণে তিনি মিলিশিয়া বাহিনীকে প্রশিক্ষণ প্রদানের সুযোগ পান; ফলত এই বাহিনী পিগস উপসাগর আক্রমণ করে তা পুনর্দখলে সক্ষম হয়। কিউবায় সোভিয়েত পরমাণু ব্যালিস্টিক মিসাইলআনার ক্ষেত্রেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৬৫ সালে কিউবা ত্যাগ করলেন তিনি। প্রথমে কঙ্গো-কিনসহাসায়তাঁর বিপ্লব প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। এরপর তিনি বলিভিয়ায় বিপ্লবে অংশ নেন। এখানেই সিআইএ-মদতপুষ্ট বলিভিয়ান সেনারা বন্দী করে তাঁকে এবং মৃত্যুদন্ড দেয়।
.
বলিভিয়ার সেনাবাহিনীর ভাষ্যমতে তারা গুয়েভারাকে ৭ অক্টোবর গ্রেফতার করে এবং তার মৃত্যু হয় ৯ অক্টোবর ১৯৬৭ সাল বেলা ১.১০ টায়। মৃত্যুর এ সময়কাল এবং ধরণ নিয়ে মতভেদ এবং রহস্য এখনো আছে।
.
ধারণা করা হয় ১৯৬৭ সালের এই দিনটিতে লা হিগুয়েরা নামক স্থানে নিরস্ত্র অবস্থায় নয়টি গুলি করে হত্যা করা হয় বন্দী চে গেভারাকে। পরে বলিভিয়ার সেনাবাহিনী ঘোষণা করে যে বন্দী অবস্থায় নয়টি গুলি চালিয়ে সেই আর্জেন্টাইন ‘সন্ত্রাসবাদী’কে মেরে ফেলতে পেরেছে এক মদ্যপ সৈনিক। তবে আরেকটি মতামত হচ্ছে এই দিন যুদ্ধে বন্দী হলেও তাকে এবং তার সহযোদ্ধাদের হত্যা করা হয় কিছুদিন পর। মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন প্রতিবেদনে পরবর্তীতে এইসব দাবির সপক্ষে কিছু প্রমাণ পাওয়া যায়।
.
এ সম্পর্কে নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকা সে সময় লিখেছিল,
‘একজন মানুষের সঙ্গে সঙ্গে একটি রূপকথাও চিরতরে বিশ্রামে চলে গেল।’
.
পরে ১৯৯৭ সালে ভ্যালেগ্রান্দের একটি গণ-কবরে চে ও তাঁর সহযোদ্ধাদের দেহাবশেষ আবিষ্কৃত হয়।
.
চে কিউবান ভাষায় লিখেছেন প্রায় ৭০টি নিবন্ধ, ধারণা করা হয় ছদ্মনামে কিংবা নামহীন অবস্থায় লিখেছেন ২৫টি। এছাড়া তিনি লিখে দিয়েছেন পাঁচটি বইয়ের ভূমিকা। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত ভাষণ আর সাক্ষাৎকার দিয়েছেন প্রায় ২৫০-এর কাছাকাছি। বিভিন্ন ব্যক্তিত্বকে লেখা তার অসংখ্য চিঠির মধ্যে সংগৃহিত আছে ৭০টির মতো।
.
১৯৫২ সালে এর্নেস্তো গেভারা (তখনো তিনি চে নামটি নেন নি) ছিলেন শিক্ষানবীশ ডাক্তার। তিনি ও তার বন্ধু আলবের্তো গ্রানাদো লা পেদারোসা একটি মোটর সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বুয়েনোস আইরেস থেকে। উদ্দেশ্য: লাতিন আমেরিকা ঘুরে দেখা। আর্জেন্টিনার আটলান্টিক উপকূল ধরে আন্দিজ পার হয়ে চিলি, সেখান থেকে পেরু, কলম্বিয়া ও শেষে ভেনিজুয়েলার কারাকাস এ। এক বছরের অধিক সময় তারা পরিভ্রমণ করেন লাতিন আমেরিকার আনাচে কানাচে। প্রায় ১২,০০০ মাইল পাড়ি দেন। সেই ভ্রমণলিপির উপর পরবর্তীতে নির্মিত হয় বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র “মোটরসাইকেল ডায়েরি”।
.
পৃথিবীতে আর কোন বিপ্লবীর উপর এতো চলচ্চিত্র নির্মিত হয়নি যতোগুলো চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে চে গুয়েভারার জীবন ও আদর্শ নিয়ে।
.
চে গুয়েভারান উপর সর্বপ্রথম চলচ্চিত্র নির্মিত হয় ১৯৬৯ সালে “চে” নামে। তারপর তাঁর বিখ্যাত ভ্রমণ ডায়েরি “মোটরসাইকেল ডায়েরি”, ২০০৬ সালে “দ্যা হ্যান্ডস অব দ্যা গুয়েভারা, ২০০৭ সালে “চে: দ্যা রাইজ এন্ড ফলস, ২০০৮ সালে “চে”, ২০১২ সালে “অ্যা বুলেট ফর চে” এর মতো অসংখ্য চলচ্চিত্র নির্মিত হয় তাঁর জীবন ও বিপ্লব নিয়ে।
.
কিংবা সাহিত্যে আর কোন বিপ্লবী এতোটা প্রভাব বিস্তার করেননি। তাঁকে নিয়ে যতো সংগীত, সাহিত্য, চলচ্চিত্র রচিত হয়েছে তা অবিশ্বাস্য। তাইতো তিনি হৃদয়ের মনিকোঠায় থাকবেন চিরকাল।
.
বিশ্বের বিপ্লবের মহানায়ক চে গুয়েভারার জন্মদিন আজ। বিনম্র শ্রদ্ধা রইলো তাঁর প্রতি।

সূত্র: সংগৃহিত।
তারিখ: জুন ১৪, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ