শিশুরা গল্প শোন।
একটি পানি জাহাজ চলেছে সমুদ্রে। হঠাৎ প্রচন্ড ঝড়। জাহাজে প্রায় দুই মতের মত যাত্রী ছিল। অনেক ধাক্কা সামলিয়ে জাহাজটা যখন একটা দ্বীপের কাছে ঠিক তখনই জাহাজটা পানির নিচে ডুবে গেল।
কিছু তরুণ তরুণী, কিছু শিশু, কিছু বাবা মা এমন প্রায় একশত জন দ্বীপটাতে উঠলো। কিন্তু সবাই একে বারে খালি হাতে। অনেকটা টারজনের মত জীবন শুরু হল। ডাবের পানি পান, আর তাজা তাজা ফল ছাড়া ওদের আর কিছুই খাওয়া হত না। গাছের পাতা, ছাল আর পশুর চামড়া দিয়ে পোশাক আর রাতে ঘুমাতো গাছে। টারজনের যেমন গাছে ঘর ছিল, ঠিক তেমন। এর মধ্যেই দুইটি বছর কেটে গেল। মিলে মিশে সবাই থাকত। সুখেই বসবাস করত।
একটা তরুণ, শরীরে বেশ শক্তি। সব কাজে, কারো বিপদে সে সবার আগে এসে হাজির হত। এতদিন কিছু তরুণ মিলে বুদ্ধি করে শক্তিমান তরুণটিকে আক্রমন করল। প্রচন্ড পেটালো, গাছের ডাল দিয়ে। শরীর থেকে অনেক রক্ত বের হলো।
শক্তিমান তরুণটির এই অবস্থা দেখে দ্বীপের বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা শক্তিমান তরুণটিকে সেবা যত্ন করতে লাগলো। আর দুঃখ প্রকাশ করলো। বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা প্রতিদিন কি যেন শলা-পরামর্শ করে।
একদিন দ্বীপের সব ছেলে-মেয়ে, তরুণ তরুণীদের ডাকলো। সবাইকে বলল আর আমরা বেশি দিন বাঁচব না। আমরা না থাকলে কে তোমাদের দেখবে। তোমরা অনেক বড় হয়েছো। কিন্তু তোমাদের ভালো জ্ঞান বুদ্ধি হয় নি। তোমরা বোকা বলে, যে সবার উপকার করত তাঁকে মেরে ফেলতে চেয়েছিলে। আমরা না থাকলে কি যে হত !!!
আমরা তোমাদের একটা কথা বললে চাই, আবারো বলছি আমরা কিন্তু বেশি দিন আর বাঁচব না। আর তোমাদের কে দেখবে? আমরা এই বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা যা বলবো তোমরা কি তা শুনবে ?
হঠাৎ সবাই ভয় পেয়ে বলল তোমরা যা বলবে আমরা তাই শুনবো। তোমরা ছাড়া আমাদের কোন অভিভাবক নেই।
বৃদ্ধ ও বৃদ্ধারা বলল আমরা চলে যাব কিন্তু তোমাদের জন্য একজন অভিভাবক রেখে গেলাম। আজ থেকে এই শক্তিমান তরুণটি হবে তোমাদের রাজা। বুঝতে পেরেছ কে এই দ্বীপের রাজা !! সবাই বলল আমরা চেনেছি কে আমাদের রাজাকে। সবাই বলল প্রথমে আমরা আমাদের রাজার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে নেই। আমরা ভুল করে রাজাকে উত্তম- মধ্যম দিয়েছিলাম।
রাজা দ্বীপে সবাইকে নিয়ে সুখে বসবাস করতে লাগল। একদিন রাজা সবাইকে ডাকল আর বলল আমি এতদিন অনেক কিছু ভেবেছি। আমাদের এই দ্বীপটার নাম দিয়েছি “ক” দ্বীপ আর ঐ যে দূরে দেখা যায় আর একটা দ্বীপ ওটার নাম দিয়েছি “খ” দ্বীপ।
ঐ দ্বীপটা নিয়ে আমাদের অনেক ভয়। রাজা বলল আমার ধারণা ওখানে মানুষ থাকে। রাতে আলো জ্বলতে দেখি। ওরা আগুন জ্বালাতে পারে আমরা আগুন জ্বালাতে পারি না। ওরা অকেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকে। আমরার আগেই ঘুমিয়ে পড়ি।
আমরা দ্বীপের সবাইকে বশে আনতে পেরেছি। জীব, জন্তু, গাছ লতা-পাতা সব কিছু। “খ” দ্বীপের মানুষরা অনেক হিংস্র আর ভয়ানক হতে পারে। ওরা আগুন জ্বালাতে পারে। অনেক শক্তিশালী। আমাদেরকে যে কোন সময় আক্রমন করতে পারে। সবাইকে এক হয়ে আমাদের মোকাবেলা করতে হবে। ঐক্য হারিয়ে ফেললে আমাদের এই প্রিয় “ক” দ্বীপ আর থাকবে না। “খ” দ্বীপ হয়তে দখল করে নিবে সবই।
শিশুরা তোমরা কি বুঝতে পেরেছে “ক” দ্বীপের রাজার কেন এত ভয় “খ” দ্বীপকে নিয়ে !!!
তা হলে শোন-
মানুষেই কিন্তু ১৯৪৫ বালে দ্বিতীয় মহাযদ্ধের সময় কিন্তু ৬ই আগস্ট হিরোশিমায় এটম বোমা ফেলেছিল। আর নাগাসাকিতে ৯ই আগস্ট। বড় হলে এ বিষয়ে জেনে নিও।
মানুষেই কিন্তু ২০০১ সালে ১১ই সেপ্টম্বর যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ওয়ার্ক শহরের টুইন টাওয়ার মানুষেই ধ্বংস করেছিল।। বড় হলে এ বিষয়ে জেনে নিও।
সব সময় ভালো থাকবে। আর মানুষকে ভালো জানবে। বড়দের শ্রদ্ধা করবে।
রেটিং করুনঃ ,