Welcome to rabbani basra

আমার লেখালাখির খাতা

শুরু হোক পথচলা !

Member Login

Lost your password?

Registration is closed

Sorry, you are not allowed to register by yourself on this site!

You must either be invited by one of our team member or request an invitation by email at info {at} yoursite {dot} com.

Note: If you are the admin and want to display the register form here, log in to your dashboard, and go to Settings > General and click "Anyone can register".

শিশুদারিদ্র্য নিরসনে বাংলাদেশ বিশ্বে মডেল (২০২১)

Share on Facebook

স্বাধীনতার পর ৫০ বছরে বাংলাদেশের অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন নিউইয়র্ক টাইমসের দুবার পুলিৎজার পাওয়া সাংবাদিক ও কলামিস্ট নিকোলাস ক্রিস্টফ। যে দেশটিকে হেনরি কিসিঞ্জার তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন, ১৯৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের ছবি যে দেশটির চিত্র গড়ে দিয়েছিল, সেই দেশটি এখন ৭ থেকে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করছে। নিকোলাস ক্রিস্টফ মনে করেন, বাংলাদেশের এই সাফল্যের রহস্য হচ্ছে শিক্ষা ও নারীর উন্নয়ন।

১৯৯১ সালে দেশের উপকূল অঞ্চলে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ে ১ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়। সেই ঘূর্ণিঝড়-পরবর্তী খবর সংগ্রহ করতে দেশে এসেছিলেন নিকোলাস ক্রিস্টফ। তখন নিউইয়র্ক টাইমসে তিনি কলাম লেখেন, বাংলাদেশ দুর্ভাগা দেশ। তবে তাঁর সেই হতাশা ভুল প্রমাণিত হওয়ায় যারপরনাই আনন্দ প্রকাশ করেছেন নিকোলাস ক্রিস্টফ। কারণ, এরপর টানা তিন দশকে বাংলাদেশ অসাধারণ উন্নতি করেছে।

বর্তমানে বাংলাদেশের গড় আয়ু ৭২ বছর। ক্রিস্টফ জানাচ্ছেন, এটা যুক্তরাষ্ট্রের বেশ কয়েকটি জায়গার চেয়ে বেশি—মিসিসিপির ১০টি কাউন্টির চেয়েও। একসময় হতাশার প্রতিমূর্তি হয়ে ওঠা বাংলাদেশ এখন অনেক দেশের জন্যই আদর্শ, কীভাবে উন্নতি করতে হয়।

এই উন্নতির রহস্য হিসেবে নিকোলাস ক্রিস্টফ শিক্ষা ও নারীর উন্নতি চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলছেন, ১৯৮০-এর দশকে বাংলাদেশে এক-তৃতীয়াংশেরও কম শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরোতে পারত। আর আজ বাংলাদেশের ৯৮ শতাংশ শিশু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চৌকাঠ পেরোচ্ছে। নারী-পুরুষ বৈষম্যের ইতিহাস থাকলেও বাস্তবতা হচ্ছে, বাংলাদেশের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এখন ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি।

নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস লেখক নিকোলাস ক্রিস্টফকে বলেছেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে নাটকীয় ঘটনা হচ্ছে, নারীর অবস্থান পরিবর্তন, যে প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে দরিদ্রতম নারীর জীবনমানের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে। গ্রামীণ ব্যাংক অনেক নারীকে উদ্যোক্তা বানিয়েছে। বাংলাদেশ মেয়েদের শিক্ষিত ও ক্ষমতায়িত করেছে। পরিণামে এরাই দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ভিত্তি হয়ে উঠেছে। রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প নারীদের কর্মসংস্থানের বড় জায়গা হয়ে উঠেছে। এদের কল্যাণেই বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প চীনের পর আজ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম, যদিও এই শিল্পে স্বল্প মজুরি থেকে শুরু করে অগ্নিকাণ্ড, যৌন হেনস্তার মতো ঘটনা অহরহ ঘটছে।

দেশের শিক্ষিত নারীরা আজ গ্রামীণ ব্যাংক, ব্র্যাকসহ বিভিন্ন অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের উচ্চ পদে কাজ করছেন। এই নারীরাই শিশুর টিকাদানে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁরা টয়লেট ব্যবহারে সচেতনতা সৃষ্টি করেছেন। গ্রামের মানুষকে পড়তে শিখিয়েছেন—ব্যাখ্যা করেছেন জন্মনিয়ন্ত্রণপদ্ধতি। বাল্যবিবাহ রোধেও রেখেছেন অগ্রণী ভূমিকা।
বাংলাদেশে মহান রাজনৈতিক নেতা আসেনি উল্লেখ করে ক্রিস্টফ বলেন, মানবসম্পদে বিনিয়োগ করে বাংলাদেশ সমাজে যে গতিধারা সৃষ্টি করেছে, তা থেকে সবাই শিখতে পারে।

বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়নের এই অগ্রগতিকে ‘উন্নয়ন বিস্ময়’ হিসেবে আখ্যা দেন অর্থনীতিবিদ ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তাঁর মতে, এর পেছনে কাজ করেছে জনগণের উন্নয়ন-সচেতনতা, গোত্র-বর্ণ ভেদাভেদহীন সমাজ ও সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর নানা কার্যকর কর্মসূচি ও সামাজিক উদ্যোগ। নারীর ক্ষমতায়নের এটি সম্ভব হয়েছে।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে দারিদ্র্য বিমোচনের উৎসাহব্যঞ্জক আখ্যান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। গত ১৫ বছরে আড়াই কোটি মানুষ দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে এসেছে। ১৯৯১ সালের পর অপুষ্টিজনিত খর্বাকৃতির শিশুর সংখ্যা অর্ধেক কমেছে। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ এখন ভারতের চেয়ে এগিয়ে।

জনসংখ্যার অতি ঘনত্ব এই উন্নয়ন রুদ্ধ করে দেবে বলে যাঁরা মনে করেন, তাঁদের উদ্দেশে ক্রিস্টফ বলেন, বাংলাদেশের নারীরা এখন গড়ে দুটি সন্তান জন্ম দিচ্ছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শিশুদারিদ্র্য হ্রাসে যে বক্তব্য দিয়েছেন তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে ক্রিস্টফ বলেন, ফেরতযোগ্য শিশু কর ব্যবস্থা চিরস্থায়ী করা উচিত। তাঁর মতে, বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা থেকে এই শিক্ষাই হয় যে প্রান্তিক শিশুদের জন্য বিনিয়োগ করা নিছক সহানুভূতির ব্যাপার নয়, জাতির উন্নতিতে তার দরকার আছে।

পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী ও ধনী দেশ হলেও যুক্তরাষ্ট্রে শিশু দারিদ্র্য ব্যাপক হারে বেড়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে বাইডেনের ১ লাখ ৯০ হাজার কোটি ডলারের যে প্রণোদনা প্যাকেজ আজ চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে, সেখানে শিশুদারিদ্র্য নিরসনের পরিকল্পনা আছে। তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে বাংলাদেশকে এ ক্ষেত্রে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন নিকোলাস ক্রিস্টফ।

সূত্র: প্রথম আলো
তারিখ: মার্চ ১১, ২০২১

রেটিং করুনঃ ,

Comments are closed

বিভাগসমূহ

Featured Posts

বিভাগ সমুহ