শিল্পাঞ্চলগুলোতে যৌথ বাহিনীর কঠোর নজরদারির মধ্যে কারখানায় উৎপাদন শুরু হয়েছে। তবে কিছু কারখানায় কাজে যোগ দিলেও কাজ না করে শ্রমিকরা ভেতরে অবস্থান করেন। কিছু কর্মস্থলে যোগ দিলেও কাজ না করে বের হয়ে যান। এভাবেই ৯৮ শতাংশ পোশাক কারখানার কাজ হলেও বন্ধ ছিল ২ শতাংশ বা ৪৪টি কারখানা।
গতকাল শনিবার তৈরি পোশাক খাতের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। এদিকে বিজিএমইএর সদস্য কারখানাগুলো ৯৯ শতাংশ জুলাই মাসের মজুরি পরিশোধ করেছে। দিতে পারেনি এমন কারখানার সংখ্যা ছয়টি।
বিজিএমইএর তথ্য অনুসারে, সংগঠটির মোট সক্রিয় ৯৮ শতাংশ কারখানা খোলা ছিল।
দুই হাজার ১৫২টি কারখানার মধ্যে দুই হাজার ১৮টি কারখানা গতকাল পর্যন্ত খোলা ছিল। তবে ৩৭টি কারখানার শ্রমিকরা কাজ না করে বের হয়ে যান।
গাজীপুর শিল্পাঞ্চলে খোলাছিল ৮৮২টি, সাভারের আশুলিয়া এবং ধামরাই এলাকায় ৪০৮টি, নারায়ণগঞ্জে ২০৯টি, ডিএমপি ৩০২টি এবং চট্টগ্রাম শিল্পাঞ্চলে ৩৫০টি কারখানা খোলা ছিল। বন্ধ ছিল ৪৪টি কারখানা।
এর মধ্যে ৪৩টি সাভার, আশুলিয়া এবং ধামরাই এলাকার। একটি কারখানা হলো গাজীপুরের।
জানা যায়, এর মধ্যে ১৬টি কারখানা আগে থেকেই বন্ধ ছিল। এগুলো হলো—নাসা গ্রুপের পাঁচটি কারখানা এবং নিউ এইজ গ্রুপের চারটি এবং অন্য কারখানাগুলো হলো নিট এশিয়া লিমিটেড, ইয়াগি বাংলাদেশ লিমিটেড; পার্ল গার্মেন্টস কম্পানি লিমিটেড; ইউপোরিয়া এবং জন রন সোয়েটার।
এ প্রসঙ্গে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিজিএমইএর একজন পরিচালক কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘উদ্ভট দাবির মুখে গতকাল শনিবারও বন্ধ ছিল ৪৪টি কারখানা।
অনেক কারখানায় হাজিরা দিয়ে চলে গেছেন শ্রমিকরা। কোনো কোনো কারখানা দুপুর পর্যন্ত চালু ছিল।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশের শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হলে যারা লাভবান হয়, তারাই এই অস্থিতিশীলতা তৈরি করছে। এতে শ্রমিক বা শ্রমিক নেতারা জড়িত নন। এই অবস্থা চলতে থাকলে শিল্পের পাশাপাশি সংকটে পড়বে দেশের অর্থনীতি।’
শ্রমিক নেতা তৌহিদুর রহমান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘শিল্পাঞ্চলে শ্রম পরিস্থিতি আগের চেয়ে উন্নত হলেও সংকট নিয়ে শঙ্কা এখনো বিদ্যমান। কেননা পরিকল্পিত সন্ত্রাস হচ্ছে। এ জন্য তিনি সরকারকে আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এ ছাড়া এই শিল্পের সংগঠনগুলো বিদ্যমান পর্ষদে সদ্যোবিদায়ি সরকারের প্রেতাত্মারা এখনো বহাল তবিয়তে আছেন। তিনি আশঙ্কা করছেন, বর্তমান সরকারকে তাঁরা সহজে মেনে নেবেন এমনটা মনে হয় না।
আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের দুই গ্রুপের সংঘর্ষ
এদিকে সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক দলের সমাবেশে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। মঞ্চে ওঠা নিয়ে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল উত্তরবঙ্গগামী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দেশের শিল্প-কারখানা ভাঙচুর ও শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আশুলিয়া থানা কমিটি। সমাবেশ শুরুর প্রথম দিকে মঞ্চে ওঠা নিয়ে নিজেদের দুটি গ্রুপের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। বাগবিতণ্ডা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়।
জানা যায়, সমাবেশের শুরুতেই ট্রাকের অস্থায়ী মঞ্চে ওঠাকে কেন্দ্র করে প্রথমে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়। পরে ধামসোনা ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম খানকে মঞ্চ থেকে ফেলে দেওয়া হয়। পরে এক গ্রুপ এসে তাঁকে পিটিয়ে আহত করে। এ সময় দুই গ্রুপের সংঘর্ষ হয় ও চেয়ার ভাঙচুর করা হয়।
সূত্র:কালের কন্ঠ।
তারিখ: সেপ্টম্বর ০৮, ২০২৪
রেটিং করুনঃ ,